মঙ্গলবার, ২ জানুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

জীববৈচিত্র্য

আফতাব চৌধুরী

জীববৈচিত্র্য

উন্নয়নশীল দেশের অর্থনীতিতে উদ্ভিদ ও বন্যপ্রাণীর উল্লেখযোগ্য অবদান আছে। আমাদের খাদ্যের বিরাট অংশ হলো মাংস।  এ ছাড়া দুধ, পশুর চামড়া, শিং, পশম, হাতির দাঁত, হাড় ইত্যাদি আমরা পেয়ে থাকি প্রাণিসম্পদ থেকে। একই সঙ্গে আছে বহু রকমের সবুজ বন্য সবজি, বাদাম, আঠা, ফল, ফুল, মসলা, লাক্ষা এবং আরও কত কি। তাছাড়া জীববৈচিত্র্য থেকে পাওয়া যায় বহু রকম অর্থনৈতিক প্রাণী এবং ফসলের তথা খাদ্য ফসলের বন্যপ্রজাতি, গৃহপালিত পশু। এগুলোকে আবার সংকরায়ণে ব্যবহার করা হয় নতুন ভালো ও রোগপ্রতিরোধ জাত সৃষ্টির জন্য। বন্যপ্রাণীদের চিড়িয়াখানায়, অভয়ারণ্যে, সাফারি উদ্যানে এবং উদ্ভিদ প্রজাতিগুলোকে সংরক্ষিত বনাঞ্চলে, বোটানিক্যাল গার্ডেনে রেখে প্রজন্ন করানোর ব্যবস্থা হলে এগুলো সংরক্ষিত হবে এবং এগুলোর বিলুপ্তির সম্ভাবনা কমে যাবে। যেমন ছোটো ছোটো প্রাণীদের সহজেই লালন-পালন করে গৃহপালিত করে তোলা যায়। আবার যেসব বন্যপ্রাণীর অর্থনৈতিক মূল্য বেশি এবং যেগুলো কম হিংস্র সেগুলো ধীরে ধীরে মায়া-মমতা দিয়ে গৃহপালিত করে তা থেকে দুধ, চামড়া ও মাংসের চাহিদা মেটানো যায় যেমন- খরগোস। নতুন নতুন পাখি পালন পোষণ করে পাওয়া যেতে পারে ডিম ও মাংস যেমন- কোয়েল। মানুষের খাবার বা ব্যবহারের উপযোগী স্তন্যপায়ী বন্য প্রাণী, মাছ, উভচর, কাঁকড়া, চিংড়ি ইত্যাদি প্রাণী পালন করে আমরা নিজেদের প্রয়োজন যেমন মেটাতে পারি তেমনি পারি অত্যধিক আহরণে জীববৈচিত্র্য বিনাশের প্রবণতা রোধ করতে। কোনো কোনো অঞ্চলের অর্থনীতি মূলত নির্ভর করে প্রাণিসম্পদের ওপর, কাজেই সেসব প্রাণীর লালন-পালন তথা সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা জরুরি।

জম্মু ও কাশ্মীরের পশমের ব্যবসা বহুদিন যাবৎ পৃথিবী বিখ্যাত। বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইন বলবৎ হওয়ার পর কাশ্মীরের ব্যবসায়ীরা অনন্যোপায় হয়ে উত্তর ভারতের শেয়াল, খেঁকশিয়াল, বনবিড়াল ইত্যাদির পশম সংগ্রহ করে। যথেচ্ছভাবে এবং বিশৃঙ্খলভাবে এসবের ব্যবহার এসব প্রাণীকে লুপ্তপ্রায় করে দিয়েছে। অথচ গৃহপালিত প্রাণী হিসেবে লালন-পালন করে পশম সংগ্রহ করলে কোনো প্রজাতি লুপ্ত হয় না। বরং দিনদিন অর্থনৈতিক সম্ভাবনাময় প্রজাতিগুলোর  সদস্যসংখ্যা বাড়ানো যায়। একইভাবে চাষ করা যায় ব্যাঙের, যা রপ্তানি করা যায়।

সর্বশেষ খবর