শনিবার, ৩০ ডিসেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

শায়েস্তাখানি কাণ্ড

হলফনামার জারিজুরি ফাঁস

বাংলাদেশে পিঁয়াজের কেজি ২০০ টাকা ছাড়িয়েছে গত মাসে। অথচ শায়েস্তা খান নয়, আমাদের জমানায় অনেকে চার দশক আগে পিঁয়াজ কিনেছেন ৫০ পয়সা কেজিতে। ওই সময় আলুর দামও ছিল প্রতি কেজি ৫০ পয়সা। যার দাম এখন ৬০ থেকে ৭০ টাকা। নিত্যপণ্যের দাম সাধারণ মানুষের জন্য আকাশচুম্বী হলেও অসাধারণ যারা তাদের কাছে সবকিছুই যেন শায়েস্তা খানের আমলেই ঘুরপাক খাচ্ছে। সংসদ নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিরা তাদের সম্পদের যে হিসাব দিয়েছেন তাতে হয়তো হতবাক হননি নির্বাচন কমিশন। তাদের কেউ জমির বিঘা দেখিয়েছেন ১০০ টাকা। সোনার ভরি ৩০০ টাকা দেখিয়েও পার পেয়েছেন। হলফনামায় মাননীয় একজন মন্ত্রীর যুক্তরাজ্যে আটটি রিয়েল এস্টেট কোম্পানির মালিকানা ও ২ হাজার ৩০০ কোটি টাকা বিনিয়োগের তথ্য হলফনামায় প্রকাশ না করার বিষয়টি সারা দেশে আলোচনা হচ্ছে। শুধু এই মন্ত্রী নন, তার মতো অন্য মন্ত্রী-এমপিদের বড় অংশই হলফনামায় সম্পদের তথ্য গোপন করেছেন, যা ধীরে ধীরে প্রকাশ হতে শুরু করেছে। ফেনী সদরের এমপি নিজাম উদ্দিন হাজারী ৫ একর জমির ওপর রাজপ্রাসাদের মতো বাগানবাড়ির তথ্য হলফনামায় গোপন করেছেন। এটির বাজারমূল্য ৫০০ কোটি টাকা বলে গণমাধ্যমে খবর প্রকাশ হয়েছে। এভাবেই অনেক মন্ত্রী, এমপি সম্পদের তথ্য গোপন করেছেন। রাজনীতি-বিশ্লেষকরা বলছেন, যারা অস্বাভাবিক সম্পদের মালিক হয়েছেন তারা বেপরোয়াভাবে তা অর্জন করেছেন। নির্বাচন কমিশন যদি এসব যাচাই-বাছাই করে দেখত যে প্রার্থী ভুল তথ্য দিয়েছেন, অথবা তথ্য গোপন করেছেন, এ কারণে যদি মনোনয়ন বাতিল করা হতো তবে তা একটি নজির হিসেবে বিবেচিত হতো। যারা মন্ত্রী-এমপি হয়ে লুটপাটে লিপ্ত হয়েছেন, তারা অন্তত পরবর্তীতে নির্বাচনে দাঁড়ানোর সাহস দেখাতেন না। কারণ হলফনামার বিষয়ে নির্বাচন কমিশন খোঁজখবর নিলে লুটপাটের খবর ফাঁস হয়ে যাবে- এই ভয়ে তারা নির্বাচন থেকে বিরত থাকতেন। দেশবাসীও রক্ষা পেতেন তাদের কবল থেকে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর