শুক্রবার, ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

বিদেশে অর্থ পাচার

বাড়াতে হবে নজরদারি

আর্থিক খাতে সুশাসন প্রতিষ্ঠাকে সরকার চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছে বলেই মনে হচ্ছে। টানা চতুর্থবার নির্বাচিত হয়ে ক্ষমতায় এসে ঋণ খেলাপির অপসংস্কৃতি রোধকে আশু করণীয় হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে। বিদেশে অর্থ পাচারকারীদের ব্যাপারে সরকারের কড়া মনোভাব প্রকাশ পেয়েছে সংসদের প্রশ্নোত্তর পর্বে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে। তিনি বলেছেন, অর্থ পাচার রোধে বর্তমানে বাংলাদেশে ‘মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন-২০১২’ বলবৎ রয়েছে যা সর্বশেষ গত ২৬ নভেম্বর ২০১৫ সংশোধিত হয়। এ আইনের বিধান অনুসারে বৈধ বা অবৈধ উপায়ে অর্জিত অর্থ বা সম্পত্তি নিয়মবহির্ভূতভাবে বিদেশে পাচারকে মানি লন্ডারিং অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। মানি লন্ডারিং অপরাধের ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন চার বছর এবং সর্বোচ্চ ১২ বছর পর্যন্ত কারাদন্ড এবং এর অতিরিক্ত অপরাধের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সম্পত্তি রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্তকরণ ও সংশ্লিষ্ট সম্পত্তির দ্বিগুণ মূল্যের সমপরিমাণ বা ১০ লাখ টাকা (এর মধ্যে যা অধিক) অর্থদন্ডের বিধান রয়েছে। বাংলাদেশ থেকে পাচার হয়ে যাওয়া অর্থ উদ্ধারের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় তথ্য, সাক্ষ্য-প্রমাণ ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় সহায়তা গ্রহণের জন্য প্রাথমিকভাবে ১০টি দেশের সঙ্গে পারস্পরিক আইনগত সহায়তা চুক্তি স্বাক্ষরের বিষয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। পাচার অর্থ উদ্ধারের বিষয়ে প্রণয়ন করা হয়েছে একটি কৌশলপত্র। সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে বিদেশে পাচার অর্থ ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে ১০টি দেশের সঙ্গে আইনগত সহায়তার যে উদ্যোগের কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী তা একটি ইতিবাচক খবর। বিদেশে অর্থ পাচার ঠেকাতে দেশে আইন থাকলেও তার কোনোটিই পাচারকারীদের মনে ভয় ঢোকানোর মতো নয়। বিদেশ থেকে পাচার অর্থ উদ্ধারের চেয়েও যাতে কেউ অর্থ পাচারে সাহসী না হয় এমন কড়া আইন থাকতে হবে। প্রশাসনিক নজরদারি বাড়ানোর বিষয়টিও প্রাসঙ্গিক। অর্থ পাচারে জরিমানার পরিমাণও বহুগুণ বাড়ানো যেতে পারে। বিদেশে অর্থ পাচারের জন্য দেশের অর্থনীতিতে কালো ছায়া পড়ছে। ডলার সংকটের পেছনেও তা দায়ী। আমদানিনির্ভর ভোগ্যপণ্যের দাম বৃদ্ধির পেছনেও ডলার সংকট ইন্ধন জোগাচ্ছে। যা মোচন সরকারের আশু কর্তব্য বলে বিবেচিত হওয়া উচিত।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর