বুধবার, ১৩ মার্চ, ২০২৪ ০০:০০ টা

ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা

সংরক্ষণের উদ্যোগ নিন

সারা দুনিয়ায় প্রত্নতত্ত্বের গুরুত্বই আলাদা। ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা সুরক্ষণে প্রতিটি জাতিই যত্নবান। এদিক থেকে দৃশ্যত পিছিয়ে নেই আমাদের দেশও। তবে বাস্তবে সদিচ্ছার অভাব বড়ই প্রকট। পুরান ঢাকার ৭৪টি স্থাপনাকে ঢাকার ঐতিহ্যবাহী হিসেবে ঘোষণা করে ২০২০ সালে গেজেট প্রকাশ করে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ- রাজউক। তাদের অনুমোদন ব্যতীত তালিকাভুক্ত ভবন ও স্থাপনা কাঠামো আংশিক বা সম্পূর্ণ অপসারণ, পুনর্নির্মাণ, পরিবর্তন, পরিবর্ধন, পরিমার্জন, সংযোজনের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞাও আরোপ করা হয়। অথচ নিষেধাজ্ঞাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে এসব ভবনের সংস্কার করে কাঠামো বদলে দেওয়া হচ্ছে। স্থাপনা সংরক্ষণে নীতিমালা থাকলেও তার কোনো প্রয়োগ নেই। পুরান ঢাকার ঐতিহাসিক স্থাপনার বিষয়ে রাজউক, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন ও প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতরে আলাদা আলাদা তালিকা রয়েছে। এ তিন সংস্থার তালিকায় রয়েছে কিছু পার্থক্যও। প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতরের তালিকা অনুযায়ী ১০৬টি স্থাপনার মধ্যে ৯৭টি বিভিন্ন সংস্থা, প্রতিষ্ঠান, মসজিদ কমিটি ও বিভিন্নভাবে অবৈধ দখলে রয়েছে। এগুলো সংরক্ষণের অভাবে নষ্ট হচ্ছে। সংরক্ষণেও নেই সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর উদ্যোগ। ২০০৯ সালের ২ ফেব্রুয়ারি পুরান ঢাকার চারটি অঞ্চলকে ঢাকার ঐতিহ্য বা হেরিটেজ হিসেবে ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ করে রাজউক। গেজেটে ৯৩টি স্থাপনা ও ১৩টি সড়ককে ঐতিহ্যবাহী এলাকা হিসেবে উল্লেখ করা হয়। ২০১৭ সালে হেরিটেজের সংখ্যা ৭৪টিতে নামিয়ে আনা হয়। ১৩টি সড়কও বাদ দেওয়া হয় তালিকা থেকে। রাজউকের এই তালিকার মধ্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের এলাকায় রয়েছে ৬৬টি স্থাপনা। যদিও ডিএসসিসির মালিকানায় থাকা ঢাকা গেট ও লালকুঠি সংস্কার কাজ করছে সেবাদাতা এ সংস্থাটি।  প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতরের খসড়া তালিকায় ১০৬টি স্থাপনার নাম থাকলেও নয়টি মাত্র তাদের নিয়ন্ত্রণে। বাকি ৯৭টি স্থাপনার বেশ কয়েকটির জন্য তারা আদালতের শরণাপন্ন হয়েছে। রায় নিজেদের পেলে সেগুলোতে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠিত হবে। ঐতিহাসিক স্থাপনা সংরক্ষণে নীতিমালা থাকলেও তার প্রয়োগ না থাকায় এগুলোর সুরক্ষা বিঘ্নিত হচ্ছে। এ অপ্রত্যাশিত অবস্থার অবসান হওয়া উচিত।

সর্বশেষ খবর