দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আজ। বাংলাদেশের মানুষ ঐতিহ্যগতভাবে নির্বাচনমুখী। নির্বাচনে এ দেশে উৎসবী পরিবেশ সৃষ্টি হয়। টানা তিন মেয়াদে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রধান প্রতিপক্ষ বিএনপি ও সমমনা দলগুলো এ নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না। তার পরও নির্বাচনে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতার আভাস মিলেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নৌকা ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মধ্যে। কিছু আসনে জাতীয় পার্টির লাঙল তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী। দেশের ইতিহাসে এবারই প্রথম রেকর্ড পরিমাণ স্বতন্ত্র প্রার্থী জয়ী হবেন বলে আশা করা হচ্ছে। বিগত দুটি নির্বাচন নানা কারণে সমালোচিত হয়েছে। প্রথমটিতে অংশ নেয়নি বিএনপি-জামায়াত জোট। তবে নির্বাচনের প্রতিপক্ষ হয়েছিল আগুনসন্ত্রাস। ফলে অধিকাংশ আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতেছে ক্ষমতাসীনরা। যেগুলোয় নির্বাচন হয়েছে, উপস্থিতির হার ছিল নগণ্য। একাদশ সংসদ নির্বাচনে নিবন্ধন ধরে রাখার জন্য বিএনপি অংশ নেয়। নির্বাচনে অংশ নিলেও মাঠে সেভাবে দেখা যায়নি এ দলের নেতা-কর্মীদের। ফলে সে নির্বাচনের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দেয়। এ বছর নিরপেক্ষ ভোট অনুষ্ঠানে কঠোর অবস্থানে নির্বাচন কমিশন। ভোটের মাঠে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে মোতায়েন করা হয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ৮ লাখ সদস্য। আজ সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত একটানা ভোট চলবে ২৯৯ আসনে। নওগাঁ-২ আসনে একজন প্রার্থী মারা যাওয়ায় সেখানে পরে ভোট হবে। ভোটের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ও দলের প্রচার শেষ হয়েছে শুক্রবার সকাল ৮টায়। প্রচার শেষে ভোট গ্রহণের জন্য প্রস্তুত প্রার্থী ও ভোটাররা। বিএনপিসহ বেশ কয়েকটি দলের বর্জন এবং ট্রেন, বাস ও ভোট কেন্দ্রে আগুনসন্ত্রাসসহ বেশ কিছু কারণে এ নির্বাচনে কেন্দ্রে ভোটার টানাই প্রধান চ্যালেঞ্জ বলে মনে করছেন নির্বাচন বিশ্লেষকরা। কারচুপি ঠেকাতে এবার অধিকাংশ কেন্দ্রেই সকালে ব্যালট পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন। সকালে ৯২.৯৫ শতাংশ বা ৩৯ হাজার ৬১ কেন্দ্রে ব্যালট পেপার পাঠানো হবে। আর ২ হাজার ৯৬৪ বা ৭ শতাংশ কেন্দ্রে ব্যালট পেপার পাঠানো হয়েছে গতকাল। এ ছাড়া বেশ কিছু দুর্গম কেন্দ্রে হেলিকপ্টারযোগে সরঞ্জাম পাঠানো হয়েছে। নির্বাচনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে কারা দেশ পরিচালনা করবেন তা নির্ধারণ করা হয়। আমরা আশা করব, নির্বাচনে সৎ ও যোগ্য প্রার্থীদের বেছে নেওয়া হবে। শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠিত হবে ভোট উৎসব।