শুক্রবার, ২৯ ডিসেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

অস্থির অর্থনীতি

ইতিবাচক পরিবর্তন ঘটাতে হবে

দেশের অর্থনীতির জন্য গত দেড় দশকের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ বছরটি এখন বিদায়ের পথে। অর্থনীতির জন্য এমন অস্থির ও নাজুক বছর গত ৫০ বছরে খুব একটা ঘটেনি। বছরের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পুরো সময়টাই সামষ্টিক অর্থনীতি ছিল অস্থির ও সংকটাপন্ন। এমনকি বছর শেষে সংকটগুলো আরও তীব্র হয়েছে। ডলার সংকট আর মূল্যস্ফীতির চাপ ছিল বছরজুড়েই। খাদ্যপণ্যের উচ্চমূল্য ভুগিয়েছে সব শ্রেণির মানুষকেই। সরকারের সঙ্গে সাধারণ মানুষের বন্ধন অনেকটাই শিথিল হয়েছে এ কারণে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের পতন ঠেকানো যায়নি শত চেষ্টায়ও। আলোচনায় ছিল ব্যাংক খাতের অনিয়ম-দুর্নীতিও। একই সঙ্গে উচ্চ মূল্যস্ফীতি আর ডলার সংকটের কারণে অসহায় অবস্থায় পড়েন ব্যবসায়ীরা। এর ফলে উল্লেখ করার মতো নতুন কোনো বিনিয়োগ আসেনি বিদায়ী বছরে। তৈরি হয়নি তেমন কোনো কর্মসংস্থান। যা দেশের সামষ্টিক অর্থনীতির সংকটকে করেছে তীব্র থেকে তীব্রতর। ২০২২ সালের ডিসেম্বরে সার্বিক মূল্যস্ফীতির চাপ ছিল ৮ দশমিক ৭১ শতাংশ। তার আগের মাস নভেম্বরে যেটা ছিল ৮ দশমিক ৮৫ শতাংশ এবং অক্টোবরে ছিল ৮ দশমিক ৯১ শতাংশ। আর চলতি বছরের নভেম্বরে সার্বিক মূল্যস্ফীতির চাপ দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ৪৯ শতাংশে। অবশ্য নভেম্বর ২০২৩-এ খাদ্য মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমে ১০ দশমিক ৭৬ শতাংশ হয়েছে। ডলার সংকটের কারণে আমদানি ব্যয়ের লাগাম টানতে গিয়ে হিতে বিপরীত ঘটেছে। শিল্প কলকারখানা স্থাপনের মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানিও হ্রাস পেয়েছে। সরকারের রাজস্বও কমেছে এ কারণে। বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ ক্রমান্বয়ে কমছে। বাংলাদেশে খাদ্য উৎপাদন সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিপুলভাবে বাড়লেও পাল্লা দিয়ে বেড়েছে চাল, গম, চিনি, তেল, পিঁয়াজ ইত্যাদি খাদ্যপণ্য আমদানি। যা মেটাতে গিয়ে রিজার্ভে টান পড়ছে। সরকার বাজার নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হওয়ায় সাধারণ মানুষের ভোগান্তি বেড়েছে। ব্যাংকিং খাতের অব্যবস্থাপনা অর্থনীতির ভিতে চিড় ধরাচ্ছে। গত ১৪ বছরে দেশের বৈদেশিক ঋণ বেড়েছে ৩২২ শতাংশ। এই ঋণ শোধ কঠিন হবে সামষ্টিক অর্থনীতিতে ইতিবাচক পরিবর্তন না হলে। এ ব্যাপারে নতুন বছরে সতর্ক থাকতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর