শিরোনাম
বৃহস্পতিবার, ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

বাংলায় অনাগ্রহ

সে সবে কাহার জনম নির্ণয় ন’জানি

মধ্যযুগের কবি আবদুল হাকিম লিখেছিলেন ‘যে সবে বঙ্গেতে জন্মি হিংসে বঙ্গবাণী/সে সবে কাহার জনম নির্ণয় ন’জানি।’ বাংলা পৃথিবীর অষ্টম বৃহৎ ভাষা। পৃথিবীর ২৮ কোটিরও বেশি মানুষ এ ভাষায় কথা বলে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ৮টি দেশের মধ্যে হিন্দির পরেই বাংলাভাষী মানুষের সংখ্যা বেশি। এশিয়ায় বাংলা ভাষা তৃতীয়। চীনের ম্যান্ডারিনা ও হিন্দির পরেই। ধর্মীয় দিক থেকে আরবি ভাষার পর সবচেয়ে বেশি মুসলমান কথা বলে বাংলা ভাষায়। বাংলা ভাষাকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার জন্য ১৯৫২ সালে বাঙালি ছাত্ররা জীবন দিয়েছিল। ভাষা আন্দোলনের সূত্র ধরে ১৯৭১ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বাঙালির জাতিরাষ্ট্র বাংলাদেশ। বাংলাদেশে বাংলা বিদ্বেষী মানুষের সংখ্যা নগণ্য হলেও এখনো বাঙালির জাতিরাষ্ট্রে বাংলা ভাষার প্রতি অনাগ্রহ রয়েছে অনেকেরই। উন্নত বিশ্বের বিভিন্ন শহরে নির্দিষ্ট স্থানগুলোয় এখন চোখে পড়ে সারি সারি বাংলা সাইনবোর্ড। কিছু শহরে পুরোপুরি বাংলা ভাষায় করা যায় সব কাজ। কেনাকাটা থেকে শুরু করে চিকিৎসা সবই করা যায় বাংলায়। বাংলা ভাষা নিয়ে গবেষণাও বেড়েছে বিদেশিদের। তবে দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বাংলা ভাষার ব্যবহার নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বাংলা উপেক্ষা করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোয় বিদেশি ভাষা গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। ইংরেজি মাধ্যমে তো বটেই, বাংলা মাধ্যমেও এখন শিক্ষার্থীদের মধ্যে ইংরেজি বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে। মার্কিন মুলুকের নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসে ঢুকে পড়লে যে-কারও মনে হতে পারে বাংলাদেশে এসে পড়েছে। এখানে বেশ কয়েকটি সড়ক পুরোপুরিই বাঙালিদের দখলে। এমন শহর যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে কম নয়। কিন্তু বাংলাদেশের রাজধানীতে বাংলার চেয়ে ইংরেজি সাইনবোর্ডের সংখ্যা বেশি। অফিস-আদালতে বাংলা ভাষা এখনো উপেক্ষিত। নিজেদের বিতর্কিত করতে না চাইলে ফিরে আসতে হবে ভুল পথ থেকে। ইংরেজিসহ সব বিদেশি ভাষা শিখব আমরা নিজেদের স্বার্থে। তবে বাংলাকে উপেক্ষা করে নয়।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর