বুধবার, ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

সরকারি হাসপাতাল

অব্যবস্থাপনার অবসান হোক

চিকিৎসা দেশবাসীর একটি মৌলিক অধিকার। আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামীরা অন্ন বস্ত্র শিক্ষা ও চিকিৎসার মতো মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় সংগ্রাম করেছেন নিরলসভাবে। দেশের সংবিধানেও স্বাস্থ্য খাতকে সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি সরকার এ বিষয়ে এগিয়ে থাকার চেষ্টা করেছে। কিন্তু তারপরও দেশের চিকিৎসা খাত ও সরকারি হাসপাতালগুলোতে কী অব্যবস্থা চলছে তা স্পষ্ট হয়েছে এক গবেষণায়। মিটফোর্ড হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল কাজী রাশিদউন নবীসহ ১৩ জন চিকিৎসক ওই গবেষণা পরিচালনা করেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রশ্নপত্রের ভিত্তিতে পরিচালিত স্বাস্থ্য অধিদফতরের বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা ৬৯.৩৪ শতাংশ রোগীকে ওষুধ কিনে খেতে হয়। যদিও তাদের বিনামূল্যে ওষুধ পাওয়ার কথা ছিল। ১৮ শতাংশ রোগীকে সরকারি হাসপাতালের সেবা পাওয়ার জন্য টাকা দিতে হয়। হাসপাতালে ব্যক্তিগত নিরাপত্তা নিয়ে অসন্তুষ্ট ৭৮.৪৩ শতাংশ রোগী। জনস্বাস্থ্য পুষ্টি প্রতিষ্ঠানের পরিচালক অধ্যাপক ডা. শাহ গোলাম নবীর নেতৃত্বে পরিচালিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, জন্মের পরপরই মায়ের দুধ থেকে বঞ্চিত হয় দেশের ১৩.৭ শতাংশ শিশু। জন্মের প্রথম ছয় মাস মায়ের দুধ থেকে বঞ্চিত হয় ৬ শতাংশ শিশু। জন্মের প্রথম দুই বছর মায়ের দুধ পায় না ৭.৭ শতাংশ শিশু। এ ছাড়া ছয় মাস বয়সের পরেও মায়ের দুধের পাশাপাশি ৮.২ শতাংশ শিশু বাড়তি খাবার পায় না। দেশের হাসপাতালগুলোয় সংক্রমণ রোধ ও নিয়ন্ত্রণের (আইপিসি) অবস্থা বিষয়ক আরেক গবেষণায় বলা হয়, বেশির ভাগ হাসপাতালে আইপিসি কমিটি থাকলেও অধিকাংশ কমিটি কার্যকর নয়। অধিকাংশ হাসপাতালেই নেই আইপিসির জন্য নির্দিষ্ট জনবল। সরকারি ৬০ শতাংশ হাসপাতালে আইপিসি ব্যবস্থাপনা নেই। গবেষেণায় দেখা গেছে, অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারের গাইডলাইন থাকলেও হাসপাতালগুলোয় তা মানা হয় না। হাসপাতালগুলোতে হ্যান্ড হাইজেনিং স্টেশন বা হাত ধোয়ার কার্যকর ব্যবস্থা নেই। গবেষণায় সরকারি হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য খাতের যে অব্যবস্থা তুলে ধরা হয়েছে তা নিরসনে যথাযথ উদ্যোগ নেওয়া হবে এমনটিই প্রত্যাশিত।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর