বুধবার, ১০ জানুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন

মুক্তিযুদ্ধের বিজয় পূর্ণতা পেয়েছে যেভাবে

ইতিহাসের বরপুত্ররা নিজগুণে জাতীয় সত্তার সমার্থক হয়ে ওঠেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন তেমনই একজন। বাংলাদেশ ও বঙ্গবন্ধু সমার্থক হওয়ায় মুক্তিযুদ্ধের মহান বিজয়ও অসম্পূর্ণ মনে হয়েছে পাকিস্তানি কারাগারে তিনি অন্তরিন থাকার কারণে। যে প্রেক্ষাপটে বাঙালি জাতির জীবনে ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ ফেরার দিনটির তাৎপর্য আকাশছোঁয়া। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের কাল রাতে পাকিস্তানি সৈন্যরা গণহত্যা শুরু করলে সে কঠিন পরিস্থিতিতে ২৬ মার্চের সূচনালগ্নে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। পাকিস্তানি দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধেরও ডাক দেন তিনি। হানাদার বাহিনীর সদস্যরা বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করে পাকিস্তানের কারাগারে নিয়ে যায়। নির্জন কারাগারে প্রহসনের বিচারে বঙ্গবন্ধুকে ফাঁসির নির্দেশও দেওয়া হয়। একাত্তরের ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানি বাহিনীর আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে মুক্তিযুদ্ধে বাঙালি জাতির বিজয় অর্জিত হয়। বাংলাদেশ যখন আনন্দ-উল্লাসে উত্তাল, তখনো গোটা জাতি বঙ্গবন্ধুর জীবনের নিরাপত্তার ব্যাপারে উৎকণ্ঠিত, তার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের প্রতীক্ষায় অধীর। বিশ্ব নেতারাও বঙ্গবন্ধুর মুক্তি দাবিতে সোচ্চার হয়ে ওঠেন। বাহাত্তর সালের জানুয়ারির ১০ তারিখ বঙ্গবন্ধু দেশে ফিরে না আসা পর্যন্ত এ দেশের অগণিত মানুষ আল্লাহর দরবারে প্রার্থনা করেছেন। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে ১৯৭২ সালের ৮ জানুয়ারি রাওয়ালপিন্ডি থেকে পিআইএর একটি বিশেষ বিমান লন্ডনের উদ্দেশে রওনা হয়। নিরাপদে বঙ্গবন্ধুর লন্ডনে পৌঁছার খবর পাওয়ার পর দেশের সর্বত্র আনন্দের বন্যা বয়ে যায়। ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি তেজগাঁও বিমানবন্দরে নামে জাতির পিতাকে নিয়ে আসা ব্রিটিশ বিমান। মুক্তিযুদ্ধের ২৫ দিন পর প্রকারান্তরে বাঙালি জাতি পরিপূর্ণ বিজয়ের স্বাদ অনুভব করে। প্রতি বছরের মতো এ বছরও পালিত হচ্ছে জাতির পিতার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের দিনটি। অমরতার অনুষঙ্গ বাংলাদেশে অনন্তকাল পর্যন্ত শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করা হবে বঙ্গবন্ধুর নাম। স্বাধীনতার জন্য ভবিষ্যৎ প্রজন্মের সুন্দর ভবিষ্যতের জন্য তিনি নিজেকে উৎসর্গ করেছিলেন বলেই বাঙালির পক্ষে স্বাধীন জাতি হিসেবে আত্মপ্রকাশ সম্ভব হয়েছে। স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসে জাতির পিতার প্রতি অকৃত্রিম শ্রদ্ধা।

সর্বশেষ খবর