বুধবার, ৩১ জানুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

তৈরি পোশাক খাত

সম্পর্কোন্নয়ন ও বাজার খুঁজতে হবে

দেশের তৈরি পোশাক শিল্পের জয়যাত্রা হঠাৎ করে থমকে গেছে। তৈরি পোশাকের প্রধান দুই বাজারে রপ্তানি কমাকে অশনিসংকেত হিসেবে দেখছেন এ খাতের উদ্যোক্তারা। দেশের মোট রপ্তানি আয়ের ৮৪ শতাংশের জোগান দেয় তৈরি পোশাক খাত। অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক কারণে রপ্তানি কমেছে তৈরি পোশাকের একক বাজার যুক্তরাষ্ট্রে। কমেছে ইউরোপের বাজারেও। প্রতিকূল অবস্থায় অনেক কারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বেকার হচ্ছে বহু শ্রমিক। বাংলাদেশ থেকে পোশাক নেওয়ার অর্ডার কমলেও অর্ডার বেড়েছে ভারত ও পাকিস্তানের। ২০২২ সালের মাঝামাঝি শুরু হওয়া ডলার সংকট, জ্বালানি তেল ও গ্যাসের দাম বৃদ্ধির প্রভাব পড়েছে দেশের তৈরি পোশাক খাতে। দাম বাড়ানোর পরও গ্যাস পাচ্ছেন না শিল্প-মালিকরা। ফলশ্রুতিতে বেড়েছে উৎপাদন খরচ। ইউরোপীয় শ্রম নিয়ন্ত্রণ রেগুলেশন ও মার্কিন শ্রমনীতি পোশাক কারখানার মালিকদের জন্য অতিরিক্ত চাপ তৈরি করেছে। পাশাপাশি পশ্চিমা দেশের খুচরা বিক্রেতা ও ব্র্যান্ডগুলোর দোকানে পোশাক মজুত থাকায় এবং ক্রেতারা উচ্চ মূল্যস্ফীতিতে ভোগায় পোশাক রপ্তানি কমে গেছে। গ্যাস সংকটের কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে টেক্সটাইল মিলগুলো। দাম বাড়ানোর সময় সরকারের তরফে নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সংযোগ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। ট্যারিফ বৃদ্ধির আগে এবং পরে গ্যাস সরবরাহের অবস্থা শোচনীয়ই রয়ে গেছে। বাড়তি দাম দিয়েও গ্যাস পাচ্ছেন না শিল্প-মালিকরা। পোশাক শিল্পের জন্য ক্রেতাদের অর্ডার কমার অন্যতম প্রধান কারণ রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা নিয়ে অনিশ্চয়তা। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সরকার ও বিরোধী দলের বিপরীত পথে হাঁটার প্রবণতায় সংঘাত দানা বেঁধে ওঠার আশঙ্কা দেখা দেয়। একতরফাভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠানে সরকার সফল হলেও ইতোমধ্যে ঘটে যাওয়া ক্ষতি এড়ানো সম্ভব হয়নি। তৈরি পোশাক খাতকে এগিয়ে নিতে নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করার পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নেও নজর দিতে হবে। তৈরি পোশাকের নতুন বাজার অন্বেষণও জরুরি।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর