রবিবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

এগোচ্ছে বাংলাদেশ

আত্মপ্রসাদ নয়, যেতে হবে আরও সামনে

মহান বিজয়ের ৫২ বছরের মধ্যেই বাংলাদেশ বিশ্বপরিসরে উদীয়মান বৈশ্বিক শক্তি হিসেবে নিজেকে প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছে। ১৯৭১ সালের বিজয় দিবসের সময় যে দেশকে ভাবা হতো অর্থনৈতিক দিক থেকে সবচেয়ে পিছিয়ে পড়া, সে দেশের জন্য এ এক বিশাল অর্জন। একাত্তরে বাঙালি বিজয় অর্জন করেছিল পাকিস্তানি দখলদারদের হারিয়ে। সেই পাকিস্তানের একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের বিস্ময়কর অগ্রগতির প্রশংসা করেছেন। হংকং সাংহাই ব্যাংকিং করপোরেশন-এইচএসবিসির সর্বশেষ গ্লোবাল রিসার্চে বলা হয়েছে, ২০৩০ সালের মধ্যে মোট দেশজ উৎপাদনের নিরিখে বিশ্বের ২৬তম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। বর্তমানে বাংলাদেশের অবস্থান ৪২তম। ‘দ্য ওয়ার্ল্ড ইন ২০৩০ : আওয়ার লং-টার্ম প্রজেকশন্স ফর ৭৫ কান্ট্রিজ’ শিরোনামের এ রিপোর্টে দেখানো হয়েছে, ২০১৮ থেকে ২০৩০ সালের মধ্যে অবস্থানের দিক থেকে বাংলাদেশের অর্থনীতি ১৬ ধাপে উন্নীত হবে; যা অন্য যে কোনো দেশের তুলনায় ঢের বেশি। অর্থনৈতিক উন্নয়নের এ তালিকায় বাংলাদেশের পরই ফিলিপাইন, পাকিস্তান, ভিয়েতনাম ও মালয়েশিয়ার নাম এসেছে। প্রবৃদ্ধি অর্জনের দিক থেকে উন্নত দেশ নরওয়ের চেয়েও বাংলাদেশের অধিক সম্ভাবনা রয়েছে বলে ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। এর সবই সম্ভব হয়েছে সরকারের দূরদর্শী ও কার্যকর অর্থনৈতিক পদক্ষেপের ফলে। এইচএসবিসির দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়ন মডেলে দেখানো হয়েছে, ২০৩০ পর্যন্ত প্রতি বছর বাংলাদেশের অর্থনীতিতে গড়ে ৭.১ শতাংশ হারে প্রবৃদ্ধি অর্জিত হবে, যা রিপোর্টে উল্লিখিত ৭৫ দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ। অর্থনীতি ও সামাজিক উন্নয়নের যে কোনো সূচকের নিরিখে বাংলাদেশের উত্থান বিস্ময়কর। মানবিক মর্যাদার দিক থেকে বাংলাদেশের অবস্থান গর্বের। বাংলাদেশ মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর নির্দয় অভিযানের মুখে বিপন্ন ১০ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়ে নিজেদের সামর্থ্যরে প্রমাণ রেখেছে। বাংলাদেশের অগ্রগতি নিঃসন্দেহে গর্বের। তবে এতে আত্মপ্রসাদের কোনো সুযোগ নেই। ৩০ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত এ দেশকে আরও এগিয়ে নিতে নিরন্তর প্রয়াস চালাতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর