শনিবার, ১৬ মার্চ, ২০২৪ ০০:০০ টা

অভিশপ্ত শিশুশ্রম

ধনী-গরিবের বৈষম্য কমাতে হবে

দারিদ্র্য বিমোচনে বাংলাদেশ তাৎপর্যপূর্ণ সাফল্য অর্জন করেছে গত অর্ধশতাব্দীতে। এটি একটি অলৌকিক দিক। বিশ্বের সবচেয়ে দরিদ্র দেশ থেকে মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে উত্থান ঘটলেও শিশুশ্রমের বিশালতা দুর্ভাগ্যজনক। দেশে ধনী-গরিবের বৈষম্য বাড়ায় উন্নয়নের সিংহভাগ সুফল ভোগ করছে অতি সংখ্যালঘিষ্ঠ একটি অংশ। বাংলাদেশে ৫ থেকে ১৭ বছর বয়সী শিশুর সংখ্যা ৩ কোটি ৯ লাখ ৯৬ হাজার। এর মধ্যে শিশুশ্রমে জড়িত ৩৫ লাখ ৪০ হাজার শিশু। সোজা হিসাবে মোট শিশুর ৮ শতাংশের বেশি শিশুশ্রমে যুক্ত। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) জরিপে বলা হয়েছে, দেশে ঝুঁকিপূর্ণ পেশায় নিয়োজিত শিশু শ্রমিকের সংখ্যা ১০ লাখ ৭০ হাজার। শহরের তুলনায় গ্রামীণ এলাকায় শিশু শ্রমিকের সংখ্যা বেশি। জরিপের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গ্রামীণ এলাকায় ২৭ লাখ ৩০ হাজার শিশু শ্রমিক হিসেবে কাজ করে। শহর এলাকায় এ সংখ্যা ৮ লাখ ১০ হাজার। ঝুঁকিপূর্ণ কাজেও শহরের তুলনায় গ্রামীণ এলাকায় বেশি শিশুকে কাজ করতে দেখা যায়। বিবিএস জানায়, দেশে শিশু শ্রমিকের ৮২ শতাংশ তাদের নিজস্ব বাড়িতে বসবাস করে। এসব শিশুর ৩৩ দশমিক ৩ শতাংশ উৎপাদনে এবং কৃষি, বনায়ন ও মাছ ধরায় ২৩ দশমিক ৬ শতাংশ নিযুক্ত রয়েছে। সামগ্রিকভাবে শিশু শ্রমিক কর্মচারী হিসেবে শ্রেণিভুক্ত ৬৮ দশমিক ৮ শতাংশ এবং স্কুলে যায় ৫২ দশমিক ২ শতাংশ। শিশু শ্রমিকদের গড় মাসিক আয় ৬ হাজার ৬৭৫ টাকা। এ ছাড়াও ২০ লাখ ১০ হাজার শিশু গৃহকর্মী রয়েছে, যাদের পারিশ্রমিক দেওয়া হয় না। ৮ লাখ শিশু রয়েছে যারা পারিশ্রমিক পায়। বাংলাদেশের ৩৫ লাখ ৪০ হাজার শিশুশ্রমে জড়িত এটি উদ্বেগজনক একটি খবর। সরকার ২০২৫ সালের মধ্যে শিশুশ্রম নির্মূলকে লক্ষ্য হিসেবে বেছে নিয়েছে। ২১ মাসের মধ্যে এ ক্ষেত্রে কতটা সাফল্য আসবে তা সন্দেহাতীত নয়। শিশুশ্রম বন্ধে সমাজে ধনী-গরিবের বৈষম্য কমিয়ে আনা জরুরি। যা উপেক্ষা করে কাক্সিক্ষত সাফল্য অর্জিত হবে না।

 

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর