ঢাকা সিটি করপোরেশনের আবর্জনার গাড়িচালকদের কেউ কেউ সাক্ষাৎ যমে পরিণত হয়েছে বহু আগে। মানুষের প্রাণ কেড়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে তারা একাধিক নজির রেখেছেন। এবার তাদের সঙ্গী হয়ে নাম লিখিয়েছেন গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ময়লা আবর্জনার এক গাড়িচালক। গত শনিবার সিটি করপোরেশনের আবর্জনার গাড়ি চাপায় গাছা থানার কুনিয়া বড়বাড়ী এলাকায় এক নারী পোশাক শ্রমিকের মৃত্যুর ঘটনায় ফুঁসে ওঠে গাজীপুর। নিহত মুনিরা সিটি করপোরেশনের বড়বাড়ী তারগাছ এলাকায় স্বামীর সঙ্গে ভাড়া বাসায় থেকে স্থানীয় টেড বার্নহার্ডজ টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রিতে অপারেটর হিসেবে কর্মরত ছিলেন। এ ঘটনার জেরে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন শ্রমিকরা। তারা বেশ কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর ও সিটি করপোরেশনের ময়লার গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেন। এ সময় যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেলে মহাসড়কের উভয় পাশে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। শ্রমিকদের বিভিন্ন দাবিদাওয়া মেনে নেওয়া ও বিচারের আশ্বাস পেয়ে অবরোধ প্রত্যাহার করে নিলে প্রায় চার ঘণ্টা পর ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, শনিবার সকাল ৮টার দিকে গাজীপুরের গাছা থানার কুনিয়া বড়বাড়ী এলাকার মেরিনা সিএনজি ফিলিং স্টেশনের সামনে দিয়ে অন্যদের মতো নারী পোশাক শ্রমিক মুনিরা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক পার হচ্ছিলেন। এ সময় সিটি করপোরেশনের দ্রুত গতির একটি ময়লার গাড়ি ওই নারী শ্রমিককে চাপা দিলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। এক ভ্যানচালক গাড়িটি থামানোর চেষ্টা করতে গিয়ে আহত হন অটোরিকশার ধাক্কায়। অভিযোগ রয়েছে, আবর্জনার গাড়িচালকরা বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালাতে অভ্যস্ত। বিশেষত ভোররাত থেকে সকাল পর্যন্ত এমন বেপরোয়াভাবে তারা গাড়ি চালান যে কোনো সময় দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকে। আমরা আশা করব গাজীপুরে পোশাক শ্রমিককে গাড়ি চাপা দিয়ে হত্যার ঘটনার যথাযথ বিচার হবে। আবর্জনাবাহী চালকদের সামাল দিতেই গাজীপুর ট্র্যাজেডির হোতার শাস্তি নিশ্চিত করা হবে।