শিরোনাম
সোমবার, ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

পুতুল নাচের ইতিকথা

পাকি সেনাপতিদের হাতে ক্ষমতার লাটাই

পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচনে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দল পিটিআইকে অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়া হয়নি। একের পর এক উদ্ভট মামলায় সাজা দিয়ে তাকে আটকে রাখা হয়েছে জেলে। তারপরও সে দেশের সাধারণ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী পিটিআই সদস্যরা জয়ী হয়েছেন এ পর্যন্ত ঘোষিত ২৬৬টি আসনের মধ্যে ১০১টিতে। পিটিআইয়ের দাবি, তাদের প্রার্থীরা ১৭০টি আসনে জয়ী হয়েছেন। ফলাফল নজিরবিহীন বিলম্বে প্রকাশ করে ৬৯টি আসনের জয় কেড়ে নেওয়া হয়েছে। নির্বাচনে সেনাবাহিনীর আশীর্বাদপুষ্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের পিএমএল-এন দল পেয়েছে ৭৫ আসন, বিলাওয়াল ভুট্টোর পিপিপি পেয়েছে ৫৪ আসন এবং এমকিউএম-১৭ ও বাকি ছোট দলগুলো মিলে পেয়েছে ১৭ আসন। ইমরান খানের ক্ষমতায় আসা ঠেকাতে সেনাবাহিনী ও বিরোধীপক্ষ এক জোট হয়েছে। এতে তৈরি হয়েছে জটিল সমীকরণ। পাকিস্তানের এক বড় সময় কেটেছে সামরিক শাসনের আওতায়। বিদেশি হামলার কবল থেকে দেশ রক্ষার জন্য সেনাবাহিনী পোষা হলেও পাকিস্তানে তাদের ভাবা হয় দেশ ধ্বংসের কারিগর হিসেবে। এই খাকি ও চক্রবক্র ভূতদের শাসনামলে তৎকালীন পাকিস্তানের সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। দেশটির বেলুচ জাতিগোষ্ঠী ৭৭ বছর ধরে মুক্তিসংগ্রামে লিপ্ত। পাকিস্তানে দেশ পরিচালনার নামে চলে পুতুল নাচের খেলা। সামনে কখনো কখনো নির্বাচিত সরকার থাকলেও পেছনে থাকেন সেনাপতিরা। ইমরান খান তাদের হুকুমদাসের ভূমিকা পালন করতে না চাওয়ায় ক্ষমতাচ্যুত হন। কিন্তু তারপরও পাকিস্তানি জনগণ ইমরান সমর্থকদের ভোট দিয়েছে। সেনাপতিরা ক্ষমতার ওপর নিজেদের নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখতে মুসলিম লীগ ও পিপলস পার্টিকে জোট গঠনে মদদ জোগাচ্ছেন। জনসমর্থিত নির্বাচিত সরকারের বদলে সেনাবাহিনীর হুকুমদাসদের নিয়ে সরকার গঠিত হলে অর্থনৈতিক দিক থেকে দেউলিয়া হয়ে পড়া পাকিস্তান অস্তিত্বের সংকটে পড়বে এমন আশঙ্কা সে দেশেই উচ্চারিত হচ্ছে। সার্কভুক্ত এ দেশটিতে তেমনটি হলে তা হবে সে দেশের জনগণের জন্য দুর্ভাগ্যজনক।

সর্বশেষ খবর