শুক্রবার, ১ মার্চ, ২০২৪ ০০:০০ টা

ভুয়া ঋণে আপত্তি

ব্যাংকিং খাতে সুশাসনের উদ্যোগ

ভুয়া ঋণের মাধ্যমে ব্যাংকে সঞ্চিত জনগণের অর্থ লুটপাটের মহোৎসব দেশের অর্থনীতিকে গভীর খাদের কিনারে নিয়ে গেছে। ব্যাংক পরিচালনা পর্ষদের রাঘববোয়াল এবং অসৎ কর্মচারী-কর্মকর্তাদের যোগসাজশে এ পর্যন্ত হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাট হয়েছে ভুয়া ঋণের মাধ্যমে। লোপাট অর্থ ভাগাভাগি করে নিয়েছে চৌর্যবৃত্তির সঙ্গে জড়িতরা। দেশের অর্থনীতিকে বিপদের হাত থেকে বাঁচাতে দেরিতে হলেও কুম্ভকর্ণের ঘুম থেকে জেগেছে অর্থ মন্ত্রণালয়। ব্যাংকিং খাতের লুটপাটের মচ্ছব থামাতে তারা ভুয়া ঋণের বিষয়ে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছে। অন্যদিকে সতর্কতার অংশ হিসেবে বিভিন্ন ব্যাংকের প্রতি নজর রাখছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। যেখানে অনিয়ম ধরা পড়বে সেখানেই ব্যবস্থা গ্রহণের নীতি অবলম্বন করা হচ্ছে। ঋণ প্রদানের অনিয়মে কোনো ছাড় দেওয়া হচ্ছে না। বাংলাদেশ ব্যাংক এরই মধ্যে নির্দেশ দিয়েছে ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ সদস্যের পরিবারের কেউ সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের এমডি হতে পারবেন না। এ নির্দেশকে ইতিবাচক চোখে দেখছেন অর্থনীতিবিদরা। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় ব্যাংক ঝুঁকিপূর্ণ বিবেচনায় বেসরকারি খাতের সাউথইস্ট ব্যাংকের ৬৭০ কোটি টাকার ঋণপ্রস্তাব আটকে দিয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকে বিভিন্ন ব্যাংকের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন থেকে নানা ধরনের অনিয়মের অভিযোগ জমা হচ্ছিল। বিশেষ করে বেশকিছু ব্যাংক পরিচালকের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল। সাউথইস্ট ব্যাংক শেয়ার কেনার জন্য একটি সিকিউরিটিজ কোম্পানিকে মোটা অঙ্কের ঋণ দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছিল। সাউথইস্ট ব্যাংকের সর্বশেষ পর্ষদ সভায়ও ঋণপ্রস্তাবটি পাস হয়েছিল। তবে ঋণপ্রস্তাবটি ব্যাংকের পর্ষদ সভায় উপস্থাপন ও পাসের প্রক্রিয়া অস্বচ্ছ হওয়ায় অভিযোগ তুলে সেটি আটকে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ব্যাংক কোম্পানি আইন অনুযায়ী সাউথইস্ট ব্যাংকে বিশেষ পরিদর্শন চালানো হচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংক বিভিন্ন ব্যাংকের কার্যক্রম পর্যালোচনা করে কিছু অনিয়ম শনাক্ত করেছে। খেলাপি ও কুঋণের বিরুদ্ধে নেওয়া হবে পদক্ষেপ। কুঋণ থামাতে ব্যাংকিং খাতের সুশাসন প্রতিষ্ঠাকে কর্তব্য হিসেবে বেছে নেওয়া হবে এমনটিই প্রত্যাশিত।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর