শনিবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

প্রার্থীদের সম্পদ

আলাদিনের চেরাগওয়ালাদের খুঁজুন

নির্বাচন কমিশনে নির্বাচনে প্রার্থীদের সম্পদের তালিকা দেশবাসীকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে। মাত্র পাঁচ বছরে কোনো কোনো প্রার্থী শতগুণ কিংবা তার চেয়েও বেশিগুণ সম্পদের মালিক হয়েছেন। তাদের স্ত্রী ও সন্তানদের সম্পদও আঙুল ফুলে কলাগাছ হওয়ার মতো। তবে নির্বাচন কমিশনে প্রার্থীদের কেউ কেউ সম্পদের যে হিসাব দিয়েছেন তা শায়েস্তা খানের আমলের কি না তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। সভ্য গণতান্ত্রিক সমাজে সম্পদের মালিক হওয়া কোনো অপরাধ নয়। অপরাধ শুধু অবৈধভাবে সম্পদ অর্জিত হলে। নির্বাচনের ক্ষেত্রে ইসি প্রার্থীদের সম্পদের হিসাব নেন এটি ভালো দিক। বিশ্লেষকদের মতে, যারা সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হবেন তাদের হলফ করে আট ধরনের তথ্য দিতে হবে। এ তথ্যগুলো দেওয়ার উদ্দেশ্যই হলো জনগণকে ক্ষমতায়িত করা। তথ্যগুলো যদি সঠিক না হয়, যদি বিভ্রান্তিমূলক হয়, তাহলে মানুষ ক্ষমতায়িত হওয়ার পরিবর্তে বিভ্রান্ত হয়। বাস্তবে তাই হচ্ছে। ভোটারদের বিভ্রান্ত করা কোনোভাবেই কাম্য নয়। নির্বাচন কমিশন প্রার্থীদের দেওয়া তথ্যগুলো জনগণের কাছে পৌঁছে দেবে, আদালতের এই নির্দেশ আছে। নির্বাচন কমিশন কখনো এই কাজটি করেনি। নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব হলফনামায় দেওয়া তথ্য যাচাইবাছাই করা। নির্বাচন কমিশন যদি যাচাইবাছাই করে দেখত, প্রার্থী ভুল তথ্য দিয়েছেন অথবা তথ্য গোপন করেছেন, তখন তাদের মনোনয়পত্র যদি বাতিল করা হতো, তাহলে এ কাজ প্রার্থীরা কখনোই করতে পারতেন না। কেউ যদি তথ্য গোপন করেন তাহলে এই অপরাধে তার মনোনয়ন বাতিল হওয়ার কথা। কেননা দন্ডবিধির ১৮১ ধারা অনুযায়ী ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে হলফ করে মিথ্যা তথ্য দেওয়া শাস্তিযোগ্য অপরাধ। নির্বাচনি অঙ্গনে অনেক দুর্বৃত্ত বিচরণ করছে। যারা বিরাট অঙ্কের টাকা খরচ করে মনোনয়ন কিনেছে। এরাই নির্বাচিত হয়ে ওই পদ-পদবি ব্যবহার করে বিভিন্নভাবে নিজেদের স্বার্থসিদ্ধি করে থাকে। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশন সতর্ক হলে আলাদিনের চেরাগধারীদের পক্ষে নির্বাচনে দাঁড়ানো কঠিন হতো। এমপি হওয়াকে যারা টাকা তৈরির মেশিন হিসেবে ব্যবহার করছেন সে দুর্বৃত্তদের কবল থেকে দেশবাসী রেহাই পেত। সম্পদের তথ্য গোপন অথবা অবৈধভাবে তা অর্জন সম্পর্কে সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো সক্রিয় হবেন এমনটিও প্রত্যাশিত।

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর