শিরোনাম
শনিবার, ৩০ ডিসেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

আখেরাতে সফলতা লাভের উপায়

মো. আমিনুল ইসলাম

আখেরাতে সফলতা লাভের উপায়

আল্লাহ রাব্বুল আলামিন তাঁর বান্দাদের অত্যন্ত ভালোবাসেন এবং তিনি চান তাঁর বান্দারা পরকালের জীবনে জান্নাতে আরাম আয়েশে থাকুক। সে জন্য তিনি সৃষ্টি করেছেন জান্নাত। যেখানে শুধু বিরাজ করছে সুখ, শান্তি আর আরাম। নেই কোনো দুঃখ বা কষ্ট। তাহলে এই জান্নাত লাভ করতে হলে আমাদের কী করতে হবে? আল্লাহ রাব্বুল আলামিন তা পবিত্র কোরআনে স্পষ্ট করে বলে দিয়েছেন, তাদের শরীর রাতের বেলায় বিছানা থেকে আলাদা থাকে, তারা নিশুতি রাতে আজাবের ভয়ে এবং জান্নাত লাভের আশায় তাদের মালিককে ডাকে তদুপরি আমি তাদের যা কিছু দান করেছি তারা তা থেকে আমার পথে ব্যয় করে। (সুরা আস সাজদা, আয়াত ১৬) আর জান্নাত সম্পর্কে বলতে গিয়ে আল্লাহ বলেন, আমি আমার নেককার বান্দাদের জন্য এমন সব জিনিস প্রস্তুত করে রেখেছি, যা কোনো চোখ কোনো দিন দেখেনি, কোনো কান কোনো দিন তার বর্ণনা শোনেনি। (সুরা আস সাজদা, আয়াত ১৭)। সুবহানাল্লাহ। হজরত আদম (আ.) থেকে শুরু করে হজরত মোহাম্মদ (সা.) পর্যন্ত যত নবী রসুল দুনিয়াতে এসেছেন সবাই মানুষকে দীনের দাওয়াত দিয়েছেন। আল্লাহর একত্ববাদের কথা বলেছেন। আল্লাহ চান তার বান্দারা দীনের ও ইসলামের আদর্শ অনুসরণ করুক। তারা জান্নাতবাসী হোক। শয়তান সব সময় আমাদের পথভ্রষ্ট করার জন্য প্রতিনিয়ত বিভ্রান্ত করছে। সে জন্য আমরা আল্লাহ ও রসুলের আদর্শ অনুসরণ এবং কোরআনের আলোকে জীবন পরিচালিত করতে গিয়ে প্রতিনিয়ত আমরা নফসের বাধার সম্মুখীন হচ্ছি। শয়তান আমাদেরকে ধোঁকা দিচ্ছে। এরপরও আমাদের সব বাধা মোকাবিলা করে দীনের পথে অটল ও অবিচল থাকতে হবে। তা হলেই আখেরাতে নাজাত পাওয়া যাবে। আল্লাহ বলেন, অবশ্যই যারা বলে, আল্লাহতায়ালাই হচ্ছেন আমাদের রব, অতঃপর তারা এর ওপর অবিচল হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে, তাদের কোনো ভয় শঙ্কা নেই এবং তাদের কখনো উদ্বিগ্ন হতেও হবে না। তারাই হবে জান্নাতের অধিকারী, সেখানে তারা চিরদিন থাকবে, এ হচ্ছে তাদের সেই কাজের পুরস্কার যা তারা দুনিয়ায় করে এসেছে। (সুরা আল আহকাফ, ুআয়াত ১৩-১৪)। আমাদের মনে রাখতে হবে এই সামান্য জীবনের পর আছে অনন্তকালের জীবন, যার নাম আখিরাত। পরকালে মুক্তি এবং দুনিয়াতে সুখ শান্তি পেতে আমরা সবাই চাই। সে জন্য আমাদের কোরআনে বর্ণিত আল্লাহর আদেশ নিষেধ মেনে চলতে হবে। আল্লাহ বলেন, যারা অদৃশ্যের প্রতি ইমান আনে, সালাত কায়েম করে আর আমি যে রিজিক দিয়েছি তা থেকে ব্যয় করে। (সুরা বাকারা, আয়াত ৩)। মানুষ এই দুনিয়ার বুকে সফল হওয়ার জন্য কত কষ্টই না করে। দিনরাত পরিশ্রম করে। একটু ভালোভাবে থাকার আশায়। কেউ সফল হয় কেউ হয় না। একটু সুখের আশায় মরীচিকার পেছনে ছুটতে ছুটতে এক সময় হতাশায় নিজের জীবনকে জাহান্নামে পরিণত করে। অথচ কখনো বুঝতে চায় না প্রকৃত সফলতা হলো আখেরাতের সফলতা। আল্লাহ বলেন, আর অবশ্যই যারা তাকওয়া অবলম্বন করেছে তাদের জন্য আখেরাতের আবাসই উত্তম। তবুও কি তোমরা বুঝো না? (সুরা ইউসুফ, আয়াত ১০৯)। মুমিন মুসলমান ভালো কাজের মাধ্যমে দুনিয়াতে লাভ করে স্বচ্ছ ও সুন্দর জীবন আর আখেরাতের সফলতা তার জন্য সুনিশ্চিত। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ বলেন, প্রত্যেক প্রাণীই মরণের স্বাদ ভোগ করবে। অতঃপর তোমাদের কর্মকাণ্ডের পাওনা কেয়ামতের দিন পুরোপুরি আদায় করে দেওয়া হবে, যাকে জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচিয়ে দেওয়া হবে এবং জান্নাতে প্রবেশ করানো হবে, সে-ই সফলতা পাবে। মনে রেখ এই পার্থিব জীবন শুধু ধোঁকার সামগ্রী। (সুরা আলে ইমরান, আয়াত ১৮৫)। আল্লাহ কোরআনে স্পষ্ট করে বলে দিয়েছেন কী করলে আমরা আখেরাতে সফলতা অর্জন করতে পারব। সুতরাং আমরা আল্লাহর কাছে সাহায্য চাই তিনি যেন আমাদের কোরআন ও হাদিসের আলোকে জীবন গড়ে আখেরাতে সফলতা অর্জন করার তৌফিক দান করেুন।

লেখক : অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংকার

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর