মঙ্গলবার, ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

অবৈধ হাসপাতাল

স্বাস্থ্য অধিদফতরের দেউলিয়ার চালচিত্র

দেশে লাইসেন্সবিহীন হাসপাতাল, ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও ব্লাডব্যাংক পরিচালিত হচ্ছে কর্তৃপক্ষের নাকের ডগায় বছরের পর বছর। সংবাদমাধ্যমে এ ব্যাপারে একের পর এক প্রতিবেদন বের হলেও অজ্ঞাত কারণে স্বাস্থ্য অধিদফতরের বোধোদয় হয়নি। তবে উচ্চ আদালতের নির্দেশে কুম্ভকর্ণের মহানিদ্রা ভেঙেছে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের পক্ষ থেকে হাই কোর্টে পাঠানো এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে- সারা দেশে লাইসেন্সবিহীন বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও ব্লাডব্যাংকের সংখ্যা ১ হাজার ২৭। আর লাইসেন্সধারী বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও ব্লাডব্যাংকের সংখ্যা ১৫ হাজার ২৩৩। রাজধানীর বাড্ডার সাঁতারকুলের ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে খতনার পর পাঁচ বছর বয়সী শিশু আয়ানের মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে করা এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ১৫ জানুয়ারি বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আতাবুল্লাহর সমন্বয়ে গঠিত হাই কোর্ট বেঞ্চ রুলসহ যে আদেশ দেন তাতে শিশু আয়ানের মৃত্যুর কারণ অনুসন্ধান করে সাত দিনের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দিতে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালককে (স্বাস্থ্যসেবা) নির্দেশ দেওয়া হয়। একই সঙ্গে সারা দেশে লাইসেন্স ও অনুমোদনহীন কতগুলো হাসপাতাল রয়েছে তার তালিকা এক মাসের মধ্যে আদালতে দাখিল করতে বলা হয়। দেশে হাসপাতাল ক্লিনিকসহ সংশ্লিষ্ট অবৈধ প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা সহস্রাধিক এবং এ বিষয়ে রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে দেখভালে কর্মকর্তা-কর্মচারী পোষা হয় তা ভাবতেও অবাক লাগে। কোনো সভ্য দেশে লাইসেন্স ছাড়াই হাসপাতাল ও ক্লিনিক স্থাপন করা যায়, ডায়াগনস্টিক সেন্টারের রমরমা ব্যবসা চলে এবং ব্লাডব্যাংক পরিচালনা করা যায় এটি ভাবতেও কষ্ট লাগে। নিজেদের সভ্য দেশ বলে দাবি করলেও এবং আমাদের সংবিধানে নাগরিকদের স্বাস্থ্য তথা চিকিৎসার বিষয়টি অগ্রাধিকার দেওয়া হলেও তা শুধু কথার কথায় পরিণত করেছে প্রজাতন্ত্রের একশ্রেণির দুর্নীতিবাজ কর্মচারী। এ বিষয়ে শেষ পর্যন্ত উচ্চ আদালতকেই এগিয়ে আসতে হয়েছে এবং এর মধ্য দিয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের দেউলিয়া অবস্থাও স্পষ্ট হয়ে পড়েছে, যা দেশবাসী দেখতে চায় না।

সর্বশেষ খবর