শনিবার, ৯ মার্চ, ২০২৪ ০০:০০ টা

নারী হয়রানি

দায়ী পুরুষতান্ত্রিক মনোভাব

বাংলাদেশ নারীর ক্ষমতায়নে আপাতদৃষ্টিতে সারা বিশ্বের জন্যই অনুকরণীয়। দেশের অর্থনীতিতে তাদের ভূমিকা আকাশছোঁয়া। প্রধান রপ্তানি খাত গার্মেন্টে কর্মরতদের বেশির ভাগ নারী। তার পরও নারীরা ঘরে-বাইরে সহিংসতা ও হয়রানির শিকার। বাংলাদেশের ভাবমূর্তির জন্য যা বিড়ম্বনা সৃষ্টি করছে। যৌন হয়রানি মানব সভ্যতার জন্য এক কলঙ্কের নাম। হাজার বছর ধরে এ আপদ ছড়ি ঘোরাচ্ছে নারীদের ওপর। একবিংশ শতাব্দীতেও সমভাবে অনুভূত হচ্ছে যৌন হয়রানির বিষয়টি। বাংলাদেশকে যৌন হয়রানির অভায়রণ্য বললেও হয়তো কম বলা হবে। এ আপদের বিরুদ্ধে সংবেদনশীল মনোভাব দেখিয়েছেন দেশের উচ্চ আদালত। এক যুগ আগে তারা শিক্ষাঙ্গনসহ সব সরকারি- বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে যৌন হয়রানি প্রতিরোধ কমিটি গঠনের নির্দেশনা দেন। কিন্তু দীর্ঘ সময় পার হলেও উচ্চ আদালতের গাইডলাইন মেনে সঠিক পদক্ষেপ না নেওয়ায় কর্মক্ষেত্র, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও গণপরিবহনে বিভিন্ন বয়সী নারী অহরহ যৌন হয়রানির শিকার হচ্ছেন। এমনকি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও যৌন হয়রানি অহরহ ঘটছে। যার মোকাবিলায় বিশেষজ্ঞরা সরকারি-বেসরকারি সব প্রতিষ্ঠানে যৌন হয়রানি রোধে কমিটি গঠন করা হয়েছি কি না তা নজরদারির ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন। সরকারকে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান মনিটর করে রিপোর্ট পাঠানো বাধ্যতামূলক করতে হবে। দেশের সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে কাগজে-কলমে যৌন হয়রানি রোধ কমিটি থাকলেও বাস্তবে এগুলো নিষ্ক্রিয়। গণপরিবহনে যৌন হয়রানি কিছুতেই দূর হচ্ছে না। গণপরিবহনে যাতায়াত করেন এমন নারীর শতকরা ৫৭ শতাংশ যৌন হয়রানির শিকার হন। নিপীড়নকারীদের মধ্যে চল্লিশোর্ধ্ব বয়সীর সংখ্যা বেশি। অনলাইনেও যৌন হয়রানি ঘটছে অহরহ। বাংলাদেশে কর্মজীবী নারীদের প্রায়শই যৌন হয়রানির শিকার হতে হয়। বিশেষ করে তৈরি পোশাকশিল্পের নারীরা প্রতিনিয়তই যৌন হয়রানির শিকার। নারীর যৌন হয়রানির জন্য দায়ী পুরুষতান্ত্রিক মনোভাব। সভ্য হয়ে ওঠায় উদ্বুদ্ধকরণের মাধ্যমে এ আপদ দূর করা সম্ভব।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর