বৃহস্পতিবার, ৭ মার্চ, ২০২৪ ০০:০০ টা

পরিবহন চাঁদাবাজি

এ নৈরাজ্যের অবসান হওয়া উচিত

বাস মালিক ও শ্রমিকরা বছরে প্রায় ১,০৬০ কোটি টাকা ঘুষ দিতে বাধ্য হন। এমন একটি তথ্য উঠে এসেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ-টিআইবির ‘ব্যক্তি মালিকানাধীন বাস পরিবহনব্যবস্থায় শুদ্ধাচার’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদনে। প্রতিবেদন অনুযায়ী, বছরে প্রায় ২৫ কোটি টাকা চাঁদাবাজি হয় দলীয় পরিচয়ে। রাজনৈতিক সমাবেশ, বিভিন্ন দিবস পালন, টার্মিনালের বাইরে রাস্তায় পার্কিং এবং সড়কের বিভিন্ন স্থানে ট্রাফিক আইন লঙ্ঘন ও ‘টোকেন বাণিজ্য’র জন্য বাস মালিক ও শ্রমিকরা নিয়মবহির্ভূত চাঁদা ও উৎকোচ দিতে বাধ্য হচ্ছেন। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় অংশ হলো নিবন্ধন ও সনদ গ্রহণ এবং হালনাগাদ বাবদ ঘুষ। গত মঙ্গলবার রাজধানীর ধানমন্ডির মাইডাস সেন্টারে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, মোট পাঁচ খাতে ঘুষ ও চাঁদা দিতে হচ্ছে। এ খাতে বিআরটিএতে বাসের নিবন্ধন সনদ ও হালনাগাদে বছরে সর্বোচ্চ ৯০০ কোটি ৫৯ লাখ টাকা ঘুষ লেনদেন হয়। এরপর ট্রাফিক ও হাইওয়ে পুলিশকে মামলা এড়াতে দিতে হয় দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ঘুষ ৮৭ কোটি ৫৭ লাখ টাকা। এরপর দলীয় পরিচয়ে ব্যক্তি বা গোষ্ঠীনামে সড়কে বছরে অবৈধ চাঁদাবাজি হয় ২৪ কোটি ৯৭ লাখ টাকা। সড়কে পার্কিংয়ের জন্য পৌরসভা, সিটি করপোরেশন প্রতিনিধি ও রাজনৈতিক কর্মীর নামে ৩৩ কোটি ৪৮ লাখ, টার্মিনালে প্রবেশ ও বেরোনোর জন্য মালিক ও শ্রমিক সংগঠনগুলোর চাঁদার পরিমাণ ১২ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। বেসরকারি বাণিজ্যিক পরিবহনের রুট পারমিট, ফিটনেস সনদ ইস্যু ও নবায়নে গড়ে ৪৬ শতাংশের বেশি মালিককে ঘুষ দিতে হয়। মোটরযান সনদ ইস্যু ও নবায়নে বাসপ্রতি ১২ হাজার ২৭২, ফিটনেস সনদ নবায়ন ও ইস্যুতে বাসপ্রতি ৭ হাজার ৬৩৫ এবং রুট পারমিট সনদ নবায়ন ও ইস্যুতে বাসপ্রতি ৫ হাজার ৯৯৯ টাকা ঘুষ দিতে হয়। চাঁদাবাজির কারণে যাত্রীদের বাড়তি ভাড়া গুনতে হয়। পণ্য পরিবহনে চাঁদাবাজি বাড়িয়ে দেয় পণ্যের দাম। ভোক্তাদের জন্য যা বাড়তি বোঝা হয়ে দেখা দেয়। পরিবহন খাতে সুশাসন নিশ্চিত করতে চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে কঠোর হতে হবে, এর কোনো বিকল্প নেই।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর