বৃহস্পতিবার, ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

তোমাদের প্রতি ভালোবাসা ও কৃতজ্ঞতা

ড. মো. আনোয়ার হোসেন

তোমাদের প্রতি ভালোবাসা ও কৃতজ্ঞতা

৭ জানুয়ারি ২০২৪ তারিখে অনুষ্ঠিত দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশের পরপর একটি খুদে বার্তায় আমার নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করেছিলাম আমার স্বল্প পরিচিত ফেসবুক থেকে। ইতোমধ্যে এক মাস গত হয়েছে। আমার বার্তাটি খুব বেশি পাঠকের নজরে আসেনি। আজকের এই লেখাটি লিখছি সেসব বন্ধু, স্বজন, প্রাক্তন ছাত্রছাত্রী, ভোটার ও শুভানুধ্যায়ীদের উদ্দেশে; যারা নির্বাচনি প্রচারকালীন কঠিন সময়ে আমার পাশে দাঁড়িয়েছিলেন, আমাকে সাহস জুগিয়েছিলেন, সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছিলেন। ৭৪ বছর বয়সে খুবই আপতিকভাবে সাড়ে তিন মাসের প্রস্তুতিতে একটি জাতীয় নির্বাচনের দুরূহ যাত্রায় আমি শামিল হয়েছিলাম।

নেত্রকোনা-৫ আসনে আমার ছোটভাই ওয়ারেসাত হোসেন বেলাল বীরপ্রতীক পরপর তিনবার এমপি হিসেবে দায়িত্বরত ছিল। ওয়ার্ড থেকে শুরু করে ইউনিয়ন ও উপজেলা পর্যায় পর্যন্ত আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী সংগঠনসমূহের এক শক্তিশালী নিবিড় কাঠামো সে গড়ে তুলেছিল। গুরুতর অসুস্থতার কারণে এক বছরের বেশি সময় নির্বাচনি এলাকায় তার নিয়ন্ত্রণাধীন সংগঠনের সঙ্গে কার্যত কোনো যোগাযোগ তার ছিল না। এই সুযোগে তার দলের একাধিক দুষ্টচক্র তাদের প্রভাব বলয় বিস্তারে তীব্র সহিংস প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়ে পড়ে। ধীরে ধীরে নেতৃত্ব পর্যায়ে বেলালের ক্ষমতা ও প্রভাব শিথিল হতে শুরু করে। নির্বাচন ঘনিয়ে এলে তাদের অধিকাংশ পূর্বধলার রাজনীতিতে তার প্রতিপক্ষ আওয়ামী লীগের দীর্ঘদিনের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন ও নির্বাচনি মাঠে সক্রিয় আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনের অন্যান্য প্রার্থীর সঙ্গে যোগ দিতে থাকে। এমনই অবস্থায় যখন এটা স্পষ্ট হয়ে পড়ে যে, দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে বেলাল অংশগ্রহণ করতে সক্ষম হবে না, তখন পূর্বধলা আওয়ামী লীগের বেলালের অনুসারী তৃণমূল পর্যায়ের নেতা-কর্মী, যারা তার অনুপস্থিতিতেও অন্য নেতাদের সঙ্গে ভিড়ে যায়নি, তারা আমাকে এই আসনে নির্বাচন করার অনুরোধ জানাতে থাকেন। এদের মধ্যে একমাত্র নেতৃস্থানীয় ছিল ছাত্রলীগের উপজেলা সভাপতি। আওয়ামী লীগের বাইরে সমাজের শিক্ষক, মুক্তিযোদ্ধা, ব্যবসায়ী ও রাজনীতিসচেতন সুশীল সমাজও আন্তরিকভাবে চাইছিলেন আমি যেন নির্বাচন করি।

এমন সম্মিলিত অনুরোধের কারণও ছিল। পূর্বধলায় আমাদের পরিবার নানা কারণে মানুষের ভালোবাসা ও শ্রদ্ধার আসনে দীপ্যমান ছিল। আমার অগ্রজ কর্নেল তাহেরের নেতৃত্বে আমাদের পরিবারের সব ভাইবোনের মুক্তিযুদ্ধে প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণ, চারজনের বীরত্বসূচক খেতাব লাভ; মুক্তিযুদ্ধ-উত্তর বাংলাদেশে প্রগতিশীল রাজনীতিতে এই পরিবারের ভূমিকা; জেনারেল জিয়ার নির্দেশে অন্যায়ভাবে ফাঁসির দড়িতে কর্নেল আবু তাহেরের বীরোচিত মৃত্যু; নানা সংকটে অন্যায়ের বিরুদ্ধে আমার অংশগ্রহণ, বিশেষ করে ২০০৭ সালে এক/এগারোর সেনাচালিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিরুদ্ধে আমার প্রতিবাদী অবস্থান, রিমান্ড ও কারাবাস, শাহবাগের গণজাগরণে আমার ও আমার পরিবারের সক্রিয় অংশগ্রহণ ইত্যাদি বিষয়ে বাংলাদেশের জনগণ এবং পূর্বধলাবাসী অবগত ছিলেন। 

জাসদের জন্মলগ্নে এই দলের সঙ্গে আমার রাজনৈতিক ভূমিকা অনেকেই অবগত। বহু বছর পরে বিগত প্রায় আট বছর ধরে জাসদের স্থায়ী কমিটির সদস্য হিসেবে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধের শক্তিকে ১৪-দলীয় মোর্চায় ঐক্যবদ্ধ রাখা বিষয়ে আমি কাজ করেছি। সঙ্গে সঙ্গে একাধারে তিন তিনবার রাষ্ট্র পরিচালনায় আওয়ামী লীগের নানা ভুল, দুর্নীতি সম্পর্কে ও দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য সত্য উচ্চারণে আমি কখনো দ্বিধা করিনি। এ কথাও আমি অকপটে জানাতে চাই, জাসদে যোগদান করে দলটিকে নীতিগতভাবে ১৪-দলীয় মোর্চায় ঐক্যবদ্ধ রাখতে ভূমিকা পালনে সফল হলেও একটি বেগবান বিরোধী দল হিসেবে দলটির বিস্তারে আমার নিরন্তর চেষ্টা কোনোভাবেই সফল হয়নি। জাসদের বিপ্লবী ঐতিহ্যের বিশেষ করে সামরিক-বেসামরিক স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে ও ব্যাপক জনসাধারণের আশা-আকাক্সক্ষার প্রতীক হিসেবে আপসহীন লড়াকু রাজনৈতিক অবস্থানের প্রতি তৃণমূল পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের আকাক্সক্ষা থাকলেও জাসদ স্বকীয় দলীয় অবস্থানে অনড় থেকে দলের বিস্তারে শোচনীয়ভাবে ব্যর্থ হয়েছে। এসব বিষয়ে স্থায়ী কমিটি ও জাতীয় কমিটির সভায় নিরন্তর আমার মতামত জানানোর পরও দলীয় অবস্থানের কোনো পরিবর্তন প্রত্যক্ষ না করে গত এক বছরের বেশি সময় ধরে আমি আর দলীয় কোনো সভায় অংশ নেইনি। আমাদের দেশে যা রীতি, তুচ্ছ কারণে দল থেকে পদত্যাগ করা, তাও আমি করিনি।

এমন পরিস্থিতিতে এলো দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে আমার অংশগ্রহণের বিষয়টি। পূর্ববর্তী অধ্যায়ে নিতান্ত আপতিকভাবে পূর্বধলা আসনে এই নির্বাচনে আমার অংশগ্রহণের বিষয়টি সম্পর্কে বলেছি। আমি আওয়ামী লীগের সদস্য নই, জাসদের স্থায়ী কমিটির নিষ্ক্রিয় সদস্য। পূর্বধলায় জাসদের কোনো সাংগঠনিক কাঠামো নেই। এতদবিষয়ে ‘আমার নির্বাচনি ভাবনা’ শীর্ষক একটি প্রবন্ধ ‘বাংলাদেশ প্রতিদিন’ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিল নির্বাচনের অল্প দিন আগে। জাসদের স্থায়ী কমিটির সভায় তা আমি বিশদে জানিয়েছিলাম। প্রথমে ১৪-দলীয় জোট থেকে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করার কথা ভাবলেও জাসদ থেকে পদত্যাগ করে আওয়ামী লীগ থেকে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করার সিদ্ধান্তটি আমার নিতে হয়েছিল কয়েকটি কারণে। ছোট ভাইয়ের অসুস্থতাজনিত কারণ ছাড়াও আরও দুটো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আমার নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করেছে। বঙ্গবন্ধু আমাদের জাতির পিতা, মুক্তিযুদ্ধের পর তাঁর বিরুদ্ধে কঠিন রাজনৈতিক লড়াইয়ে শামিল হলেও মুক্তিযুদ্ধে ও স্বাধীনতা-সংগ্রামে তাঁর ঐতিহাসিক ভূমিকার জন্য তাঁর প্রতি আমার শ্রদ্ধা ছিল অবিচল। তাতে কখনো কোনো চির ধরেনি। এ প্রসঙ্গে মনে পড়ছে, শাহবাগে গণজাগরণের সময় নতুন প্রজন্মের বিশাল সমাবেশে আমার বক্তব্য শেষে আমার অনুরোধে আমার সঙ্গে কণ্ঠ মিলিয়ে গগনবিদারী ‘জয় বাংলা ও জয় বঙ্গবন্ধু’ সেøাগান দিয়েছিলেন নতুন প্রজন্মসহ নানা বয়সী মানুষ। এটা তাৎপর্যপূর্ণ। আমার পূর্বে এই মঞ্চ থেকে আওয়ামী লীগের অনেক জ্যেষ্ঠ নেতা শুভেচ্ছা বক্তব্য শেষ করেছেন শুধু ‘জয় বাংলা’ বলে, কারণ সমাবেশের উদ্যোক্তারা জানিয়ে দিয়েছিলেন কোনো দলীয় সেøাগান উচ্চারণ করা যাবে না। আমিই প্রথম ‘জয় বঙ্গবন্ধু’ স্লোগান দিয়েছি, যা ছিল মুক্তিযুদ্ধের সময় ‘জয় বাংলার’ সঙ্গে আমাদের উচ্চারিত স্লোগান। এ ছাড়া জাতির পিতার নামে ‘জয় বঙ্গবন্ধু’ শুধু আওয়ামী লীগের স্লোগান বলে আমি কখনো মনে করিনি। ২০১৩ সালেই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে মনোনীত করেছিলেন বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের অমর ভাষণের ওপর স্মারক বক্তৃতা রচনার জন্য। সে বছরের ৭ মার্চ তারিখে ওসমানী মিলনায়তনে শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে আয়োজিত সভায় আমার রচিত ‘বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় জাতীয় পুনর্জাগরণ’ শীর্ষক প্রবন্ধটি আমি পাঠ করি।

বিএনপি-জামায়েতের বিরুদ্ধে কার্যকর রাজনৈতিক লড়াই চালানো এবং রাষ্ট্র পরিচালনায় অদূর ভবিষ্যতে শেখ হাসিনার কোনো বিকল্প নেই বলেই আমি ভেবেছি। যে কোনো জাতীয় সংকটে তাঁর পাশে দাঁড়ানোকে আমি কর্তব্য জ্ঞান করেছি। এ প্রসঙ্গে ২০০৭ সালে এক/এগারোর সেনাচালিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে আমার ভূমিকার কথা পূর্বে লিখেছি। মনে পড়েছে, ২০০১ সালের নির্বাচন-পরবর্তী সময়ের কথাও। আমার স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে সুধা সদনে গিয়েছি নেত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করতে। অপ্রত্যাশিত নির্বাচনি পরাজয়ের পর অনেকটা জনশূন্য সুধা ভবন। ভেবে দেখলাম ক্ষমতায় থাকার সুসময়ে তাঁর সঙ্গে আমার সাক্ষাৎ হয়েছে হাতেগোনা। বরং কঠিন দুঃসময়ে যখন তিনি অনেকটা একা, তখন তাঁর পাশে থেকেছি। ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারির নির্বাচনটি তাঁর জন্য এক গভীর সংকট হিসেবেই এসেছিল। এই সময়ে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশ নেওয়াকে আমি সঠিক রাজনৈতিক কর্তব্য বলে মনে করেছি। এ ছাড়া নির্বাচনে অংশ নিয়ে প্রকৃত সুশীল সমাজের সামনে এই দৃষ্টান্তও স্থাপন করতে চেয়েছি যে, সংসদকে শুধু কালো টাকার মালিকদের হাতে ছেড়ে দেওয়ার পরিবর্তে তাঁদের উচিত হবে নির্বাচনে অংশ নেওয়া। অর্ধ শতাব্দীরও বেশি সময় পার হওয়ার পরও কেন মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশে একটি স্বচ্ছ, গ্রহণযোগ্য নির্বাচন ব্যবস্থা গড়ে তোলা গেল না, যেখানে নির্বাচনে অংশ নিতে পারে এমন সব রাজনৈতিক দল ও তার সঙ্গে আমজনতার স্বতন্ত্র প্রার্থীগণও সমান সুযোগ নিয়ে প্রতিযোগিতা করতে পারবেন? নির্বাচনে অংশ নেওয়া ছাড়া এ বিষয়ে সম্যক ধারণা লাভ করা আমার পক্ষে সম্ভব ছিল না।

নির্বাচনে অংশ নেওয়ার জন্য পূর্বধলাবাসীদের কাছ থেকে যখন অনুরোধ এলো, তখন তার গভীরতা কতটুকু, তা সরেজমিন জানার জন্য আমি আমাদের গ্রামের বাড়িতে গিয়েছিলাম। যদিও আমি তেমন ভাবে খুব বেশি কাউকে জানাইনি, তথাপি আমি অবাক হয়ে দেখলাম, পূর্বধলার ১১টি ইউনিয়নের সবকটি থেকে বিপুল সংখ্যায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের তৃণমূল পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ আমার সঙ্গে দেখা করার জন্য দূর-দূরান্ত থেকে কাজলায় আমাদের গ্রামের বাড়িতে এসেছিলেন। সেবার তিন দিন ধরে সকাল থেকে গভীর রাত অবধি কাজলার বাড়িতে তাঁদের কথা শুনেছি, নিজে নানা বিষয়ে জানতে চেয়েছি। তারা বলেছিলেন, বেলালের অনুসারীদের নেতৃস্থানীয় প্রায় সবাই আওয়ামী লীগের আহমদ হোসেন এবং আরও দুজনের সঙ্গে নির্বাচনি কাজে যোগ দিয়েছেন, তা সত্ত্বেও নৌকা প্রতীক পেলে এরা সবাই আমার পেছনে দাঁড়াবেন। তাঁদের ধারণা আমি চাইলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অবশ্যই আমাকে নৌকা প্রতীক দেবেন।

এ পর্যায়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উল্লেখ করি। নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সম্ভাব্যতা জানতে গিয়ে পূর্বধলায় বিভিন্ন স্তরের মানুষ, বিশেষ করে আমজনতার সঙ্গে মিশে আমি উপলব্ধি করি বাংলাদেশে তৃণমূল পর্যায়ের মানুষের সঙ্গে নিবিড় সংযোগ আছে যে রাজনৈতিক দলগুলোর, তাদের মধ্যে আওয়ামী লীগের অবস্থান শীর্ষে, তার পর পর্যায়ক্রমে বিএনপি, জাতীয় পার্টি এবং জামায়েতের অবস্থান। রাজনীতিতে ডানপন্থার নানা রূপে এই দলগুলোকে চিহ্নিত করা যায়। তবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পরিচালনায় স্বাধীনতাসংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়ে বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের সঙ্গে আওয়ামী লীগের ভূমিকা দলটিকে বাকি দলগুলো থেকে স্বতন্ত্র করেছে। অতীতে আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে বামপন্থার কমিউনিস্ট পার্টি বা জাসদেরও শক্ত সংগঠন গড়ে উঠেছিল গণমানুষের মধ্যে। এই দুটো দলের মধ্যে তৃণমূল পর্যায়ের মানুষের সঙ্গে জাসদের একটি ক্ষীণ সংযোগ এখনো আছে। বাংলাদেশের রাজনীতিতে জাসদের উত্থানের শুরুতে এই দলের সঙ্গে আমার সংযোগ ঘটলেও সাধারণ মানুষের সঙ্গে আন্দোলন ও সংগ্রামে নিবিড় অংশগ্রহণের প্রত্যক্ষ সুযোগ আমার হয়নি। মুক্তিযুদ্ধে আমি আমার জীবনের সোনালি সময়টি কাটিয়েছি। সে সময়ে বাংলার দরিদ্র জনসাধারণের সঙ্গে আমার নিবিড় সংযোগ ঘটেছিল। তাঁরা চরম দুঃসময়ে আমাদের আশ্রয় ও খাদ্য জুগিয়েছিল, শত্রুর অবস্থান বলে দিয়েছিল। পরিণামে তাঁদের বাড়িঘর ভস্মীভূত করেছে পাকিস্তানি বাহিনী, জীবনও দিতে হয়েছে, নারীদের ধরে নিয়ে গেছে। মনে হলো আপতিকভাবে হলেও জীবনের শেষ পর্যায়ে এসে আরও একবার সাধারণ মানুষের নৈকট্য লাভ করে, তাঁদের উষ্ণ ভালোবাসা পেয়ে আমি আমার জীবনের আরেক সোনালি সময় পার করছি। এসব বিবেচনায় আমি জাসদ থেকে পদত্যাগ করে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছিলাম। জনসম্পৃক্ত রাজনৈতিক দল ছাড়া গণমানুষের সঙ্গে নিবিড় সংযোগ গড়ে তোলা আমার এই বয়সে প্রায় অসম্ভবই ছিল।

সেপ্টেম্বর মাসের মাঝামাঝি সময়ে আমি দ্বিতীয়বারের মতো কাজলায় আসি। এ যাত্রায় আমি বাড়ির বাইরে জনসংযোগে নামি। প্রথমে স্কুল, কলেজ ও মাদরাসার ছাত্র-ছাত্রী এবং শিক্ষকমন্ডলীর সঙ্গে মতবিনিময় ও ক্লাসে বা বিদ্যায়তনের হলরুমে শিক্ষক, ছাত্র-ছাত্রীদের সামনে বক্তৃতায় অংশ নেই। জীবনে দেশে-বিদেশে বহু জায়গায় বক্তৃতা দেওয়ার সুযোগ হয়েছে। এবার প্রত্যন্ত গ্রামের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে উদ্দীপনাময় বক্তৃতায় মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযুদ্ধের স্বপ্নের বাংলাদেশ বিনির্মাণে তরুণ প্রজন্মের করণীয়, মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশে একটি স্বচ্ছ, অবাধ নির্বাচন যাতে আমজনতা নির্বিঘ্নে পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারে, তার জন্য কী ব্যবস্থা নেওয়া যায়, তা নিয়ে কথা বলেছি। জয় বাংলা ও জয় বঙ্গবন্ধু ধ্বনি উচ্চারণে আমার সঙ্গে শুধু স্কুল নয়, মাদরাসার ছাত্র এবং বোরকা পরিহিত ছাত্রীরাও যোগ দিয়েছে। গ্রামবাংলার অবহেলিত জনপদের এক বিস্ময়কর আশাজাগানিয়া চিত্রের সঙ্গে পরিচিত হয়ে আমার মনে হয়েছে জীবনের এক অসাধারণ ও আনন্দময় সময় আমি পার করছি। এর তুলনা শুধু মুক্তিযুদ্ধের সোনালি সময়ের সঙ্গে হতে পারে। নির্বাচনি রোলার কোস্টার এই যাত্রায় আমার পরিবার, বিশেষ করে আমার স্ত্রী আয়েশা, পুত্র ড. সানজীব হোসেন, তার স্ত্রী ড. আলিফা হক, আমার দুই মুক্তিযোদ্ধা ছোটবোন ডালিয়া আহমেদ ও জুলিয়া আহমেদ এবং আমাদের বৃহত্তর পরিবারের সবাই আমার পেছনে দাঁড়িয়েছিলেন তাঁদের ভালোবাসা, সাহস, মেধা এবং হার না-মানা দৃঢ়প্রত্যয় নিয়ে। পরিবারের এই গভীর বন্ধন আমাকে সাহস ও শক্তি দিয়েছে। সানজীব ও আলিফা তাদের সঞ্চয় এবং ব্যাংক লোন নিয়ে অল্পদিন আগে কিনেছিল উঁচু চাকার সুদৃশ্য সুপরিসর এমজি গাড়ি। গাড়িটি তাদের বড় প্রিয়। গোটা পূর্বধলাজুড়ে নির্বাচনের শেষ ২০ দিনের ঝোড়ো যাত্রায় হ্যারিপটারের স্বপ্নের গাড়ি হয়ে উঠেছিল চেরিলাল রঙের সুপরিসর এমজি। তাদের বড় যত্নের এই গাড়ি ছিল আমার বাহন। চালক সানজীব নিজেই। ঝোড়ো যাত্রায় গাড়ির ক্ষতি হয়েছে প্রভূত। কিন্তু এ ব্যাপারে সানজীবের কোনো ভ্রক্ষেপ ছিল না। সানজীবেরই পরিকল্পনায় আমার পরিবারের সদস্যরা অল্প সময়ের মধ্যে ৩৮ মিনিটের একটি সচিত্র ডকুমেন্টারি তৈরি করেছে আমার জীবন নিয়ে। নেত্রকোনার আঞ্চলিক ভাষায় ধারা বর্ণনা দিয়েছে ডালিয়া। ভ্রাম্যমাণ দুটো প্রজেক্টরে গোটা পূর্বধলার প্রতিটি ইউনিয়নের অধিকাংশ বাজার ও লোকালয়ে প্রদর্শিত হয়েছে দারুণ সফল ভিডিওটি। ডকুমেন্টারি শেষে শীতের রাতে জড়ো হওয়া মানুষের সামনে বক্তব্য রাখার পর কী মমতায় নানা বয়সী মানুষ বিশেষ করে প্রবীণরা আমাকে গভীর আলিঙ্গনে জড়িয়ে ধরেছেন। তাঁদের সবার প্রতি আমার সীমাহীন ভালোবাসা।

এ পর্যায়ে ‘জনগণের ভোটে নির্বাচিত একজন সংসদ সদস্যের দায়িত্ব ও কর্তব্য’ শিরোনামের অর্ধ পৃষ্ঠার এপিঠ-ওপিঠের ছোট্ট লেখাটি লিখে ফেলি। বলতে কী স্কুল, কলেজ ও মাদরাসায় শিক্ষক, ছাত্র-ছাত্রীদের সামনে দেওয়া আমার বক্তৃতাকে অবলম্বন করে পূর্বধলাবাসী ভোটারদের উদ্দেশ করে আমার প্রচারপত্রটি তৈরি হয়ে যায়। আমার মেজো চাচার ছেলে নিতান্ত সাধারণ অবস্থা থেকে কঠোর পরিশ্রমে এবং সহজাত মেধাকে সম্বল করে নিজেকে একজন বিত্তবান ও জনসাধারণ্যে সমাদৃত করে তোলা জামাল তার প্রেস থেকে খুবই অল্প খরচে আমার ছোট্ট প্রচারপত্রের কয়েক লাখ কপি ছাপিয়ে দেয়। বলতে কি জামালের পরিকল্পনায়ই প্রথমে বিদ্যায়তনের শিক্ষক, ছাত্র-ছাত্রী এবং পর্যায়ক্রমে সমাজের অন্যান্য মানুষের মধ্যে গতিময় নির্বাচনি প্রচারণায় আমি দিন-রাত ছুটে বেড়িয়েছি। তার প্রতি আমার কৃতজ্ঞতার শেষ নেই।

আওয়ামী লীগ এবং সহযোগী সংগঠনের মধ্যে একমাত্র পূর্বধলা ছাত্রলীগের সভাপতি সোলাইমান হোসেন হাসিব এবং তার বিশ্বস্ত জনা দশেক সহচর প্রথম দিন থেকে আমার সঙ্গে ছিল। তাদের লক্ষ্য ছিল আমজনতার ভোটে নির্বাচনে জয়লাভ করা। নানা চাপ ও প্রলোভনে তারা কখনো লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত হয়নি। এই নির্বাচনকে তারা গ্রহণ করেছিল আরেকটি মুক্তিযুদ্ধ হিসেবে। ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু এবং মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ চিরজীবী হোক- এই স্লোগানগুলো উচ্চকণ্ঠে ও গভীর আবেগে তারা উচ্চারণ করত। পুরো পূর্বধলায় সাড়ে তিন মাসের নির্বাচনি অভিযাত্রায় শুরুর ১০ জন সহচর হয়ে উঠেছিল কয়েক গুণ। হাসিবের নেতৃত্বে জেগে ওঠা এই আলোকিত, সাহসী এবং নীতিবান তরুণ প্রজন্মের দিশারীদের প্রতি আমার গভীর ভালোবাসা ও শুভাশিস।

নির্বাচনি তফসিল ঘোষণার পর সাদা-কালো পোস্টার ছাপাবার বহু আগ থেকেই নির্বাচনি মাঠের প্রার্থীরা প্রচারণার অংশ হিসেবে বাহারি রঙের ছবির পোস্টার, ফেস্টুন ও তোরণে গোটা পূর্বধলা ছেয়ে ফেলেছিলেন। বিপরীতে তফসিল ঘোষণার পূর্ব পর্যন্ত কোথাও আমার ছবি সংবলিত কোনো পোস্টার, ফেস্টুন বা তোরণ ছিল না। আমি নৌকা প্রতীক পাইনি। কিন্তু ভোটের মাঠ ছেড়ে না দিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছি। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আমাকে শতকরা এক ভাগ ভোটারের সমর্থন সংগ্রহ করতে হয়েছে, তারপর স্বতন্ত্র প্রার্থিতা লাভের আবেদন বাতিল হয়েছে, মাঠ আমি ছাড়িনি। আপিল করে এবং লড়াই করে আমাকে প্রার্থিতা ফিরে পেতে হয়েছে। তারপর প্রতীক বরাদ্দ পেয়েছি। সে জন্য নির্বাচন কমিশন ঘোষিত প্রচারণার দিন থেকে বেশ কয়েকদিন পর আমার নির্বাচিত ঈগল প্রতীক ও আমার ছবি সংবলিত সাদা-কালো পোস্টার ছাপাতে ও সুতোয় ঝুলাতে পেরেছি। এক রাতের বেশি তা কখনো থাকেনি। ছিঁড়ে ফেলেছে আহমদ হোসেনের সন্ত্রাসীরা।

