শিরোনাম
শুক্রবার, ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

সামাজিক অস্থিরতা

সুস্থ পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে হবে

সামাজিক অস্থিরতা ক্রমেই বাড়ছে। অস্থিরতার কারণে বাড়ছে একের পর এক অপরাধ। হত্যা, ধর্ষণের মতো জঘন্য অপরাধ অহরহ ঘটছে। সামাজিক অস্থিরতার পেছনে রাজনীতি ও অর্থনীতির দৈন্যদশা অনেকাংশে দায়ী। করোনাভাইরাস মহামারির পর থেকে দেশে চলছে গরিব ও নিম্নমধ্যবিত্তদের মধ্যে অর্থনৈতিক আকাল। নাজুক অর্থনীতির পাশাপাশি রাজনৈতিক অস্থিরতাও সামাজিক অস্থিরতায় ইন্ধন জোগাচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, রাজনৈতিক ও সামাজিক স্থিতিশীলতা না থাকলে এর বিরূপ প্রভাব ব্যক্তি মানুষের ওপরও পড়ে। সনাতন সমাজব্যবস্থা থেকে আধুনিক সমাজব্যবস্থায় উত্তরণ, রাজনৈতিক অস্থিরতা, সামাজিক অসাম্য, দ্বন্দ্ব, লোভ ও হতাশা থেকেই মানুষ দিন দিন নৃশংস হয়ে উঠছে। যার সঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়ার অপব্যবহার এ ক্ষেত্রে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। অর্থলিপ্সা মানুষকে হিংস্র করে তুলছে। আমাদের সমাজব্যবস্থায় অর্থশালীদের পক্ষেই থাকে সবকিছু। আইন, আদালত কোনো কিছুই সমাজের নিম্ন আয়ের মানুষের পক্ষে সহজলভ্য নয়। ফলে তারা যখন আইনের শাসনের কথা ভাবে, তখন এই পথে যাওয়ার চেয়ে মৃত্যুকেই শ্রেয় মনে করে। অপরাধীরা একটা অপরাধ করার পর সেটা ঢাকতে আরও একাধিক অপরাধ করে- এটা এক সহজাত প্রবণতা। আইন ও সালিশ কেন্দ্রের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত বছর ২০২৩ সালে সারা দেশে ৫৭৪টি নারী ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। ধর্ষণের চেষ্টা চালানো হয়েছে ১২৯টি। ধর্ষণের পর মারা গেছেন ৩৩ জন। আত্মহত্যা করেছেন তিনজন। চলতি বছরের জানুয়ারিতে ঘটেছে ২৯টি ধর্ষণের ঘটনা। চেষ্টা চালানো হয়েছে ৯টি। ধর্ষণের পর মারা গেছে দুজন। ধর্ষণের বিষয়টি মানতে না পেরে আত্মহত্যা করেছেন একজন। নৃশংসতা থেকে রক্ষা পাচ্ছে না শিশুরাও। দেশে গত তিন বছরে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ প্রবৃদ্ধি কমেছে। সম্মানজনক কর্মসংস্থানের পথ সিংহভাগ মানুষের জন্য রুদ্ধ হয়ে পড়ছে। সামাজিক অস্থিরতার অবসানে আগে অর্থনীতিতে সুস্থির পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে হবে। রাজনৈতিক অঙ্গনেও দরকার ব্যাপক সংস্কার। রাষ্ট্রযন্ত্রের সর্বস্তরে জবাবদিহিতার পরিবেশ গড়ে তোলাও জরুরি। বলা হয়ে থাকে, রাজনীতি হলো অর্থনীতির প্রতিবিম্ব। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার স্বার্থেই দেশের অর্থনীতিতে সুস্থতা ফিরিয়ে আনতে হবে। সামাজিক অস্থিরতা ঠেকানোর ক্ষেত্রে যা বিবেচিত হবে প্রকৃষ্ট পথ হিসেবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর