মঙ্গলবার, ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

নারী শিশু পাচার

পাচারকারীদের রুখতে হবে

বাংলাদেশ মানব পাচারের উর্বর ক্ষেত্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে দীর্ঘকাল ধরে। সীমান্ত দিয়ে অবাধেই পাচার হচ্ছে নারী ও শিশু। পাচারকারীদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য, রাজনৈতিক দলের অসৎ নেতা-কর্মী এবং জনপ্রতিনিধি নামধারীদের যোগসাজশ থাকায় তারা বেপরোয়া হয়ে উঠছে। ব্র্যাকের অভিবাসন কর্মসূচি তথ্যানুযায়ী, ২০০৮ থেকে ২০২১ সালের মার্চ পর্যন্ত পাচারের ঘটনায় দেশে ও দেশের বাইরে ৬ হাজার ৭৩৫টি মামলা হয়েছে। মামলাগুলোয় ভুক্তভোগীর সংখ্যা ১২ হাজার ৩২৪। গত ১২ বছরে ভারতে পাচার হওয়া ২ হাজার ৫০ জনকে যথাযথ আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। সীমান্তবর্তী জেলা যশোরের বেনাপোল, পুতখালী, সাদিপুর, শিকারপুর, ভীবা, সাতক্ষীরার কৈজারী-বৈকারী, ভোমরা, কলারোয়ার কাকডাঙ্গা, ঝিনাইদহের মহেশপুর-যাদবপুর দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে নারী-শিশু পাচার করে আসছে পাচারকারীরা। সারা দেশে তাদের ৫ শতাধিক সদস্য সক্রিয়। ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলায় অবৈধভাবে সীমান্ত পার হতে সহায়তা করে একটি চক্র। স্থানীয়ভাবে যাদের ‘ধুর’ বলা হয়। পাচারকারীরা মাতিলা গ্রামকে মানব পাচারের কেন্দ্রে পরিণত করেছে। তারা রাজকোল, পুলিয়া, রাউংঘাট ও ভোভোদাশপুরের মতো সীমান্ত ব্যবহার করে মানব পাচার করছে। বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রতিবেদনে সীমান্তে পাচারকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালানোর সময় বিজিবি সদস্যদের বাধার মুখে পড়ার একটি তথ্য চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। বিজিবি সদস্যদের ভাষ্য, সীমান্তের ৮ কিলোমিটার পর্যন্ত এলাকায় অভিযান চালাতে বিজিবিকে আগে থেকে অবহিত করতে হয়। পুলিশ ও বিজিবির সমন্বয়ের অভাবে সুযোগ পেয়ে যায় পাচারকারীরা। মানব পাচার বিশেষত শিশু ও নারী পাচার বন্ধে পুলিশ, র‌্যাব ও বিজিবির মধ্যে সমন্বয় থাকতে হবে। তবে তার আগে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে পাচার চক্রের যোগসাজশের বিরুদ্ধেও কঠোর হওয়ার দরকার। কারণ পাচারকারীদের বিরুদ্ধে এক বাহিনীর অভিযান চালানোর সময় অন্য বাহিনীকে অভিহিত করার নিয়ম মানার সুযোগে পাচারকারীদের পালিয়ে যাওয়ার ঘটনা প্রায়শই ঘটে। ঘটে তথ্য পাচারের ঘটনা। যা বন্ধ হওয়া জরুরি।

সর্বশেষ খবর