আগে বলেছি পূর্বধলার স্কুল, কলেজ, মাদরাসায় আমি ব্যাপকভাবেই বক্তব্য রেখেছি। দুর্গাপূজার সময় তিন দিনের মধ্যে ৬৭টি পূজামন্ডপের মধ্যে ৬৫টিতে নিজে উপস্থিত হতে পেরেছি গাড়ি, মোটরসাইকেল বা পায়ে হেঁটে। আমার নিতান্ত ছোট আকারের প্রচারপত্র, যাতে আমার কোনো ছবিও ছিল না, তা বিতরণ করেছি সব জায়গায়। আমার কথা সাধারণ মানুষ, বিশেষ করে শিক্ষক ও ছাত্র-ছাত্রীদের মুখে মুখে এবং প্রচারপত্রটি তাদের হাত দিয়ে পৌঁছে গিয়েছিল তাদের পরিবারের সদস্যদের কাছে। নিতান্ত অল্প সময়ে কি এক ঐন্দ্রজালিক রিলে রেসে মানুষের মুখে মুখে পূর্বধলার প্রত্যন্ত জনপদে আমার নামটি ছড়িয়ে পড়েছিল! মানুষজন আমাকে দেখেননি, কিন্তু ড. আনোয়ার হোসেন নামের একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও সৎ ও নির্ভীক মানুষ নির্বাচনে দাঁড়িয়েছেন এই খবরটি মানুষজন জেনে গেছেন। আমাদের পরিবারের পরিচিতির কথা তো আগে বলেছি। 

এ কথা বলতে পারি, সাড়ে তিন মাসের নির্বাচনি প্রচারণায় আমরা অত্যন্ত সফলভাবে পূর্বধলার অধিকাংশ নারী-পুরুষ আমজনতার ভোটারের সঙ্গে সরাসরি সংযোগ স্থাপনে সক্ষম হই। আমাদের নারী বাহিনীর কাছে শুনেছি আহমদ হোসেনের পক্ষ থেকে আমাদের মতো কেউ নারী ভোটারের সঙ্গে যোগাযোগের প্রয়োজন মনে করেনি। নির্বাচনে একমাত্র আমরাই দুটো বিশাল মিছিলের আয়োজন করেছি যেখানে আমজনতা স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নিয়েছিল। আসলে প্রতিপক্ষ ধরেই রেখেছে নির্বাচন জিততে এসবের কোনো প্রয়োজন তাদের নেই। রাষ্ট্রক্ষমতায় থেকে নির্বাচনকে তারা খুব সহজ করে ফেলেছে। তবে বাংলাদেশের নির্বাচনে ভোট কেন্দ্রে ভোটারদের নিয়ে আসা, ভোটারদের নির্বিঘ্নে ভোট দেওয়ার ব্যবস্থা করা এবং ভোট কেন্দ্র পাহারা দিয়ে জালভোট দেওয়াকে প্রতিহত করা- এসব কাজের জন্য যে সংগঠিত কর্মী বাহিনী প্রয়োজন, তা আমি সাড়ে তিন মাসের নির্বাচনি সময়ে গড়ে তুলতে পারিনি। ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের কয়েকদিন আগেই আহমদ হোসেনের সন্ত্রাসী বাহিনী আমার ঈগল প্রতীকের সমর্থক ভোটারদের নানাভাবে হুমকি দিয়ে জানিয়ে দেয় তাদের ভোট কেন্দ্রে না আসতে। আমজনতা বুঝে ফেলে আগের দুটি নির্বাচনের মতো এবারও তাদের ভোট ছাড়াই নৌকাকে জেতানো হবে। বাস্তবে তাই হয়েছিল।

