মঙ্গলবার, ৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

ব্যাংকিং খাতে সুশাসন

ঋণখেলাপি রোধের প্রকৃষ্ট উপায়

ব্যাংকিং খাতে সুশাসন ফিরিয়ে আনা এবং খেলাপি ঋণ উদ্ধারে দুই বছরের রোডম্যাপ গ্রহণ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ২০২৬ সালের ৩০ জুনের মধ্যে রাষ্ট্র মালিকানাধীন ব্যাংকের খেলাপি ঋণ ১০ শতাংশ এবং বেসরকারি ব্যাংকের খেলাপি ৫ শতাংশের নিচে নিয়ে আসা এই রোডম্যাপের উদ্দেশ্য। ব্যাংক খাতে সুশাসন নিশ্চিত করার মাধ্যমে জালিয়াতি-প্রতারণার মাধ্যমে ঋণ বিতরণের পরিমাণ শূন্যে নামাতে চাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এখন থেকে নিয়মিত ঋণ পরিশোধ না করলে তাকে ইচ্ছাকৃত খেলাপি হিসেবে চিহ্নিত করা হবে। এসব ঋণখেলাপি নতুন করে জমি, বাড়ি ও গাড়ি কিনতে পারবেন না। নতুন ব্যবসাও খুলতে পারবেন না। কোনো ঋণ একনাগাড়ে দুই বছর মন্দমানে থাকলে সেই ঋণের বিপরীতে ১০০ ভাগ প্রভিশন রাখা সাপেক্ষে অবলোপন করা হবে। এতে মোট খেলাপি ঋণের ২ দশমিক ৭৬ বা ৪৩ হাজার ৩০০ কোটি টাকা কমবে। এজন্য ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের তত্ত্ব¡াবধানে অবলোপনকৃত ঋণ আদায় ইউনিট গঠন করা হবে। মন্দ ঋণ এবং অবলোপনকৃত ঋণ আদায়ে বেসরকারি উদ্যোগে সম্পদ ব্যবস্থাপনা কোম্পানি গঠন করা হবে। সম্পদ ব্যবস্থাপনা কোম্পানির মাধ্যমে আদায়কৃত অর্থ ব্যাংকের আয় খাতে যুক্ত হবে। অবলোপনকৃত সম্পদের বিপরীতে সুদ আদায় না করে আয় খাতে স্থানান্তর করা যাবে না। খেলাপি ঋণের সঙ্গে ব্যাংকিং খাতের সুশাসন না থাকার বিষয়টি জড়িত। ব্যাংক থেকে অসৎ পরিচালক এবং কর্মকর্তাদের যোগসাজশে আত্মসাতের জন্য ঋণ নেয় মতলববাজরা। প্রাপ্ত ঋণের একাংশ যায় ব্যাংক পরিচালক ও কর্মকর্তাদের পকেটে। ব্যাংকে সাধারণ মানুষের অর্থ জমা থাকে। সে অর্থ থেকে ব্যাংক ঋণ দেয়। ঋণখেলাপিরা কার্যত কোনো ব্যাংক নয়, দেশবাসীর অর্থ লুট করছে। দেশের অর্থনীতির সর্বনাশ ডেকে আনছে। ঋণখেলাপি রোধের প্রকৃষ্ট উপায় ব্যাংকে সুশাসন প্রতিষ্ঠা। এ ব্যাপারে ব্যর্থ হলে ঋণখেলাপিদের উৎসাহ জোগানো হবে। যা কাম্য হওয়া উচিত নয়।

সর্বশেষ খবর