সোমবার, ১৫ জানুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

ডলার সংকট

অর্থ পাচারে কঠোর নজরদারি চাই

ডলার সংকট দেশের অর্থনীতিকে বেসামাল করে তুলছে। গত পৌনে দুই বছরে টাকার বিপরীতে ডলারের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে ৫০ শতাংশ। সোজা কথায় টাকার দাম কমেছে বিপুলভাবে। এতে বড়মাপে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সাধারণ মানুষ। যাদের যতটুকু সঞ্চয় ছিল তার এক বড় অংশ তারা হারিয়েছেন টাকার মূল্যমান হ্রাস পাওয়ায়। ডলার সংকট কাটাতে অর্থ পাচার বন্ধ ও পাচার হওয়া অর্থ দেশে ফিরিয়ে আনার ওপর জোর দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, রপ্তানি আয়ের অর্থ ঠিকমতো দেশে আসছে কি না কড়া নজরদারি প্রয়োজন। প্রয়োজনে আইন-কানুনের পরিবর্তন করারও পরামর্শ দিয়েছে আইএমএফ। সরকার-সংশ্লিষ্টদের ডলারের বাজারে স্থিতিশীলতা আনতে অর্থ পাচার বন্ধে কঠোর নীতি অবলম্বনের নির্দেশনা ইতোমধ্যে দেওয়া হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে। একই সঙ্গে দেশ থেকে বিভিন্ন সময় পাচার হয়ে যাওয়া অর্থ উদ্ধারের চেষ্টা করতে বলা হয়েছে। ২০২২ সালের মার্চে শুরু হওয়া ডলার সংকট দিন দিন বেড়েই চলেছে। গত বছরে তা ভয়াবহ রূপ নেয়, ক্ষতিগ্রস্ত হয় ব্যবসা-বাণিজ্য। আমদানিকারকরা চাহিদামতো ডলার পাননি। ন্যায্য দাম পাননি রপ্তানিকারকরাও। ৮৫ টাকার ডলার খোলা বাজারে ১৩০ টাকার কাছাকাছি চলে আসে। ডলারের দাম নিয়ন্ত্রণে নানা ধরনের চেষ্টা করার পরও বাস্তব অর্থে তার কোনো ফল পাওয়া যায়নি। গত বছর বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বা মজুদ ধরে রাখা নিয়ে চাপে ছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক। আইএমএফের ঋণের শর্ত ছিল, ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর শেষে অন্তত ২৫.৩২ বিলিয়ন ডলারের নেট রিজার্ভ থাকতে হবে। সেটাও সম্ভব হয়নি। কারণ, সারা বছরই প্রতি মাসে গড়ে অন্তত ১ বিলিয়ন ডলার বিক্রি করতে হয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে। তাতে নেট রিজার্ভ এখন ২০ বিলিয়ন ডলারের কিছু বেশি আছে। ডলার সংকট কাটাতে রেমিট্যান্স আয় যাতে হুন্ডির বদলে ব্যাংকিং খাতের মাধ্যমে আসে তা নিশ্চিত করতে হবে। এ ব্যাপারে বিদেশে কর্মরতরা তাদের পরিবারের কাছে কোন মাধ্যমে অর্থ পাঠাচ্ছেন সেদিকে নজর রাখা জরুরি।

সর্বশেষ খবর