রাজনীতি হলো জনকল্যাণের নীতি। রাজনীতির সঙ্গে সন্ত্রাসের দূরতম সম্পর্ক থাকার কথা নয়। কিন্তু আমাদের দেশে রাজনীতি ও সন্ত্রাস একাকার হয়ে গেছে বহু ক্ষেত্রে। রাজনীতির দুুর্বৃত্তায়ন জনভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন কেন্দ্র করেও দানা বেঁধে উঠেছে ঘৃণ্য সন্ত্রাস। এ নির্বাচনে দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর একাংশ অংশ নিলেও অন্য অংশ নির্বাচন বর্জনের ডাক দিয়েছে। নির্বাচনে অংশ নেওয়া যেমন নাগরিকের গণতান্ত্রিক অধিকার তেমনি বর্জনের অধিকারও যে কেউ রাখেন। কিন্তু নির্বাচন বর্জনের নামে সন্ত্রাস সৃষ্টি, ট্রেন-বাসে আগুন দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে মারা, ভোট কেন্দ্র পুড়িয়ে দেওয়া এবং বোমা বিস্ফোরণের অধিকার কেউ রাখেন না। কিন্তু দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণকে কেন্দ্র করে শুক্র ও শনিবার দেশের বিভিন্ন স্থানে ভোট কেন্দ্র হিসেবে নির্ধারিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। চট্টগ্রাম নগরীর চান্দগাঁও এলাকায় নির্বাচন সরঞ্জামবাহী একটি বাসে আগুন দেওয়া হয়েছে। ভোট কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি ঠেকাতে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টির অপকৌশল হিসেবে ২০১৪ সালের মতোই অপতৎপরতায় নেমেছে বর্জনকারীরা- এমন অভিযোগ নির্বাচনপন্থিদের। আগুন দেওয়ার ঘটনায় দেশের বিভিন্ন এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে গ্রেফতার হয়েছে অনেকে। পটুয়াখালী, হবিগঞ্জ, শেরপুর, রাজশাহী, গাজীপুর, ময়মনসিংহসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে আগুনসন্ত্রাসের ঘটনা ঘটেছে। দুর্বৃত্তরা পুড়িয়ে দিয়েছে ভোট কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। বাংলাদেশের মানুষ ঐতিহ্যগতভাবে নির্বাচনমুখী। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে সরকারি দলের প্রধান প্রতিপক্ষ বিএনপি-জামায়াতসহ সমমনা দলগুলো নির্বাচন বর্জন করলেও ব্যাপক সংখ্যক স্বতন্ত্র প্রার্থীর অংশগ্রহণে জমে উঠেছিল নির্বাচনি প্রচারণা। দেশজুড়ে আগুনসন্ত্রাসের মাধ্যমে ভোটারদের ভোট থেকে দূরে রাখার যে চেষ্টা চলেছে তা বরং বর্জনকারীদের প্রতি সহানুভূতিতেই বাদ সাধছে। এ অপখেলা থেকে সবারই দূরে থাকা উচিত।