অবৈধ অস্ত্র উদ্বেগ ছড়াচ্ছে জনমনে। মানুষ যেমন ক্ষুধা নিবারণে খাদ্যের সহজপ্রাপ্যতা চায়, তেমনি চায় নিশ্চিন্তে নিরাপদে বসবাসের নিশ্চয়তা। অবৈধ অস্ত্রবাজদের জন্য জননিরাপত্তা প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়ছে। সাম্প্রতিক সময়ে রাজধানীসহ সারা দেশে মাঝে-মধ্যে গুলির শব্দ শুনতে হবে- এ যেন রুটিনওয়ার্কে পরিণত হয়েছে। নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে সাধারণ মানুষ। অনেকে অস্ত্রবাজদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দিতেও ভয় পান। বোদ্ধাজনদের মতে, অস্ত্রের নেপথ্য নায়কদের বিষয়ে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো অবগত। তবু লাগাম টানা সম্ভব হচ্ছে না। কারণ তাদের অনেকেই ক্ষমতাসীন দলের সঙ্গে জড়িত। দেশে অবৈধভাবে উন্নত প্রযুক্তির অস্ত্র তৈরির বিষয়টি রীতিমতো ভাবিয়ে তুলছে গোয়েন্দাদের। এলাকায় আধিপত্য বিস্তার, রাজনৈতিক বিরোধ, চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসা এবং অন্যান্য অপরাধমূলক ঘটনায় প্রকাশ্যে ও আড়ালে অবৈধ অস্ত্রের ব্যবহার বাড়ছে। অস্ত্রধারীরা গ্রেফতার না হলে অবৈধ অস্ত্রের ব্যবহার আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এসব বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকেও উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। অস্ত্র উদ্ধারে সমন্বিত অভিযান চালাতে সংশ্লিষ্ট আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ দেওয়া হয়। তবে পরিস্থিতির খুব একটা উন্নতি হয়নি। অবৈধ অস্ত্রের ঝনঝনানি বন্ধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নির্মোহভাবে দায়িত্ব পালন করতে হবে। অপরাধীকে অপরাধী হিসেবে দেখতে হবে। তার রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিচয় যাই হোক, গুরুত্ব দেওয়া যাবে না। তাহলেই বন্ধ হবে অস্ত্রের ঝনঝনানি। এ উদ্দেশ্যে বিদেশ থেকে চোরাই পথে অবৈধ অস্ত্রের আমদানি এবং দেশে আগ্নেয়াস্ত্র তৈরির ব্যাপারে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করতে হবে। মিয়ানমারে গৃহযুদ্ধ শুরু হওয়ায় অবৈধ পথে মারণাস্ত্র পাওয়া সহজতর হয়ে উঠেছে। তাই সীমান্তে তীক্ষè নজর রাখতে হবে। গড়ে তুলতে হবে নি-িদ্র প্রহরা। অবৈধ অস্ত্রের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব হলে অপরাধ তৎপরতায় লাগাম টানা সম্ভব হবে। নিশ্চিত হবে জনমানুষের স্বস্তি।