শিরোনাম
সোমবার, ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

লক্কড়ঝক্কড় বাস

এ লজ্জার অবসান হওয়া উচিত

রাজধানী ঢাকা এখন বিশ্বের শীর্ষ বায়ুদূষণ নগরীগুলোর একটি। ঢাকার এই দুর্ভোগের পেছনে ইন্ধন জোগাচ্ছে লক্কড়ঝক্কড় মার্কা বাস। একসময় সিএনজি গ্যাসে চলত এসব বাস। ডিজেলের দাম বৃদ্ধির পর ভাড়া বাড়াতে বাসগুলো রাতারাতি ডিজেলচালিত যানবাহনে রূপান্তরিত হয়। ফিটনেসহীন এসব বাস কালো ধোঁয়ায় রাস্তা অন্ধকার করলেও তা দেখার কেউ নেই। রাজধানীতে অবাধে চলছে ভাঙাচোরা, লক্কড়ঝক্কড় বাসের দৌরাত্ম্য। কোনোটির রং চটা, কোনোটির ছাল ওঠা। কোনোটির জানালার গ্লাস ভাঙা, লাইটও নেই, কোনোটির আবার নেই দরজা। কিছু বাসের আসনগুলোর অবস্থা করুণ। বাসের ভাঙা সিটে অনেক সময় যাত্রীদের জামাকাপড় ছিঁড়ে গিয়ে লজ্জাকর পরিস্থিতিতে পড়তে হয়। অনেক বাসের ভিতরে প্রস্রাবের দুর্গন্ধ পাওয়া যায়, সিটে বাসা বেঁধেছে ছারপোকা। ফিটনেসবিহীন ও ঝুঁকিপূর্ণ এসব যানবাহনে চলাচল যেমন বিপজ্জনক তেমনি নগরীর সৌন্দর্যহানিও ঘটছে। বিশৃঙ্খলভাবে চলাচল বাস চালকদের অভ্যাস হওয়ায় সৃষ্টি হচ্ছে যানজট। সরকারের নীতিমালা না থাকায় সুযোগ নিচ্ছেন বাস মালিকরা। দুই দশক আগেও রাজধানী ঢাকায় রুট অনুযায়ী গণপরিবহনের জন্য সুনির্দিষ্ট রং নির্ধারণ করত বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ। কোনো বাসের রং উঠে গেলে সেটি চলাচলের অনুপযোগী হিসেবে বিবেচনা হতো। বর্তমানে রাজধানীর ২৯১টি রুটে চলাচলকারী ৪০ হাজার বাসের অধিকাংশই রংচটা অবস্থায় চলছে। বাংলাদেশ একসময় ছিল বিশ্বের শীর্ষ দারিদ্র্যপীড়িত দেশ। কালের বিবর্তনে সে লজ্জা কাটিয়ে দেশ মধ্যআয়ের কাতারে উঠেছে। কিন্তু রাজধানীর গণপরিবহনের ক্ষেত্রে লক্কড়ঝক্কড়ের লজ্জা দিন দিন বাড়ছে। এসব দেখার দায়িত্ব যাদের তারা বাস মালিকদের একান্ত অনুগতের ভূমিকা পালন করেন মাসোহারার মোহে। যার খেসারত দিতে হচ্ছে সাধারণ যাত্রীদের। রাজধানীর বেশির ভাগ বাসে চলাচল করা সুস্থ এবং সভ্য মানুষের জন্য কঠিন হয়ে পড়ছে। এ লজ্জার অবসান হওয়া উচিত।

সর্বশেষ খবর