নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ওষুধের দাম। চাল, ডাল, চিনি, ডিম এমন কোনো নিত্যপণ্য নেই দাম বাড়েনি। শীত মৌসুমকে বলা হয় সবজির মৌসুম। অথচ এ সময়ে সবজির দাম আকাশছোঁয়া। পিঁয়াজের দাম গত বছরের চেয়ে ৪০০ শতাংশ বেশি, আলুর দাম অন্তত দ্বিগুণ। মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা হয়ে বেড়েছে ওষুধের দাম। আর এতে বিশেষত বয়স্ক মানুষের প্রাণ ওষ্ঠাগত হয়ে উঠেছে- যাদের সারা বছর ধরে ওষুধ সেবন করতে হয়। ওষুধ কিনতে গিয়ে দিশাহারা হয়ে পড়ছে স্বল্প আয়ের মানুষ। ওষুধের দাম বাড়িয়েও সন্তুষ্ট নয় ওষুধ কোম্পানিগুলো। আরও বড় অঙ্কে দাম বাড়ানোর পরিকল্পনা চলছে। ডলার এবং আন্তর্জাতিক বাজারে কাঁচামালের দাম বৃদ্ধিকে ওষুধের দাম বাড়ানোর কারণ হিসেবে দায়ী করছে ওষুধ শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো। ঔষধ প্রশাসন অধিদফতরের তথ্যানুযায়ী, দেশের ওষুধের বাজারে প্রায় ১ হাজার ৬৫০টি জেনেরিকের ২৫ থেকে ৩০ হাজার প্রোডাক্ট চালু আছে। এর মধ্যে ১১৭টি জেনেরিকের ৪৬০টি ওষুধের দাম ঔষধ প্রশাসন নির্ধারণ করে। অন্যগুলো কোম্পানি খরচ হিসাব করে একটি দাম প্রস্তাব করে। ঔষধ প্রশাসন অধিদফতর ভ্যাট সংযোজন করে দাম সমন্বয় করে দেয়। ওষুধ শিল্প সমিতি দাম বাড়ানোর আবেদন করলে ঔষধ প্রশাসন অধিদফতর ভোক্তা এবং প্রতিষ্ঠান সবার স্বার্থ বিবেচনা করে নিয়মানুযায়ী যৌক্তিক দাম নির্ধারণ করবে। দেশে জীবন রক্ষাকারী বিভিন্ন ওষুধের দাম দফায় দফায় বাড়ছে। বিশেষ করে অসংক্রামক রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত ওষুধের দাম বেশি বেড়েছে। কারণ, এসব ওষুধ রোগীদের নিয়মিত সেবন করতে হয়। গত দুই বছরে একের পর এক যুক্তি তুলে ওষুধের দাম বাড়ানো হয়েছে। নতুন করে ডলারের মূল্যবৃদ্ধিকে কারণ দেখিয়ে দাম বাড়ানোর যে পাঁয়তারা চলছে তা এক মানবতাবর্জিত চর্চা। ওষুধ কোম্পানিগুলো ওষুধের বাজারজাতকরণের ক্ষেত্রে বিশাল অংশ ব্যয় করে চিকিৎসকদের উপহার নামের উৎকোচ দেওয়ার ক্ষেত্রে। যেটি না থাকলে দাম বাড়ানো দূরের কথা ওষুধের দাম বর্তমানের চেয়ে কমিয়ে আনা সম্ভব হবে। দাম বাড়ানোর প্রস্তাবে সম্মতি দেওয়ার আগে উৎকোচ রোগ বন্ধের ওষুধ খোঁজা উচিত।