শিরোনাম
বুধবার, ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

পারিবারিক বন্ধন

কোনো একজন বাঙালি লেখক লিখেছিলেন, ‘ভাগ্যবানেরা শৈশবে জাপানে, যৌবনে আমেরিকায় এবং বার্ধক্যে বাংলাদেশে অতিবাহিত করে’। কথাটার অর্থ হলো এই যে বার্ধক্য নিজদেশে যেরূপ সম্মান পাওয়া যায়, পৃথিবীর অন্য কোথাও তা কল্পনাতীত। বিজ্ঞ ব্যক্তিরা বলেন, সন্তানেরা পিতা-মাতার ঋণ কোনোদিনও পরিশোধ করতে পারে না। সেজন্যে বৃদ্ধপিতা-মাতার প্রতি সন্তানের একটা ধর্মীয় কর্তব্য থাকে, যা পালন করলে জাগতিক জীবন সার্থক হয়। বাংলাদেশিরা এতদিন থেকে এই ধারণাই মনে পোষণ করত। কিন্তু সময়ের আহ্বানে ভোগবাদী ব্যক্তিকেন্দ্রিক মানসিকতা বাংলাদেশিদের জীবনশৈলী এবং কর্তব্যবোধের ধারণায় পরিবর্তন নিয়ে এলো। এই ব্যক্তিকেন্দ্রিকতা আত্মিক বন্ধনের পথে অন্তরায় হয়ে দাঁড়াল। মানব জীবনের অন্তিম পর্যায়ে ‘বার্ধক্যে’-এর বেদনা এবং বিড়ম্বনা হচ্ছে জীবনচক্রের সবচেয়ে দুঃখজনক পর্যায়। যৌবনের অফুরন্ত শক্তির তথা ক্লান্তি হারিয়ে মানুষ তা উপলব্ধি করে। গোধূলি বেলায় সূর্যের আলো থাকলেও তীব্রতা থাকে না। সূর্যকে আমরা দেখতে পেলেও সেই সূর্যের আলোয় মধ্যহ্নের উত্তাপ থাকে না। তেমনি বার্ধক্য-পীড়িত জীবনেও জীবনের অস্তিত্ব হারিয়ে যায়। পুত্র-কন্যা, স্বামী-স্ত্রী এভাবেই পরস্পর পরস্পরের আপন।  পিতা-মাতার কাছে সন্তান নয়নের মণি। কিন্তু কতদিন পর্যন্ত এই হৃদয়ের বন্ধন অটুট থাকে? যখনই পিতা-মাতা অবধারিত বার্ধক্যকে বরণ করে সংসারে ক্রমশ অক্ষম হয়ে পড়েন, তখনই সন্তানের কাছে তাঁরা হয়ে পড়েন বোঝাস্বরূপ। যা কোনোভাবেই কাক্সিক্ষত নয়।  

আফতাব চৌধুরী

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর