বুধবার, ২০ ডিসেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

অ্যান্টিবায়োটিক

প্রেসক্রিপশন ছাড়া বিক্রি নিষিদ্ধ হোক

অ্যান্টিবায়োটিকের আবিষ্কার মানুষকে জীবাণুর বিরুদ্ধে লড়াইয়ের শক্তি জুগিয়েছে। ক্ষুদ্রাতি ক্ষুদ্র যেসব জীবাণু মানুষের প্রাণ সংহারে অবদান রাখত সেগুলোর হাত থেকে রক্ষা করেছে। অনেক রোগব্যাধির কষ্ট থেকে বাঁচিয়েছে মানুষকে। তবে যথেচ্ছভাবে অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োগে মানবদেহে এর কার্যকারিতা অকার্যকর হয়ে পড়ছে। মানবদেহে সংক্রমণ ঘটানো প্রধান জীবাণুগুলোর বিরুদ্ধে বাংলাদেশে ব্যবহৃত প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপের বেশির ভাগ অ্যান্টিবায়োটিক প্রায় ৯০ ভাগ ক্ষেত্রে অকার্যকর হয়ে পড়েছে। অ্যান্টিবায়োটিকের অযাচিত ব্যবহার সম্পর্কে দেড় বছর ধরে রাজধানীসহ পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন এলাকা থেকে বঙ্গবন্ধু আসা ৭২ হাজার ৬৭০টি রোগীর নমুনা পরীক্ষা করে এ ফলাফল জানা গেছে। সোমবার বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘সংক্রামক ব্যাধি চিকিৎসায় অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহার ও কার্যকারিতার চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক গবেষণার ফলাফল ধরা হয়। গবেষণা অনুযায়ী দেশে অন্তত ৭৫ ভাগ ইনফেকশন হয় টাইফয়েড, ই-কোলাই, স্ট্যাফাউরিয়াস, ক্লিবশিয়েলা ও সিউডোমোনাস ব্যাকটেরিয়ার মাধ্যমে। এসব ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে অ্যাকসেস ও ওয়াচ গ্রুপের অ্যান্টিবায়োটিক অকেজো হয়ে গেছে প্রায় ৯০ শতাংশ। এ ছাড়া আইসিইউর রোগীদের যে অ্যান্টিবায়োটিকে চিকিৎসা চলত তা এখন ওয়ার্ডের রোগীদেরও দিতে হচ্ছে। অ্যান্টিবায়োটিকের অপব্যবহার বিশ্বজনীন সমস্যা। বাংলাদেশে নিবন্ধনভুক্ত চিকিৎসকদের প্রেসক্রিপশন ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক বিক্রি হয় অহরহ। ওষুধের দোকান থেকে যে কোনো ধরনের ওষুধ কেনা যায় অতি সহজে। অনেকে নিজেরা নিজেদের ডাক্তার সেজে যথেচ্ছভাবে অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করে সর্বনাশ ডেকে আনছেন। প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপের অ্যান্টিবায়োটিক ৯০ ভাগ মানুষের দেহে কার্যকারিতা হারিয়েছে এগুলোর কাণ্ডজ্ঞান বর্জিত অপব্যবহারের কারণে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অভিমত কিছু অ্যান্টিবায়োটিক একেবারে শেষ ধাপের চিকিৎসায় সংরক্ষিত। যেগুলো একান্ত বিপদে না পড়লে ব্যবহার করা উচিত নয়। অথচ বাংলাদেশের সেগুলোরও যথেচ্ছ ব্যবহার রয়েছে। এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট নীতিমালা প্রণয়ন এবং প্রেসক্রিপশন ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক বিক্রি নিষিদ্ধ করা জরুরি।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর