রবিবার, ২১ জানুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

খেলাপি ঋণ

রাঘববোয়ালদের ধরতে হবে শক্তভাবে

ঋণখেলাপির দুর্বৃত্তপনায় অভিশপ্ত হয়ে উঠেছে দেশের অর্থনীতি। এ অভিশাপ থেকে মুক্ত হতে সরকার ব্যাংকিং খাতে বড় ধরনের সংস্কারের ঘোষণা দেয় একাধিকবার। ব্যাংক কোম্পানি ও অর্থঋণ আদালত আইন সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। খেলাপির পরিমাণ বেড়ে যাওয়ার কারণ শনাক্তে টাস্কফোর্স গঠনের ঘোষণা করে। তবে এসব উদ্যোগ ঘোষণার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে। গত কয়েক বছরে ব্যাংক খাতে বড় ধরনের কোনো সংস্কার না হওয়ায় খেলাপি ঋণ আরও বেড়েছে। এর পরিমাণ দেড় লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। অনিয়ম, সংকটের কারণে কয়েকটি ব্যাংকের পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়েছে। দৈনন্দিন লেনদেন করার মতো পর্যাপ্ত তহবিল নেই কয়েকটি ব্যাংকের। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ধার করে চলতে হচ্ছে। ব্যাংকিং খাতের দুরবস্থার জন্য দায়ী কর্তৃপক্ষীয় অবহেলা। খেলাপিদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ না নেওয়ার পরিণতি ভয়াবহ সংকট তৈরি করেছে। বড় আকারের সংস্কার ছাড়া ব্যাংকিং খাতের সংকট দূর করা যাবে না বলে মনে করছেন আর্থিক খাতের বিশেষজ্ঞরা। ২০১৯ সালে ব্যাংকিং খাতে বড় ধরনের সংস্কার পরিকল্পনার কথা ঘোষণা করে অর্থ মন্ত্রণালয়। এর মধ্যে নতুন ব্যাংক অনুমোদন ও মূলধন ঘাটতি পূরণে শর্ত আরোপ করা, ব্যাংকারদের জবাবদিহির মধ্যে আনতে পরিকল্পনা নেওয়া হয়। সংস্কারমূলক কাজ শুরু করতে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ রাষ্ট্রায়ত্তসহ কেন্দ্রীয় ব্যাংক কর্তৃপক্ষকেও যুক্ত করে। ব্যাংকিং খাত সংস্কারের জন্য রাষ্ট্রায়ত্ত সব ব্যাংকের কাছে কয়েকটি তথ্য চেয়ে চিঠিও দেওয়া হয়। চিঠিতে বিগত সময়ে ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ বৃদ্ধির কারণ এবং তা কমিয়ে আনার বিষয়ে তাদের সুপারিশ চাওয়া হয়। তবে সদিচ্ছার অভাব থাকায় অর্থ মন্ত্রণালয় ঋণখেলাপি নামের বিড়ালের গলায় ঘণ্টা পরাতে পারেনি। ঋণখেলাপিদের লাগাম পরানোর কোনো যথাযথ কর্তৃপক্ষ না থাকায় গত বছরের ডিসেম্বরে তা ১ লাখ ৫৫ হাজার ৩৯৭ কোটি টাকায় দাঁড়ায়। যা আগের বছরের চেয়ে ৩৫ হাজার কোটি টাকা বেশি। ২০০৯ সালে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ২২ হাজার ৪৮১ কোটি ৪১ লাখ টাকা। খেলাপি ঋণ নামের চৌর্যবৃত্তি বন্ধে সরকারকে কড়া হতে হবে। এ  ক্ষেত্রে রাঘববোয়ালদের ধরতে হবে শক্তভাবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর