রবিবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

বেসরকারি হাসপাতাল

পকেট কাটার ব্যবসা বন্ধ হোক

বেসরকারি হাসপাতালগুলোর মধ্যে দু-একটি বাদে সর্বত্র চলছে রোগী বা তাদের অভিভাবকের পকেট কাটার প্র্যাকটিস। হাসপাতালে আনুষ্ঠানিকভাবে ভর্তির আগেই জরুরি বিভাগে রোগীকে নিতে না নিতেই শুরু হয় হরেকরকম টেস্ট। রাজধানীর অধিকাংশ বেসরকারি হাসপাতালে রোগী পায়ে ব্যথা নিয়ে গেলেও মাথা থেকে পা পর্যন্ত শুরু হয় নানা রকমের টেস্টের পসরা। এ টেস্ট করতেই রোগীর খরচের অঙ্ক বেড়ে দাঁড়ায় কয়েক গুণ। বেসরকারি হাসপাতালে টেস্ট ফি নির্ধারণ করে না দেওয়ায় ইচ্ছামতো বিল আদায় করে হাসপাতালগুলো। জরুরি বিভাগে ভর্তি হলে তাদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়ে রোগী ও স্বজন। তখন রোগী নিয়ে অন্য হাসপাতালে যাওয়ার পরিস্থিতি থাকে না। ফলে তাদের ইচ্ছামতো টেস্ট করালে আর তার বিল দিলে তবেই মেলে রেহাই। বেসরকারি হাসপাতালগুলোয় পুরো পেটের আলট্রাসনোগ্রামের খরচ ১ হাজার ২০০ থেকে শুরু করে ৪ হাজার টাকা পর্যন্ত নেওয়া হয়। প্রশ্ন উঠছে, খরচের এত পার্থক্য শুধু ব্যবস্থাপনার কারণে, নাকি রিপোর্টেও তারতম্য থাকে? বেসরকারি হাসপাতালের আইসিইউতে রোগী গেলে অপ্রয়োজনীয় উচ্চমাত্রার অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। এর প্রতিক্রিয়ায় পরবর্তীতে রোগীর শরীরে অন্য কোনো অ্যান্টিবায়োটিক কাজ করে না। রোগী অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স হয়ে যায়। রোগীর জীবন পড়ে ঝুকিতে। চলতি বছরের জানুয়ারিতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক সভায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী বেসরকারি হাসপাতাল ও অন্যান্য স্বাস্থ্য খাতের একেক রকমের চার্জ টেস্ট ফি সাধারণ মানুষের ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে এমন অভিযোগ তুলে এক মাসের মধ্যে বিভিন্ন ক্যাটাগরি নির্ধারণ করে ফি ঠিক করে দেওয়ার কথা বলেছিলেন। কিন্তু এক মাসের বদলে এক বছর কেটে যাওয়ার উপক্রম হলেও ফি নির্ধারণের সেই প্রতিশ্রুতি পালিত হয়নি। ফলে বেসরকারি হাসপাতালগুলোয় যাচ্ছেতাই অবস্থা বিরাজ করছে। বেসরকারি হাসপাতালে যে টেস্ট করা হয় তার মান নিয়ে সংশয় রয়েছে। যে কারণে রোগীর অনেকেই অতি সাধারণ রোগের চিকিৎসায় বিদেশমুখী হতে বাধ্য হচ্ছে। এ বিড়ম্বনার ইতি ঘটাতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর