সোমবার, ১৮ মার্চ, ২০২৪ ০০:০০ টা

শব্দ : এক নিঃশব্দ ঘাতক

আফতাব চৌধুরী

শব্দ। শব্দ। শব্দ। মোটরগাড়ির হর্ন, হোটেল-রেস্তোরাঁ-সিডি-ক্যাসেটের দোকানে উচ্চৈঃস্বরে গানবাজনা, হইচই, চিৎকার, হোটেল-রেস্তোরাঁয় বাসনকোসন বাজিয়ে ক্রেতাদের আকর্ষণ, পাঁচ-সাতটা মাইক লাগিয়ে সভা-সমিতি, ওয়াজ মাহফিল, মসজিদ-মাজারের জন্য খয়রাতি সাহায্যের করুণ আর্তনাদ, ব্যান্ড সংগীতের আসর, জনসমাগমের স্থানে মাইক লাগিয়ে মজমা, ভ্যানের ওপর বসে মাইক বাজিয়ে কবিরাজি এবং কী করলে কী হয় শীর্ষক কুসংস্কারজনিত বই বিক্রি আরও কত কিছুর অত্যাচারে অতিষ্ঠ নগরজীবন। দেশে সব শহর-বন্দর-নগর এখন পরিণত হয়েছে শব্দদূষণের কেন্দ্রে। চলছে নগরবাসীর ওপর শব্দদূষণের নির্বিচার অত্যাচার। মাত্রাতিরিক্ত এ শব্দদূষণের কারণে সর্বস্তরের মানুষ অতিষ্ঠ। কিন্তু কারও দৃষ্টি নেই এদিকে। পরিবেশবাদীরা মাঝে-মধ্যে একটু-আধটু প্রতিবাদ করলেও তাও হারিয়ে যাচ্ছে শব্দের মাঝেই। শব্দদূষণের কারণে হৃদরোগসহ অন্যান্য রোগব্যাধি জরায় আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। দিন দিন বধির হয়ে যাওয়ার উপক্রম হচ্ছে নগরবাসীর। এতসব পরও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের কোনো উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না। রাস্তাঘাট, বাস-ট্রাকের হর্নের প্রচন্ড শব্দ অনেকেরই কানে জ্বালা ধরিয়ে দেয়। অথচ কেউ কাউকে কিছু বলেন না। বাস-ট্রাকের হর্নের প্রচন্ড শব্দে পথচারীর শ্রবণেন্দ্রীয় হয়ে ওঠে যন্ত্রণাময়। কিন্তু চালকের ভাবগতি দেখে মনে হয় যে, এতে দোষের কিছু নেই। ড্রাইভিং লাইসেন্স আছে। রোড পারমিশন আছে, পাবলিক রিকশা-ভ্যান-ঠেলা রাস্তায় ভিড় জমিয়ে রাখবে, রাস্তা ছাড়বে না, জোরে জোরে হর্ন বাজাবেন না তো করবে কী! তবে প্রশ্ন-ড্রাইভার সাহেবের সে অধিকার আছে কি? আমরা প্রয়োজনে কথা বলি। অপ্রয়োজনেও বলি। প্রয়োজনের চেয়ে অপ্রয়োজনে বেশি শব্দ ব্যবহার করি।

 

সর্বশেষ খবর