শনিবার, ২৭ জানুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

খাদ্য উৎপাদন

সঠিক পথে এগোতে হবে

দেশের আমজনতার কাছে এখন সবচেয়ে বড় সমস্যা মূল্যস্ফীতি। নিত্যপণ্যের মূল্য বেড়ে যাওয়ায় প্রত্যক্ষভাবে ভুগছেন দেশের অন্তত ১৪ থেকে ১৫ কোটি মানুষ। সরকারেরও প্রধান মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে এ সমস্যা। বাংলাদেশে নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধিতে ইন্ধন জোগায় চালের দাম। চালের দাম বাড়লেই স্বাভাবিক নিয়মেই বেড়ে যায় অন্য সব নিত্যপণ্য। মূল্যস্ফীতিতে সৃষ্টি হয় অপ্রতিরোধ্য গতি। পর্যাপ্ত মজুদ থাকা সত্ত্বেও মূল্য নিয়ন্ত্রণে বিদেশ থেকে চাল আমদানি করা হচ্ছে। বিশ্বজুড়ে খাদ্যের দাম লাগামহীনভাবে বেড়ে গেলেও সরকার এ ব্যাপারে বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয়ে কার্পণ্য করছে না। একদিকে ভোজ্যতেল ও জ্বালানি তেলের দাম কয়েক গুণ বৃদ্ধি অন্যদিকে উচ্চ দামে চাল ও গম কিনতে গিয়ে সরকারকে দিশাহারা অবস্থায় পড়তে হচ্ছে। তারপরও সার্বিক পরিস্থিতিতে চালের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখার কৌশলকে সবচেয়ে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে। মূল্যস্ফীতির এই প্রধান কারণটি ঠেকাতে চাল আমদানিতে সব ধরনের শুল্ক প্রত্যাহারের কৌশলকে বিবেচনায় আনা হচ্ছে। সরকারের এ কৌশলকে অর্থাৎ চাল আমদানি করে দাম নিয়ন্ত্রণে রাখাকে বাস্তবতার আলোকে যৌক্তিক মনে হলেও এটিকে স্থায়ী সমাধান ভাবা ভুল হবে। বরং ভবিষ্যতের কথা মনে করে চালের উৎপাদন ব্যাপক হারে বাড়াতে হবে। চালের পাশাপাশি গম ও ভুট্টা চাষকে উৎসাহিত করা দরকার। উৎপাদন খরচ কমাতে কৃষিতে পুরোপুরিভাবে যান্ত্রিকীকরণের উদ্যোগ নিতে হবে। কৃষিতে ভর্তুকি বাড়াতে হবে যাতে কৃষকরা খাদ্য উৎপাদনে উৎসাহী হন। হাজার হাজার কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় করার চেয়ে কৃষিবান্ধব নীতি গ্রহণ করা অনেক বেশি লাভজনক। আমাদের বিশ্বাস সরকার খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধিকে তাদের অগ্রাধিকার কর্মসূচি হিসেবে নেবে। উৎপাদনের সুফল যাতে কৃষকরা ভোগ করে পারেন এমন কৌশলও উদ্ভাবন করা জরুরি। দারিদ্র্যবিমোচনে সস্তা দরে খাদ্য বিক্রি নয়; সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বাড়াতে হবে। খাদ্য ঘাটতি মোকাবিলায় প্রতি ইঞ্চি জমির সদ্ব্যবহারের উপদেশ দিয়ে বসে থাকলে চলবে না, ফসলের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করাও জরুরি। সেটি হলে খাদ্য উৎপাদন অবশ্যই বাড়বে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর