বুধবার, ২০ ডিসেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

পানিশূন্য তিস্তা

উজানে পানি প্রত্যাহার বন্ধ হোক

শুষ্ক মৌসুম শুরুর আগেই এ সময়ের প্রমত্ত তিস্তা নদী পানিশূন্য হয়ে পড়ছে। বিশাল নদীর বুকজুড়ে বালু চরে এখন সবুজের হাতছানি। চারদিকে চলছে মৌসুমি সবজির চাষ। এক মাস আগেও তিস্তায় ছিল প্রচুর পানি। বর্ষা শেষ না হতেই নদী যেন মরে গেছে। নদীতে বড় বড় বালুর স্তূপ পড়ে মূল নদী গতিপথ হারাতে বসেছে। অন্তিম দশায় পতিত হয়ে নালা দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে তিস্তার পানি। বিশাল তিস্তার বুকে হাঁটুপানি পাওয়াও দুষ্কর। তিস্তার বুকে কৃষক চাষ করছেন আলু, ভুট্টা, রসুন, গম, মিষ্টি কুমড়া, গাঁজর, পিঁয়াজসহ ১০ ধরনের ফসল। বানের পানিতে সম্বল হারানো মানুষগুলো এখন ঘুরে দাঁড়াতে ব্যস্ত সময় পার করছেন ফসল উৎপাদনে। প্রতি বছর নভেম্বর-ডিসেম্বরে তিস্তার পানির শুকিয়ে বড় বড় চর জেগে ওঠে। চরগুলোতে সাধারণ কৃষক বিভিন্ন ফসল ফলায়। পানি কম থাকায় ব্যারাজের সব গেট বন্ধ রাখা হয়েছে। এ কারণে উজানে পানিশূন্যতা দেখা দিয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, বিজ্ঞানসম্মতভাবে তিস্তা খনন না হলে বাংলাদেশ অংশের ১৬৫ কিলোমিটারজুড়ে নদীর দুই পারে বাস করা কোটি মানুষের দুর্ভোগের শেষ থাকবে না। এ সময় যে পরিমাণ পানি থাকার কথা তা না থাকায় নদীটি একেবারে মরতে বসেছে। এই নদী রক্ষা হলেই বাঁচবে বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চল। তিস্তা নদী মাত্র দুই যুগ আগেও ছিল দেশের অন্যতম প্রাণবন্ত নদী। তিস্তা অববাহিকার কোটি মানুষের জীবন-জীবিকার ক্ষেত্রে এ নদীর অন্য অবদান রয়েছে। কিন্তু উজানে একতরফা পানি প্রত্যাহারে তিস্তা নদী অস্তিত্ব হারাতে চলেছে। এ নদীর সঙ্গে যুক্ত অন্যান্য নদী ও জলাশয়ের অস্তিত্ব বিপন্ন হয়ে পড়ছে। এ নদীর সঙ্গে যুক্ত অন্যান্য নদী ও জলাশয়ের অস্তিত্ব বিপন্ন হয়ে পড়ছে। ২০১০ সালে তৎকালীন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের বাংলাদেশ সফরকালে তিস্তা নদীর পানির সুষম বণ্টন নিয়ে বন্ধুপ্রতিম দুই দেশের মধ্যে চুক্তি সম্পাদনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়। কিন্তু ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের আপত্তিতে থেমে যায় সেই চুক্তি। বাংলাদেশকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি পালনে দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে দিল্লির ব্যর্থতা দুর্ভাগ্যজনক। এ বিষয়ে সুবুদ্ধির উদয় হবে আমরা এমনটিই আশা করতে চাই।

 

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর