বুধবার, ২৪ জানুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

কবিরা গুনাহ থেকে নিজেকে রক্ষা করুন

মুফতি রুহুল আমিন কাসেমী

কবিরা গুনাহ থেকে নিজেকে রক্ষা করুন

পবিত্র কোরআন ও হাদিসে কবিরা গুনাহের পূর্ণ সংখ্যার বর্ণনা একসঙ্গে উল্লেখ নেই। তবে কোরআন ও হাদিসে যেসব গুনাহকে কবিরা গুনাহের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, ওলামায়ে কেরাম এর সংখ্যা ৬০টি বলে বর্ণনা করেছেন। কেউ কেউ তার সংখ্যা এর চেয়ে অধিক বলেও উল্লেখ করেছেন। তবে সবগুলো থেকেই বেঁচে থাকা জরুরি। কারও দ্বারা কবিরা গুনাহ সংঘটিত হয়ে গেলে খাঁটি মনে আল্লাহর দরবারে অনুতপ্ত হয়ে তওবা করতে হবে। এক নজরে কবিরা গুনাহগুলো-

১. আল্লাহতায়ালার সঙ্গে কাউকে শরিক করা। ২. কাউকে অন্যায়ভাবে হত্যা করা। ৩. পিতা-মাতার অবাধ্য হওয়া ও তাদের কষ্ট দেওয়া। ৪. কাউকে উত্তরাধিকার থেকে বঞ্চিত করা। ৫. এতিমের সম্পদ আত্মসাৎ করা। ৬. জিনা-ব্যভিচার করা। ৭. ওজনে কম দেওয়া। ৮. দারিদ্র্যের আশঙ্কায় সন্তান হত্যা করা। ৯. কোনো সতী-সাধ্বী নির্দোষ মহিলার ওপর জিনার অপবাদ দেওয়া। ১০. সুদ খাওয়া ও সুদ দেওয়া। ১১. জিহাদের ময়দান থেকে পলায়ন করা। ১২. জাদু, টোনা, বাণ মারা। ১৩. আমানতের খেয়ানত করা। ১৪. ওয়াদার বরখেলাপ করা। ১৫. মিথ্যা বলা। ১৬. কোরআন শরিফ শিক্ষা করে তা অবহেলাবশত নিয়মিত তিলাওয়াত না করে একেবারেই ভুলে যাওয়া। ১৭. আল্লাহতায়ালার কোনো ফরজ ইবাদত, যেমন নামাজ রোজা হজ জাকাত ইত্যাদি বিনা কারণে ছেড়ে দেওয়। ১৮. আল্লাহ ছাড়া অন্য কাউকে সিজদা করা। ১৯. কোনো মুসলমানকে কাফির, বেইমান, আল্লাহর নাফরমান, আল্লাহর দুশমন ইত্যাদি বলে গালি দেওয়া। ২০. চুরি করা। ২১. গীবত করা ও শোনা। ২২. বিনা কারণে খাদ্যশস্যের অতিরিক্ত দাম বাড়িয়ে দেওয়া। ২৩. কোনো বস্তুর দাম সাব্যস্ত হওয়ার পরও জোরপূর্বক তার মূল্য কম দেওয়া। ২৪. শরাব ও মাদকদ্রব্য সেবন করা। ২৫. জুয়া খেলা। ২৬. গায়রে মাহরাম নারী-পুরুষের নির্জনে অবস্থান করা। ২৭. আল্লাহ প্রদত্ত নেয়ামতের না শুকরি করা। ২৮. দুর্বলের ওপর সবলের জুলুম অত্যাচার করা। ২৯. দয়াময় আল্লাহতায়ালার রহমত থেকে নিরাশ হওয়া। ৩০. কারও প্রতি অহেতুক মন্দ ধারণা পোষণ করা। ৩১. অপরের দোষ অন্বেষণ করা। ৩২. অনুমতি ব্যতীত কারও ঘরে প্রবেশ করা। ৩৩. বিনা ওজরে জুমার নামাজ তরক করা। ৩৪. মিথ্যা কসম খাওয়া, আল্লাহ ছাড়া অন্য কারও নামে কসম খাওয়া। ৩৫. কাফের, অমুসলিমদের রীতিনীতি ও প্রথাকে পছন্দ করা। ৩৬. অশ্লীল নৃত্যগীতি বা গানবাজনা উপভোগ করা। ৩৭. সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও ন্যায় ও সত্যের পথে আহ্বান না করা এবং অন্যায়, অসত্যকে প্রতিরোধের চেষ্টা না করা। ৩৮. কোনো মুসলমানের ওপর জুলুম করা ও তাকে অপমান করা। ৩৯. কোনো পশুর সঙ্গে যৌনকর্মে লিপ্ত হওয়া। ৪০. শূকরের মাংস ভক্ষণ করা। ৪১. কোনো হারাম দ্রব্য ভক্ষণ করা। ৪২. আল্লাহর নাম ব্যতীত অন্য কারও নামে জবেহকৃত পশুপাখির গোশত ভক্ষণ করা। ৪৩. মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়া। ৪৪. জ্যোতিষীদের ভবিষ্যৎ বাণীকে বিশ্বাস করা। ৪৫. গর্ব ও অহংকার করা। ৪৬. ঋতুমতী অবস্থায় স্ত্রী সহবাস করা। ৪৭. জেনেশুনে সত্য ন্যায়ের উল্টো ফয়সালা দেওয়া বা বিচার করা। ৪৮. কোনো জালিম ও অত্যাচারীর প্রশংসা ও গুণগান করা। ৪৯. আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্ন করা। ৫০. ফরজ নামাজের ওয়াক্ত হওয়ার আগেই ইচ্ছাকৃতভাবে নামাজ আদায় করে নেওয়া। ৫১. মুসলমান মুসলমানে যুদ্ধে লিপ্ত হওয়া ইত্যাদি।  (ফতোওয়ায়ে আলমগিরি, আশ আতুললুমআত, ফাতহুল বারী শরহে বুখারি, দৈনন্দিন জীবনে ইসলাম পৃষ্ঠা নম্বর ১০৬)।

লেখক : ইমাম ও খতিব, কাওলারবাজার জামে মসজিদ, দক্ষিণখান, ঢাকা

সর্বশেষ খবর