সোমবার, ৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

টাঙ্গাইল শাড়ি

পশ্চিমবঙ্গের জিআই বাতিল হোক

টাঙ্গাইলের শাড়ি বাংলাদেশের ঐতিহ্যের অংশ। বাংলাদেশের নারীদের অঙ্গভূষণে টাঙ্গাইলের শাড়ির আধিপত্য অন্তত আড়াই শ বছরের। বাংলাদেশের গান ও শিল্প-সংস্কৃতির অনুষঙ্গ হয়ে উঠেছে এই শাড়ি। এ শাড়ির কদর রয়েছে বাংলাদেশের বাইরের বাংলাভাষীদের কাছেও। বাংলাদেশ থেকে যারা ভারতে বেড়াতে যান তারা ভারতীয় স্বজনদের জন্য উপহার নেওয়ার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দেন টাঙ্গাইলের শাড়িকে। ভারতে টাঙ্গাইল শাড়ি আর বাংলাদেশের পরিচিতি বহুক্ষেত্রে অভিন্ন বলে বিবেচিত। বৈচিত্র্যময় নকশার কারণে টাঙ্গাইল শাড়ির প্রতি বাঙালি নারীর আলাদা টানের বিষয়টি সবারই জানা। বাংলাদেশের ঐতিহ্যের অনুষঙ্গ টাঙ্গাইল শাড়ির উৎপত্তি ভারতের পশ্চিমবঙ্গে এমন এক অদ্ভুত দাবি করেছে ভারতের সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়। এতে বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের মধ্যে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বিস্ময় প্রকাশ করে প্রশ্ন করেছেন, টাঙ্গাইল শাড়ি পশ্চিমবঙ্গের কীভাবে! এ ঘটনায় ক্ষোভ ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন টাঙ্গাইলের তাঁত মালিক, শ্রমিক, ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন। তারা বাংলাদেশের টাঙ্গাইল শাড়ির জিআই স্বীকৃতি পাওয়ার জন্য সরকারসহ সংশ্লিষ্টদের দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের জোর দাবি জানিয়েছেন। চলতি বছরের জানুয়ারির ২ তারিখে টাঙ্গাইল শাড়িকে পশ্চিমবঙ্গের ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য (জিআই) হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন পেটেন্ট, ডিজাইন অ্যান্ড ট্রেড মার্কস বিভাগের পক্ষ থেকে জানানো হয় এ সিদ্ধান্ত। দেশটির জিওগ্রাফিক্যাল ইন্ডিকেশন রেজিস্ট্রির তথ্য বলছে, পশ্চিমবঙ্গ সরকারের হস্তশিল্প বিভাগ এজন্য ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে আবেদন করেছিল। টাঙ্গাইলের বিস্তীর্ণ এলাকায় তৈরি হয় টাঙ্গাইল শাড়ি। এ শাড়ির সঙ্গে তাঁতশিল্পের মালিক ও কারিগরসহ ৩ লাখ মানুষ জড়িত। টাঙ্গাইল বাংলাদেশের একটি জেলা। দুই-আড়াই শ বছর ধরে এই জেলা বহন করছে তার নামাঙ্কিত টাঙ্গাইল শাড়ির সুনাম। আমরা আশা করব বাংলাদেশের মানুষের আবেগের প্রতি সম্মান দিয়ে ভারত সরকার টাঙ্গাইল শাড়ির বিষয়ে তাদের দেওয়া জিআই বাতিলের উদ্যোগ নেবে।

সর্বশেষ খবর