শুক্রবার, ২২ মার্চ, ২০২৪ ০০:০০ টা

উজাড় হচ্ছে বনভূমি

কর্তাদের সততা প্রশ্নবিদ্ধ

বাংলাদেশ থেকে উজাড় হয়ে যাচ্ছে বনভূমি। প্রভাবশালী নামক দানবেরা গিলে খাচ্ছে দেশের বনাঞ্চল। একটি দেশে সুস্থ পরিবেশের জন্য ভূখন্ডের ২৫ শতাংশ বনভূমি থাকা দরকার। বাংলাদেশে এখন বনভূমির পরিমাণ মাত্র ৭-৮ শতাংশ। প্রতিনিয়ত বন উজাড় হচ্ছে, এভাবে চলতে থাকলে আগামী এক দশকে সেটা ৫ শতাংশে নেমে আসবে। ওয়াশিংটনভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ওয়ার্ল্ড রিসোর্সেস ইনস্টিটিউট পরিচালিত প্ল্যাটফরম গ্লোবাল ফরেস্ট ওয়াচের তথ্যানুযায়ী, দেশে করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যেও ২০২০ সালে ৫৩ হাজার একর বন এলাকা কমেছে। ২০০১ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে বৃক্ষ আচ্ছাদিত এলাকা কমেছে প্রায় ৪ লাখ ৯৪ হাজার ২১১ একর। সহযোগী দৈনিকে প্রকাশিত খবরটি বাংলাদেশের পরিবেশ ও মানুষের জন্য উদ্বেগজনক। জীববৈচিত্র্যের জন্যও এটি একটি বিসংবাদ। বিশেষজ্ঞদের মতে, গাছ-গাছালি বিনাশ না হলে ৭৩.৪ মেগাটন কার্বন ডাই নিঃসরণ ঠেকানো যেত। দেশে বন বিভাগের মোট জমি ৩৭ লাখ ৭১ হাজার ১২৪ একর। এর মধ্যে তিন পার্বত্য জেলায় রাঙামাটি, বান্দরবান ও খাগড়াছড়ি রয়েছে ১৭ লাখ ১৬ হাজার একর জমি। নির্বিচার বৃক্ষনিধনে সুন্দরবনের আয়তন ১০ হাজার বর্গকিলোমিটার থেকে এখন ৪ হাজার বর্গকিলোমিটারে এসে ঠেকেছে। পরিবেশের হুমকি জেনেও ১ লাখ ৬০ হাজার একর বনভূমি বিভিন্ন ব্যক্তি ও সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের হস্তান্তর করা হয়েছে। দেশের বনাঞ্চল রক্ষায় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় ২ লাখ ৫৭ হাজার একর বনভূমির অবৈধ দখলকারী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের তালিকা প্রস্তুত করেছে। তালিকা অনুযায়ী সারা দেশে বনভূমি দখলের সঙ্গে জড়িত রয়েছে ১ লাখ ৬০ হাজার ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান। তবে দখলকারীরা এতই প্রভাবশালী এবং তাদের বিরুদ্ধে যারা ব্যবস্থা নেবেন তারা উৎকোচের প্রতি এতই দুর্বল যে, তাতে কোনো কাজ হচ্ছে না। বনাঞ্চল রক্ষায় বনসংশ্লিষ্ট সব বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সততা আগে নিশ্চিত করতে হবে। নতুবা সবকিছু হবে প্রহসনের নামান্তর।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর