শনিবার, ৩০ ডিসেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

চলনবিলের নদনদী

সুরক্ষায় সচেষ্ট হতে হবে

চলনবিল দেশের বৃহত্তম বিল ও জলাশয়। দেশের উত্তরাঞ্চলের গৌরব চলনবিল তার অস্তিত্ব হারাতে বসেছে। চলনবিল অঞ্চলের প্রাণকেন্দ্র নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার বুক চিরে বয়ে যাওয়া প্রায় ১৬টি নদনদী এখন সৌন্দর্য, পূর্ব জৌলুশ ও স্বকীয়তা হারিয়ে মরা খালে পরিণত হয়েছে। দখল, দূষণ ও ভরাটে এ উপজেলার প্রধান নদী নন্দকুঁজা, গুমানি, আত্রাইসহ তুলসীগঙ্গা, মির্জা-মামুদ ও খলিসাডাঙ্গা নদী সংকুচিত হয়ে এখন মৃতপ্রায়। ফলে কৃষিজমির সেচকার্য ব্যাহতসহ দেশি মৎস্য সম্পদ ও জীববৈচিত্র্য হুমকির মুখে পড়েছে। বেকার হয়েছে নদীনির্ভর জীবিকা অর্জনকারী মানুষগুলো। ব্যবসা-বাণিজ্যে দেখা দিয়েছে স্থবিরতা। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বর্ষা শেষে চলনবিলের নদী-নালা ও খাল-বিলে পানি থাকে না। তাই বন্ধ হয়ে গেছে নৌ চলাচল। পানি না থাকায় জেলেরা মাছ ধরতে পারছেন না। ধান চাষ হচ্ছে এসব মরা নদীতে। অথচ এক সময় এসব নদীতেই বছরজুড়ে পানি থাকত। চলাচল করত ছোট-বড় নৌকা। এসব নদী আর নৌকাকে ঘিরেই গুরুদাসপুরের বিভিন্ন এলাকায় গড়ে উঠেছিল অনেক নৌবন্দর। যা এখন চলনবিল এলাকার ইতিহাসের অংশ। চলনবিলের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত নদনদীর অস্তিত্ব বিপন্ন হয়ে ওঠায় সংশ্লিষ্ট এলাকার পরিবেশগত ভারসাম্য ক্ষুণ্ন হচ্ছে। চাষাবাদ করার জন্য চলনবিল এলাকার চাষিরা ওই এলাকার নদনদীগুলোর ওপর নির্ভরশীল ছিলেন। এখন তারা নির্ভরশীল হয়ে পড়ছেন নলকূপ দিয়ে ওঠানো পানির ওপর। এর ফলে চলনবিল এলাকার ভূগর্ভের পানির স্তর নিচে নামছে। দেশের মৎস্য সম্পদের বৃহত্তম উৎস হিসেবে চলনবিলের সুনাম ইতোমধ্যে লোপ পেয়েছে। অস্তিত্বের স্বার্থেই চলনবিল এলাকার স্বাভাবিক বৈশিষ্ট্য এবং নদনদী সুরক্ষায় যত্নবান হতে হবে। নদনদী হত্যার অপরাধ থেকে বিরত থাকতে হবে নিজেদের অস্তিত্বের স্বার্থেই।

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর