বুধবার, ২৪ জানুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

সোনা চোরাচালান

গডফাদারদের চিহ্নিত করুন

বাংলাদেশ সোনা চোরাচালানের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে। বিদেশ থেকে টনকে টন সোনা চোরাচালান হয়ে আসছে বাংলাদেশে। এ সোনার এক বড় অংশ পাচার হয়ে যাচ্ছে প্রতিবেশী ভারতে। সোনা চোরাচালানিদের কারণে সীমান্তে বন্দুকযুদ্ধ নিয়মিত ঘটনায় পরিণত হয়েছে। দুই দেশের শান্তির সীমান্তে অশান্তি থাবা বিস্তার করছে। বিশেষ করে ঝিনাইদহ, যশোর, কুষ্টিয়া ও চুয়াডাঙ্গা সীমান্ত এলাকায় নিয়মিত বন্দুকযুদ্ধ ঘটছে। একই রেশে কয়েক দিন আগে ঝিনাইদহে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে দুজনকে। মাঝে মধ্যে সোনার চালান আটক হলেও রাঘববোয়ালরা রয়ে যাচ্ছে ধরাছোঁয়ার বাইরে। চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত কেবল বহনকারীই আইনের আওতায় আসেন। দ্রুত মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া ও চোরাচালানে জড়িত গডফাদারদের আইনের আওতায় আনতে না পারার জন্যই সোনা চোরাচালান বাড়ছে। দেশের সীমান্ত এলাকায় ২০১৯ সালে এক বছরে পাচারের সময় জব্দ করা হয়েছিল ৫৪ কেজি ২৩৪ গ্রাম সোনা। আর ২০২৩ সালে ধরা পড়েছে প্রায় দেড় শ কেজি। ধরাপড়া সোনার এ হিসাবই বলে দিচ্ছে, অবৈধ পথে চালান জব্দের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় তিন গুণ। তবে সংশ্লিষ্টরা নিশ্চিত করেছেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে বছরে সোনা পাচার হচ্ছে এর ২০ গুণ কিংবা আরও বেশি। সীমান্ত থেকে গত পাঁচ বছরে বিজিবির হাতে ধরা পড়েছে ৫২৭ কেজি সোনা। আর গত ১০ বছরে শুল্ক গোয়েন্দা, কাস্টম হাউস, বিজিবি, পুলিশ ও এয়ারপোর্ট এপিবিএন সারা দেশে অভিযান চালিয়ে ২ হাজার ৫৮৩ কেজি সোনা জব্দ করে। সোনা চোরাচালান দেশের অর্থনীতির জন্য সর্বনাশ ডেকে আনছে। নিরাপত্তার জন্যও হুমকি সৃষ্টি করছে। বিদেশ থেকে সোনা চোরাচালান হয়ে আসছে আকাশ পথে। বাংলাদেশ বিমানই সোনা চোরাচালানকারীদের নির্ভরযোগ্য বাহন। বিমানবন্দরের কড়া প্রহরা ডিঙিয়ে চোরাচালানকৃত সোনা ঢুকছে দেশের অভ্যন্তরে। কাস্টমসসহ বিমানবন্দরে নিয়োজিতদের অনেকে যে রাষ্ট্রের দেওয়া বেতনভাতা ভোগ করেও দেশ ও জাতির বদলে চোরাচালানকারীদের ক্রীতদাসের ভূমিকা পালন করছেন তা ওপেন সিক্রেট। সোনা চোরাচালান বন্ধে এ ক্রীতদাসদের চিহ্নিত করা ও গডফাদারদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর