শুক্রবার, ৮ মার্চ, ২০২৪ ০০:০০ টা

মদের বার আর বিশ্ববিদ্যালয়

এ সহাবস্থান যথার্থ কি না সিদ্ধান্ত নিন

দুধ আর তামাক একসঙ্গে পান করলে যে বিভ্রান্তি ঘটে তার চেয়েও বড় বিভ্রমের উদ্ভব ঘটিয়েছে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় নামের এক ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান। বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মদের বার রয়েছে এমন ভবনে চলছে ‘সোনারগাঁও বিশ্ববিদ্যালয়’। রাজধানীর গ্রিন রোড এলাকার ১৪৭/এ/১ তাহের ভবন। ভবনটির দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলায় ‘ডিপিএল’ অর্থাৎ ডোমিনেজ পিৎজা লিমিটেড মদের বার। চতুর্থ তলায় সিএমসি হেলথ কেয়ার লি.। পঞ্চম, ষষ্ঠ, সপ্তম এবং অষ্টম তলা পর্যন্ত বেসরকারি সোনারগাঁও বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। ভবনের মালিক সালমা বেগম যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী। এই ভবন থেকে দুটি ভবন পার হয়েই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘আইবিএ’ হোস্টেল। এর ঠিক বিপরীতেই অবস্থান আরেকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ‘ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিক’-এর। এই বারের মালিক নাকি অনেক প্রভাবশালী। আশপাশের বাসিন্দাদের ভাষ্য, প্রায় প্রতিদিনই মাতাল হওয়া মানুষের কান্ড-কারখানা দেখতে হয়। কারণ বারের চারপাশেই আবাসিক এলাকা। সঙ্গে রয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। ডিপিএল বারের ম্যানেজার বলেছেন, তারা ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে দুটি ফ্লোর ভাড়া নিয়ে ডেকোরেশনের কাজ শুরু করেন। তাদের সাত-আট মাস পর বিশ্ববিদ্যালয় এসেছে ওই ভবনে। এখন ভবন মালিকই বলতে পারবেন তিনি কেন বিশ্ববিদ্যালয়কে ভাড়া দিয়েছেন। স্মর্তব্য, কথিত শিক্ষার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের এক ক্ষুদ্র অংশের মদপানেরও সুযোগ মিলছে অতি সহজে। অতি অবশ্যই অর্থের বিনিময়ে। দেশে আলু, পিঁয়াজ ও মাছের দোকানের মতো বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছড়াছড়ি। প্রতিবছর হাজার হাজার শিক্ষিত বেকার সৃষ্টিতে যাদের জুড়ি নেই। বাণিজ্যে বসতে লক্ষ্মী প্রবচনে আস্থা স্থাপন করে যারা ব্যাঙের ছাতার মতো বিশ্ববিদ্যালয় খোলার কৃতিত্ব দেখিয়েছেন তাদের ব্যাপারে আমাদের বলার কিছু নেই। কিন্তু যারা নিজেদের বিবেক ও সুবিবেচনাকে জিম্মি রেখে মদের বার রয়েছে- এমন ভবনে বিশ্ববিদ্যালয় ব্যবসা চালানোর ধৃষ্টতা দেখিয়েছেন তাদের অর্থলিপ্সু মনোভাব দেখে লজ্জা পেতে হয়। আমরা আশা করব ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ মদের বারের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহাবস্থান সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেবেন। এ নিয়ে যে বিভ্রমের সৃষ্টি হয়েছে তার অবসান ঘটাবেন।

সর্বশেষ খবর