বৃহস্পতিবার, ২৫ জানুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

জাতীয় সংসদ

আমজনতার প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত হোক

দেশের রাজনীতি ক্রমেই চলে যাচ্ছে কোটিপতিদের হাতে। জাতীয় সংসদে কোটিপতিদের বাইরে কারোর নির্বাচিত হওয়া প্রায় অসম্ভব হয়ে উঠেছে। একাদশ জাতীয় সংসদের তুলনায় দ্বাদশ জাতীয় সংসদে আরও বেড়েছে কোটিপতি সদস্যের সংখ্যা। নবনির্বাচিত সংসদ সদস্যের প্রায় ৯০ শতাংশই কোটিপতি। মঙ্গলবার ‘দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ীদের তথ্য উপস্থাপন ও সুজনের পর্যবেক্ষণ’ শীর্ষক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)। সদ্য শেষ হওয়া নির্বাচনে বিজয়ী সংসদ সদস্যদের হলফনামার তথ্য বিশ্লেষণ করে এসব পর্যবেক্ষণ তুলে ধরা হয়। সুজনের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী বর্তমান সংসদের ৬৭ শতাংশ সংসদ সদস্যই ব্যবসায়ী, ঋণগ্রস্ত সংসদ সদস্য ৪৫ শতাংশ। আগের চেয়ে সামান্য বেড়েছে উচ্চশিক্ষিত সংসদ সদস্যের সংখ্যা, মামলা আছে ২০ জনের বিরুদ্ধে, ৩০২ ধারার মামলা আছে তিনজনের বিরুদ্ধে। পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, নবনির্বাচিত ২৯৯ জন সংসদ সদস্যের মধ্যে ২৬৯ জনের বা ৮৯.৯৭ শতাংশ সংসদ সদস্যের সম্পদ কোটি টাকার ওপরে। আওয়ামী লীগ থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের মধ্যে এই হার শতকরা ৯৫.০৬ শতাংশ বা ২১২ জন। জাতীয় পার্টি থেকে নির্বাচিতদের মধ্যে এই হার শতকরা ৯০.৯১ শতাংশ বা ১০ জন। অন্যান্য রাজনৈতিক দলের মধ্যে ১০০ শতাংশ তিনজন এবং স্বতন্ত্র থেকে নির্বাচিতদের মধ্যে এই হার ৭০.৯৬ শতাংশ বা ৪৪ জন। নবনির্বাচিত চার সংসদ সদস্যের হলফনামা অপূর্ণাঙ্গ পাওয়া গেছে। এদের মধ্যে তিনজন আওয়ামী লীগের এবং একজন স্বতন্ত্র। সুজন সংসদ সদস্যদের সম্পদ নিয়ে যে পর্যবেক্ষণ পেশ করেছে তার ভিত্তি নির্বাচন প্রার্থীদের হলফনামা। কিন্তু সেই হলফনামায় কেউ কেউ সম্পদের যে মূল্য নির্ধারণ করেছেন তা শায়েস্তা খানের আমলকেও হার মানায়। বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে নজরকাড়া উন্নতি লাভ করেছে। তবে একই সঙ্গে ধনী-গরিবের বৈষম্যও বেড়েছে দৃষ্টিকটুভাবে। এই বৈষম্য কমাতে দেশের রাজনীতিতে আমজনতার আশা-আকাক্সক্ষায় প্রতিফলন ঘটা দরকার। রাজনৈতিক দলগুলো কোটিপতিদের পাশাপাশি মধ্যবিত্ত ও নিম্নমধ্যবিত্তদের মনোনয়ন দেওয়ার কথা ভাববেন আমরা এমনটিই দেখতে চাই।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর