রাজধানীর তেজগাঁওয়ে আগুন সন্ত্রাসে পুড়েছে নেত্রকোনা থেকে ঢাকায় আসা মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেনের তিনটি বগি। জঘন্যতম এ অপরাধের অবতারণা ঘটিয়ে আগুন সন্ত্রাসীরা কেড়ে নিয়েছে মা ও শিশুসহ চারটি প্রাণ। দুর্বৃত্তদের আগুন সন্ত্রাসের শিকার হয়েও মমতাময়ী মা তার তিন বছরের শিশুকে বুকে আগলে তাকে রক্ষার শেষ চেষ্টা করেছেন। শিশুকে ছেড়ে যাওয়ার চেষ্টা করেননি। বিএনপি-জামায়াত জোটের ঢাকা হরতালের সূচনায় মঙ্গলবার ভোরে সংঘটিত এই জঘন্যতম অপরাধের ঘটনায় কারা জড়িত তা যথাযথ তদন্তে জানা যেতে পারে। তবে সন্দেহ করা হচ্ছে, যে তিন ব্যক্তি বিমানবন্দর স্টেশন থেকে ট্রেনের তিনটি বগিতে উঠেছিলেন, তারা পেট্রল ঢেলে আগুন লাগাতে পারেন। বিমানবন্দর স্টেশনের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করেছে পুলিশ এবং কারা সেখান থেকে ট্রেনে উঠেছিলেন এবং তেজগাঁও স্টেশনে কারা নেমেছেন তা জানার চেষ্টা করা হচ্ছে।’ বেলা ১১টার দিকে কমলাপুর রেলস্টেশনের ডকইয়ার্ডে নিয়ে যাওয়া হয় পুড়ে যাওয়া ট্রেনটি। তখন পোড়া বগি থেকে নমুনা সংগ্রহ করতে আসেন পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের সদস্যরা। এ সময় তাদের সঙ্গে সাংবাদিকরাও ডকইয়ার্ডে প্রবেশ করার সুযোগ পান। ভিতরে দেখা যায়, পোড়া বগিগুলোর সবুজ রং কালচে হয়ে গেছে। বগির ভিতরের চিত্র যুদ্ধবিধ্বস্ত কোনো এলাকার মতো। সরঞ্জাম রাখার রেলিং খুলে পড়েছে আসনের ওপর। মেঝেতে পড়ে আছে যাত্রীদের সঙ্গে আনা চাল-ডাল। একটি বগিতে দরজার কাছে পড়ে আছে একটি স্কুলব্যাগ ও কয়েকটি বইখাতা। পুড়ে কালচে হওয়া ‘ঝ’ বগির মাঝে স্কুলব্যাগটিই কেবল রঙিন। এর বাইরের অংশে কার্টুন চরিত্রের ছবি। পাশে পড়ে থাকা ‘একের ভেতর সব’ লেখা বইটি দেখে মনে হয় ব্যাগটি কোনো শিশুর হাতে ছিল। নেত্রকোনা থেকে ট্রেনটি কমলাপুর স্টেশনের পথে আসছিল নির্বিঘ্নে এবং নিরাপদে। ভোর ৫টায় ট্রেনটি তেজগাঁওয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে ঘটে অগ্নিসংযোগের ঘটনা। যারা আগুন সন্ত্রাস চালিয়ে নিজেদের অশুভ উদ্দেশ্য পূরণ করতে চান তারা রাজনীতিকেই প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন দেশবাসীর সামনে। ট্রেনের বগিতে আগুন সন্ত্রাস চালিয়ে যারা মানুষ হত্যা করেছেন তাদের চিহ্নিত করে বিচারের মাধ্যমে শাস্তি দান গণদাবিতে পরিণত হয়েছে। জন নিরাপত্তার স্বার্থে সরকারকে কঠোর হতে হবে।