জাতীয় নির্বাচনে বিপুল অর্থের প্রয়োজন হয়। এই কাজে আমার অর্থ সংস্থান কীভাবে সম্পন্ন হয়েছিল তা সম্পর্কে কিছু কথা বলা প্রয়োজন এ জন্য যে, কঠিন সময়ে আমার বন্ধু ও প্রাক্তন ছাত্র-ছাত্রীরা অত্যন্ত মূল্যবান অর্থ সাহায্য নিয়ে আমার পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। আমি ও আমার পরিবারের নিকটতম সদস্য আমার স্ত্রী, পুত্র ও পুত্রবধূ মিলে নির্বাচনি খরচের মূল অর্থের ব্যবস্থা করেছিলাম। তার উৎস ছিল তিল তিল করে জমানো আমাদের কঠোর পরিশ্রমের উপার্জনের অর্থ। পরে হিসাব করে দেখলাম নির্বাচনের চূড়ান্ত সময়ে বিশেষ করে নির্বাচনি দিনের জন্য যে বিপুল অর্থের প্রয়োজন হয়, তার সংস্থান কোনোভাবেই হচ্ছে না। কোনো কূলকিনারা করতে না পেরে স্ত্রী, পুত্র, পুত্রবধূর সঙ্গে আলোচনা করে দেশে-বিদেশে ছড়িয়ে থাকা বন্ধু-স্বজন ও আমার প্রাক্তন ছাত্র-ছাত্রীদের কাছে অর্থ সাহায্য চেয়ে অনুরোধ জানানোর সিদ্ধান্ত নেই নির্বাচনি প্রচারের শেষ পর্যায়ে। আমি জানি পৃথিবীজুড়ে দারুণ অর্থ কষ্টের মধ্যে পড়েছে সীমাবদ্ধ আয়ের পরিবাররা। তারপরও নিরুপায় হয়েই অনুরোধ রেখেছিলাম তাদের কাছে। আজ গভীর কৃতজ্ঞতায় সেই সব দয়ালু মানুষ, প্রকৃত বন্ধু-স্বজন ও প্রাক্তন ছাত্র-ছাত্রী, যারা এগিয়ে এসেছিলেন আর্থিক সংকটের এই সময়ে মহার্ঘ্য অর্থ সাহায্য নিয়ে, তাঁদের কথা গভীর ভালোবাসা ও কৃতজ্ঞতায় স্মরণ করছি। বন্ধুরা, তোমরা জেনে রাখ, তোমাদের অর্থ সাহায্য পেয়েছিলাম বলে নির্বাচনের দিন ৮১টি ভোট কেন্দ্রের প্রতিটিতে আমি পোলিং এজেন্ট দিতে পেরেছিলাম। আহমদ হোসেনের নিজ ইউনিয়নে তার অব্যাহত হুমকির কারণে সেখানকার সাতটি কেন্দ্রে স্ব স্ব এলাকা থেকে কোনো এজেন্ট দিতে না পেরে আমার স্ত্রী, পুত্রবধূ, দুই বোন ও আমার আত্মীয়স্বজনের বাড়ির মহিলাদের নিয়োগ দিয়েছিলাম এজেন্ট হিসেবে। চরম প্রতিকূল পরিবেশেও এই সাহসী নারীরা নির্ভিকচিত্তে নিষ্ঠার সঙ্গে তাঁদের দায়িত্ব পালন করেছিলেন। তাদের কথা গভীর কৃতজ্ঞতায় স্মরণ করছি।

আমি নির্বাচনে জয়লাভ করতে পারিনি, এ জন্য পরিতাপ করি না, কারণ সেসব অসহায় আমজনতা যারা আমাকে তাঁদের ভালোবাসা জানিয়েছিলেন, আমার ওপর আস্থা স্থাপন করেছিলেন, তাঁরা ভোট কেন্দ্রেই আসতে পারেননি। নির্বাচন কমিশন কিংবা প্রশাসন তাঁদের নির্বিঘ্নে ভোট দেওয়ার কোনো ব্যবস্থা করতে পারেনি। অন্যদিকে নৌকার পক্ষে দিনদুপুরে ভোট জালিয়াতি রোধেও তারা কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। আমার নিজের সংগঠিত কর্মী বাহিনী ছিল না বলে এসব রোধে কোনো ব্যবস্থা আমিও নিতে পারিনি। ভোটের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করে আমার পাঠানো ফেসবুক বার্তায় আমি জানিয়েছিলাম আমি এবং আমার পরিবার পূর্বধলার সাধারণ মানুষের পাশেই থাকব।  এই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে আমজনতার এক বৃহত্তর ও মহত্তর পরিবারের সঙ্গে আমি নিজেকে যুক্ত করতে পেরেছি। এটাই আমার বিশাল সফলতা। এঁদের ছেড়ে অন্য কোথাও কখনো যাব না। জানি সামনের দিনে আমজনতার বিজয়কে ঠেকানো এত সহজ হবে না।

জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।

লেখক : সাবেক ইউজিসি প্রফেসর, ডিপার্টমেন্ট অব বায়োকেমিস্ট্রি অ্যান্ড মলিকুলার বায়োলজি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

সর্বশেষ খবর