মঙ্গলবার, ২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

বাক্সবন্দি যন্ত্রপাতি

অবরুদ্ধ হয়ে পড়ছে স্বাস্থ্যসেবা

অব্যবস্থাপনায় দেশের স্বাস্থ্যসেবা বেহাল হয়ে পড়লেও দেখার কেউ নেই। প্রতিটি মন্ত্রণালয় ও অধিদফতরের মতো স্বাস্থ্যের কর্তাব্যক্তিরাও কেনাকাটার ক্ষেত্রে সক্রিয়। কারণ পকেটপূর্তির সুযোগ থাকে। ‘বাণিজ্যে বসতে লক্ষ্মী’ এটি কেনাকাটার সঙ্গে জড়িত স্বাস্থ্য কর্তাদের যেহেতু কম জানা নয়, সেহেতু তারা সুযোগ পেলেই যন্ত্রপাতি কেনার আগ্রহ দেখান। কিন্তু সেই যন্ত্র ব্যবহার হচ্ছে কি না, যন্ত্র চালানোর লোকবল আছে কি না এ নিয়ে তাদের কোনো আগ্রহ নেই। ফলে যা হওয়ার তাই ঘটছে। বাংলাদেশ প্রতিদিনের শীর্ষ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে- খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ক্যান্সার চিকিৎসায় ব্যবহৃত ১০ কোটি টাকা মূল্যের ‘লিনিয়ার এক্সিলেটর’ মেশিন ১২ বছর ধরে বাক্সবন্দি অবস্থায় পড়ে আছে। জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে ক্যান্সার চিকিৎসায় ব্যবহৃত অন্যতম জরুরি রেডিওথেরাপি মেশিন ছয়টি। এর চারটিই নষ্ট হয়ে পড়ে রয়েছে। দুটি মেশিন দিয়ে খুঁড়িয়ে চলছে স্বাস্থ্যসেবা। সেবা পেতে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত রোগী ও স্বজনদের। এ চিত্র শুধু দুটি হাসপাতালের নয়, দেশের অধিকাংশ সরকারি হাসপাতালের বছরের পর বছর যন্ত্রপাতি নষ্ট। অনেক জায়গায় বাক্সবন্দি অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে থাকা যন্ত্র মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে গেছে। অনেক হাসপাতালে আইসিইউ স্থাপন এবং এমআরআই মেশিন বসানো হলেও তা আর চালু করা হয়নি। এসব মেশিন পরিচালনার জন্য নিয়োগ দেওয়া হয়নি জনবল। ফলে যা ঘটার তাই ঘটছে। সরকারি হাসপাতালে দামি মেশিন থাকলেও বাড়তি খরচ করে ছুটতে হয় ক্লিনিক কিংবা ডায়াগনস্টিক সেন্টারে। অভিযোগ রয়েছে- সরকারি হাসপাতালের করিৎকর্মা কর্মচারীরা বেসরকারি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের যোগসাজশে নিজেদের যন্ত্রপাতি অচল করে রাখেন। সরকারি হাসপাতাল থেকে বিভিন্ন পরীক্ষার জন্য বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে গেলে কমিশনও পান তারা। আশার কথা, নতুন স্বাস্থ্যমন্ত্রী স্বাস্থ্য খাতের অব্যবস্থাপনা মোকাবিলায় সক্রিয় বলে নিজেকে প্রমাণ করতে পেরেছেন। আমরা আশা করব, সর্বস্তরের অব্যবস্থা অবসানে তার সক্রিয়তা অব্যাহত থাকবে।

সর্বশেষ খবর