দেশের কিছু অঞ্চলে শীতের তীব্রতা প্রকট। ফলে ছিন্নমূল ও দুস্থ মানুষজনের কষ্ট বেড়েছে। শীতকাল অন্য ঋতুর তুলনায় অনেকের জন্য কিছুটা কষ্টের। তবে গরিব-দুস্থ মানুষের জন্য আরও দুর্বিষহ। অনেকের শীতের পোশাক তো দূরে থাক, সামান্য কাপড়টুকু নেই। সব বয়সী মানুষ তীব্র শীতে কষ্টে জীবন কাটায়। তাই সুযোগ পেলে শীতবস্ত্র বিতরণের মাধ্যমে অসহায়ের পাশে দাঁড়ানো উত্তম। প্রকোপ আরও বাড়ার আগেই সমাজের গরিব মানুষদের রক্ষায় উদ্যোগ নিতে হবে। শীতার্তদের রক্ষা ও সামর্থ্যরে ভিত্তিতে সাহায্য-সহযোগিতা প্রতিটি মানুষের নৈতিক দায়িত্ব। এটা অন্যতম একটি মহৎ ইবাদতও বটে। পবিত্র কোরআনুল কারিমে আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘তাদের (বিত্তশালী) ধনসম্পদে অভাবগ্রস্ত ও বঞ্চিতদের অধিকার রয়েছে’ (সুরা জারিয়াত-১৯)। কোরআনে অন্যত্র বলা হয়েছে, ‘তারা আল্লাহর সন্তুষ্টি তথা তার আহ্বানে সাড়া দিয়ে দরিদ্র, এতিম ও বন্দিদের খাদ্য দান করে’ (সুরা দাহর-৮)। এ বিষয়ে অনেক হাদিস রয়েছে, তার মধ্যে কিছু হলো : আবু সাইদ (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে মহানবী (সা.) বলেন, ‘কোনো মুসলমান অপর মুসলমানকে বস্ত্রহীনতা ঢাকতে কাপড় দিলে, আল্লাহপাক তাকে জান্নাতের সবুজ কাপড় পরাবেন’ (তিরমিজি)। প্রিয়নবী (সা.) ইরশাদ করেন, ‘যে মুসলমান অপর কোনো মুসলমানকে বস্ত্রহীন অবস্থায় বস্ত্র দান করবে, আল্লাহ তাকে জান্নাতে সবুজ বর্ণের পোশাক পরাবেন, খাদ্য দান করলে তাকে জান্নাতের ফল খাওয়াবেন, পানি পান করালে জান্নাতের শরবত পান করাবেন’ (আবু দাউদ)। রসুল (সা.) আরও বলেন, ‘যে ব্যক্তি দুনিয়াতে অপরের একটি প্রয়োজন মিটিয়ে দেবে, পরকালে আল্লাহ তার ১০০টি প্রয়োজন পূরণ করে দেবেন এবং বান্দার দুঃখ-দুর্দশায় কেউ সহযোগিতার হাত বাড়ালে আল্লাহ তার প্রতি করুণার দৃষ্টি দেন’ (মুসলিম)। রসুল (সা.) বলেছেন, ‘বান্দা যতক্ষণ তার ভাইকে সাহায্য করে, আল্লাহ ততক্ষণ তাকে সাহায্য করে থাকেন’ (মুসলিম)। উক্ত হাদিসগুলোর দ্বারা গরিবদের বস্ত্র দান এবং আহার দানের অনেক ফজিলত জানা যায়। অতএব আমাদের প্রত্যেকের নৈতিক দায়িত্ব এবং ইমানের দাবি হলো আমরা প্রত্যেকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে গরিব-দুস্থদের শীতবস্ত্র দান করার চেষ্টা করব এবং এ জাতীয় সামাজিক কাজে সর্বদা নিয়োজিত থাকব। আল্লাহ আমাদের তৌফিক দান করুন। আমিন।

লেখক : গবেষক ও ইসলামী চিন্তাবিদ, পীর সাহেব সূর্যপুর