রবিবার, ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

বিদেশি বিনিয়োগ

লাল ফিতা ও অপরাজনীতি প্রধান বাধা

বিদেশি বিনিয়োগ অর্থনৈতিক দিক থেকে যে কোনো জাতির এগিয়ে যাওয়ার অন্যতম উপায়। এটি এ সময়ের সবচেয়ে দুর্দান্ত অর্থনৈতিক শক্তি চীনের জন্য যেমন সত্য, তেমন বাংলাদেশ, লাওস, কম্বোডিয়ার মতো দেশগুলোর জন্যও সত্য। মাত্র তিন দশক আগেও চীন ছিল পেছনের কাতারের অর্থনৈতিক শক্তি। চীনের সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতি ছিল বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল ওই দেশটির এগিয়ে যাওয়ার পথে প্রধান বাধা। মাও সে তুং যুগের অবসানের পর চীন প্রবেশ করে বাজার অর্থনীতির যুগে। সমাজতান্ত্রিক রাজনৈতিক কাঠামো অটুট রেখে অর্থনীতির ক্ষেত্রে ‘জয়তু পুঁজিবাদ’ বলার নতুন সংস্কৃতি তারা চালু করে। যার বদৌলতে চীন বিদেশি বিনিয়োগের প্রধান ঘাঁটিতে পরিণত হয়। পাল্টে যায় দেশটির অর্থনীতি। গণচীন এ মুহূর্তে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনৈতিক শক্তি। তার লক্ষ্য প্রথম স্থানের দিকে। বলা হয়, যে দেশে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ হয়, সে দেশে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ শক্তিশালী হতে বাধ্য। এ তালিকার শীর্ষে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, চীন, ভারত ও জাপানের মতো বৃহৎ অর্থনীতির দেশ। বাংলাদেশে করোনা মহামারি-পরবর্তী শুরু হওয়া ডলার সংকট এখনো চলছে। এর অন্যতম কারণ কাক্সিক্ষত হারে বিদেশি বিনিয়োগ না আসা। রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা, অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতা, আমলাতান্ত্রিক দীর্ঘসূত্রতা এবং গ্যাস ও বিদ্যুতের সংকটের কারণে বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে মালদ্বীপ ও শ্রীলঙ্কাও এগিয়ে রয়েছে বাংলাদেশের তুলনায়। সর্বশেষ চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথমার্ধেই দেশে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ কমেছে ৪০ শতাংশ। দেশি বিনিয়োগের পালেও মিলছে না হাওয়া। ইউএনসিটিএডির ওয়ার্ল্ড ইনভেস্টমেন্ট রিপোর্ট ২০২৩-এর তথ্যমতে, দক্ষিণ এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি হওয়া সত্ত্বেও মোট দেশজ উৎপাদনের শতাংশ হিসেবে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগের দিক থেকে এ অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ চতুর্থ। বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে দেশে বিপুলসংখ্যক অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলা হলেও লাল ফিতার দৌরাত্ম্য ও উৎপাদনবিরোধী অপরাজনীতির কারণে এর সুফল অর্জিত হচ্ছে না। বৃহত্তর জাতীয় স্বার্থেই এ দুই সমস্যার নিরসনে উদ্যোগী হতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর