সোমবার, ২২ জানুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

বিদ্যুৎ চোরেরা বেপরোয়া

কর্তৃপক্ষের কঠোর মনোভাব কাম্য

সারা দেশে প্রতিনিয়তই বিদ্যুৎ চুরি হচ্ছে এবং বেপরোয়া হয়ে উঠছে বিদ্যুৎ চোরেরা। বিদ্যুৎ বিভাগের চোর-মহাচোরদের যোগসাজশে তারা চুরি করছে শত শত কোটি টাকার বিদ্যুৎ। বিদ্যুৎ চুরির বিরুদ্ধে জেল-জরিমানার বিধান থাকলেও চোরেরা তা কোনো পাত্তাই দিচ্ছে না। রাজধানীর অলিগলিতে, ফুটপাতে গড়ে ওঠা হাজার হাজার দোকানে ব্যবহৃত হচ্ছে চুরি করা বিদ্যুৎ। বিদ্যুৎ বিভাগের মাঠপর্যায়ের কর্মীদের যোগসাজশে এলাকার রাজনৈতিক টাউট ও মাস্তানরা অবৈধভাবে ব্যবহৃত বিদ্যুৎ বাবদ ভাড়া আদায় করে দোকানিদের কাছ থেকে। চুরির এই বিদ্যুৎ থেকে প্রতিদিন কোটি টাকার ভাগ যাচ্ছে রাজনৈতিক নেতা, প্রশাসন ও বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তাদের কাছে। ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে প্রায় ১৬৩ কিলোমিটার দীর্ঘ ফুটপাত রয়েছে। এসব ফুটপাতের সাড়ে ৩ লাখ দোকানে প্রায় ৫ লাখ অবৈধ বৈদ্যুতিক বাতি জ্বলে। বাতিপ্রতি গড়ে ৩০ টাকা হিসাবে দিনে আদায় হয় দেড় কোটি টাকা। সেই হিসাবে মাসে ৪৫ কোটি আর বছর শেষে অঙ্ক দাঁড়ায় ৫৪০ কোটিতে। ঢাকার ফুটপাত ও রাস্তার এ টাকা বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানির অসাধু কর্মচারী এবং এলাকার রাজনৈতিক প্রভাবশালীদের পকেটে যাচ্ছে। ফুটপাতের দোকানে বিদ্যুৎ খরচের বেশির ভাগ হিসাব নেই নিয়ন্ত্রক সংস্থার কাছে। এ বিষয়ে তথ্য নেই ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড ও ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেড কর্তৃপক্ষের কাছেও। রাজধানীর মিরপুর-১, মিরপুর-২ নম্বর থেকে শুরু করে মিরপুর-১০, মিরপুর ১৪ নম্বর, ফার্মগেট, পীরেরবাগ, মতিঝিল, গুলিস্তান এবং মোহাম্মদপুরসহ এমন কোনো এলাকা নেই যেখানে ফুটপাতের দোকানে চুরিকৃত বিদ্যুৎ ব্যবহার হয় না। আর রাজধানীর বস্তি এলাকাগুলোতে অবাধে পরিচালিত হয় ইজিবাইক চার্জ। রাজধানীতে ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইকের চলাচল নিষিদ্ধ করার উদ্যোগ নেওয়া হলেও তা বাস্তবায়িত হয়নি রাজনৈতিক টাউট ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মধ্যে ঘাপটি মেরে থাকা অসৎ সদস্যদের কারণে। বিদ্যুৎ চুরি বন্ধে কর্তৃপক্ষের কঠোর মনোভাব নিশ্চিত করা জরুরি।

সর্বশেষ খবর