বৃহস্পতিবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

নিত্যপণ্যে হাইজ্যাম্প

কষ্টে আছে নিম্নবিত্ত মানুষ

জিনিসের দাম বাড়লে মানুষের দাম কমে- এটি সংসারের ঘানি টানা প্রতিটি মানুষের উপলব্ধি। এ বাস্তবতাকে সম্বল করে ১৯৭০ সালে অমর গায়ক কিশোর কুমার গেয়েছিলেন- ‘জিনিসের দাম বেড়েছে, মানুষের দাম কমেছে, হায়রে কপাল ‘করব কী’। কিশোর কুমারের ওই গানে নিম্ন-মধ্যবিত্তের যে অসহায়ত্বের প্রকাশ ঘটেছিল ৫২ বছর পরও তা এক কঠিন বাস্তবতা। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর হিসাব অনুযায়ী, দেশে গত নভেম্বর মাসে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ছিল ১০.৭৬ শতাংশ। একই সঙ্গে গত অক্টোবর থেকে আগের তিন মাস খাদ্যের মূল্যস্ফীতি ছিল ১২ শতাংশের ওপরে। অন্যদিকে নভেম্বর মাসে দেশে সার্বিক মূল্যস্ফীতি ছিল ৯.৪৯ শতাংশ। এর মধ্যে শহরে সার্বিক মূল্যস্ফীতি ছিল ৯.১৬ শতাংশ, গ্রামে ছিল ৯.৬২ শতাংশ। অর্থাৎ শহরের চেয়ে গ্রামে পণ্যের দাম বেশি। সহযোগী দৈনিকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দুই বছর আগে ২০২১ সালের ১৭ নভেম্বর ঢাকা নগরীর বাজার তালিকা অনুযায়ী প্রতি কেজি আলুর সর্বোচ্চ দাম ছিল ২৫ টাকা। দেশি পিঁয়াজ প্রতি কেজি ছিল ৬০ টাকা ও আমদানি করা পিঁয়াজ ছিল ৫০ টাকা। শুকনা মরিচ ছিল ১৮০ টাকা কেজি। আমদানি করা রসুন ছিল ১৩০ টাকা কেজি। এ ছাড়া জিরা ৪০০ টাকা, ধনে ১৩০ টাকা, চিনি ৭৫ টাকা। দুই বছর পর এখন রাজধানীতে আলু বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা কেজি দরে। দেশি পিঁয়াজ ১৫০ টাকা, আমদানি করা পিঁয়াজ ১২০ টাকা, শুকনা মরিচ ৬০০ টাকা, আমদানি করা রসুন ২৬০ টাকা, জিরা ১ হাজার ২০০ টাকা, ধনে ৩০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতিতে অসহায় অবস্থায় পড়েছে স্বল্প আয়ের মানুষ। গত ১৫ বছরে ক্ষুধা জয়ের ক্ষেত্রে অনন্য সাফল্য দেখিয়েছে বাংলাদেশ। মানুষের জীবনমান নিঃসন্দেহে বেড়েছে। তবে গত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে মূল্যস্ফীতির যে ভয়াল দৈত্য দেশের মানুষের ওপর চেপে বসেছে তাতে ক্ষুধার জ্বালা না বাড়লেও জীবনমান কমছে। খাদ্যপণ্যের পেছনে গিয়ে অর্থ ব্যয় করতে গিয়ে অন্যান্য খাতের চাহিদা অপূরণ থাকছে। এমনকি চিকিৎসা ব্যয়ের ক্ষেত্রেও কৃচ্ছ্রতা চলছে। এ সংকটের সমাধানে মূল্যস্ফীতিতে লাগাম টানতে হবে।

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর