বৃহস্পতিবার, ১১ জানুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

ভয়াবহ বায়ুদূষণ

কর্তাদের কুম্ভকর্ণের ঘুম ভাঙুক

রাজধানী ঢাকাকে বলা হয় রিকশার নগরী। যানজটের নগরী হিসেবেও আমাদের রাজধানী শিরোপাধারী। শব্দদূষণে ঢাকা সারা পৃথিবীতে প্রথম স্থান ধরে রেখেছে বহুদিন ধরে। বায়ুদূষণের দিক থেকে অপ্রতিদ্বন্দ্বী হতে চলেছে এই মেগাসিটি। জনসচেতনতার অভাব আর প্রশাসনের কুম্ভকর্ণের নিদ্রার কারণে ক্রমান্বয়ে ভয়াবহ বিষাক্ত হয়ে উঠেছে ঢাকার বাতাস। গত এক মাসে ৩০ দিনই এ শহরের বাতাস ছিল অস্বাস্থ্যকর। এর মধ্যে ২৮ দিন ছিল অতিমাত্রায় অস্বাস্থ্যকর। গত নভেম্বর থেকে অধিকাংশ দিনই ঢাকার বাসিন্দারা বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত বাতাস সেবনের মাধ্যমে শুরু করছে সকাল। গত মঙ্গলবার বিকাল ৫টায়ও পৃথিবীর ১০০টি বড় শহরের মধ্যে ঢাকার বাতাস ছিল সবচেয়ে দূষিত। এ সময়ে দূষণে দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল পাকিস্তানের লাহোর, তৃতীয় চীনের উহান ও চতুর্থ অবস্থানে ছিল ভারতের দিল্লি। গত ১১ ডিসেম্বর থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত ৩০ দিনের মধ্যে ঢাকার বাতাস সবচেয়ে কম দূষিত ছিল ২৯ ডিসেম্বর। ওইদিনও প্রতি ঘনমিটার বাতাসে ক্ষতিকর অতিসূক্ষ্ম বস্তুকণা পিএম ২.৫ ছিল ১৪৫.৪ মাইক্রোগ্রাম, যা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বেঁধে দেওয়া নিরাপদ সীমার চেয়ে ২৯ গুণ বেশি। আর মঙ্গলবার বাতাসে পিএম ২.৫ ছিল (সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত) ১৯০.২ মাইক্রোগ্রাম, যা নিরাপদ সীমার চেয়ে ৩৮ গুণ বেশি। এর মধ্যে ৮ জানুয়ারি রাত ১১টায় বিপজ্জনক পর্যায়ে দূষিত হয়ে ওঠে বাতাস। প্রতি ঘনমিটার বাতাসে পিএম ২.৫ বেড়ে দাঁড়ায় ২৫৯ মাইক্রোগ্রাম, যা নিরাপদ সীমার চেয়ে ৫১.৮ গুণ বেশি। বিশেষজ্ঞদের মতে, আন্তর্জাতিক গবেষণায় দেখা গেছে বাংলাদেশের মতো দেশগুলোতে শুধু বায়ুদূষণের কারণে মানুষের গড় আয়ু সাত বছর কমে যাচ্ছে। শীতকালে বাতাসের আর্দ্রতা কমে গেলে ঢাকাসহ দেশের প্রায় সব নগরীতে বায়ুদূষণের মাত্রা অনেক বেড়ে যায়। বায়ুদূষণের কারণে হাঁচি, কাশি, সর্দি, শ্বাসের টান বা হাঁপানি, অ্যালার্জিক কফ, অ্যালার্জিক অ্যাজমা, নিউমোনিয়া, যক্ষ্মা, ফুসফুস ক্যান্সারের মতো রোগগুলো থাবা বিস্তার করে। এর ফলে নানা রোগে আক্রান্ত হয় মানুষ। বায়ুদূষণের কবল থেকে রেহাই পেতে জনসচেতনতা বাড়াতে হবে। যেসব কারণে বায়ুদূষণ হয় তা রোধ করাও জরুরি।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর